অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপনে পুরুষ নয়, নারীর চোখে নারীর যৌনতা!
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। আধুনিক ফ্যাশনে যেভাবে প্রসাধন ও ফ্যাশন পণ্যের বিজ্ঞাপন করা হয় তার অনেকটাই যৌন উদ্দীপক। প্রচলিত এই ধারায় নারীর ক্ষমতায়ন আর নারী শরীরের আপত্তিকর উপস্থাপনের মধ্যে ব্যবধান গড়া খুব একটা সহজ না। কিন্তু ধীরে হলেও পরিবর্তন আসছে। অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপনে নারী শরীরকে পুরুষের চোখে যৌন উদ্দীপক হিসেবে দেখানোর দিন শেষ হতে চলেছে।
নারীর অন্তর্বাস ও পোশাকের বিজ্ঞাপনে নারীকে যৌনবস্তু না বানিয়ে কীভাবে উপস্থাপন করা যায় সেটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যারিবিয়ান-মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী রিহানা একসময় গায়ের রঙ নির্বিশেষে বৈচিত্র্যময় মেকআপ ব্র্যান্ড বাজারে এনে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। একইভাবে এবার তার ফ্যাশন বিজনেসও দারুণ সাড়া ফেলেছে। এর অন্যতম কারণ তার ফ্যাশন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে নারীর নিজের ইচ্ছা, চাহিদা ও ভালোলাগা তুলে ধরা হয়েছে৷ অন্যান্য ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে সাধারণত পুরুষের চোখে নারীর যৌন আবেদনকে গুরুত্ব দেয়া হয়।
হ্যাশট্যাগ মিটু যুগ আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লক্ষ্য করা গেছে, পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনে নারীর যৌন উদ্দীপক উপস্থিতির বিষয়টি নারী বা তরুণীরাই বেশি বিবেচনায় রাখছে।
রিহানার শ্যাভেজ এক্স ফেন্টি নামের এই সংগ্রহে রিহানা নিজেই মডেল হয়েছেন। এখানে ‘ফিমেল গেজ’ বা নারীর দৃষ্টি প্রাধান্য পেয়েছে। নারীর অন্তর্বাস বাজারজাত করার জন্য তারা যে বিষয়টিকে তুলে ধরেছে তার সারকথা হল, নারী নিজেই তার শরীর, সম্পর্ক ও পছন্দের নিয়ন্ত্রক।
ভিক্টোরিয়া সিক্রেট বা এ ধরণের ঐতিহ্যবাহী অন্তর্বাস ব্র্যান্ড এতদিন তাদের বিজ্ঞাপনে এমনভাবে নারীদের ব্যবহার করেছে যে তাদের অন্তর্বাস পরে একজন নারী সহজেই পুরুষদের আকর্ষণ করতে পারবেন। এর জন্য মডেল হিসেবে সবসময় বেছে নেয়া হয় অত্যন্ত হালকা পাতলা এবং যৌনাবেদনময়ী তরুণীদের, যেন এমন চেহারা ও শারীরিক অবয়ব না হলে নারীর জীবনই শেষ। কিন্তু রিহানা নিজেই তার অন্তর্বাস ব্র্যান্ডের মডেল হয়েছেন সুপারমডেলদের মতো শুকনো পাতলা না হয়েও।
রিহানার শ্যাভেজ এক্স লাঙজারি ও ভিক্টোরিয়া সিক্রেট দুই কোম্পানিই পণ্য বিক্রির জন্য যৌনতায় আশ্রয় খুঁজলেও পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে যৌনতার প্রকাশে। একটিতে নারীর নিজস্বতাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে আর অন্যটিতে পুরুষের মনোরঞ্জনকে।