পিরিয়ড চলছে কি না দেখতে ভারতে ৬৮ ছাত্রীর অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড নিয়ে পাশের দেশ ভারতের অস্বস্তি আর মান্ধাত্তা আমলের মানসিকতা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ নিয়ে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে প্রদেশ গুজরাটের একটি শহর এবার এসেছে খবরের শিরোনামে। অভিযোগ উঠেছে, সেখানে একটি কলেজের হোস্টেলে মেয়েদের বাধ্য করা হয়েছে পোশাক খুলে অন্তর্বাস বা প্যান্টি দেখাতে, যাতে তার মাসিক চলছে কি না সেই বিষয়টি বোঝা যায়।
ঘটনা ঘটেছে গেল সপ্তাহে। ভুজ নামের শহরে শ্রী শাহাজানান্দ গার্লস ইন্সটিটিউটে। ৬৮ জন মেয়েকে ক্লাস থেকে বের করে এনে ঢোকানো হয়েছে টয়লেটে। এরপর একে একে প্রত্যেকের অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা করে দেখেছেন নারী শিক্ষক।
জানা গেছে, হোস্টেলে কর্মকর্তারা প্রথমে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেন যে, কিছু ছাত্রী পিরিয়ডকালীর নিয়মকানুন মানছেন না।
কী সেই নিয়ম?
নিয়ম হল- পিরিয়ডের সময় কোন মেয়ে মন্দিরে ঢুকতে পারবে না, এমনকি রান্নাঘরেও না। কোন পিরিয়ডে থাকা মেয়ে অন্য কাউকে ছুঁতেও পারবে না। খাওয়ার সময় তাদের অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বসতে হবে এবং খাওয়ার পর নিজের বাসন নিজে ধুয়ে রাখতে হবে। আর ক্লাসে সেই মেয়েরা বসবে একেবারে শেষ বেঞ্চে। হোস্টেলে একটি রেজিস্টার খাতাও খোলা হয়েছে, সেখানে পিরিয়ডকালীন মেয়েদের বলা হয় নাম লিখে যেতে।
হোস্টেলের কর্তাদের অভিযোগ, গত দুই মাসে একজন মেয়েও নাম লেখেনি সেই খাতায়। ফলে সোজা অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষের কাছে যে মেয়েরা পিরিয়ড হওয়া সত্ত্বেও মন্দির ও রান্নাঘরে যাচ্ছে আর অন্যদের সাথে মেলামেশা করছেন। এই অভিযোগের পরেই ৬৮ জন মেয়ের অন্তর্বাস পরীক্ষা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের মেয়েরা এই ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে গণমাধ্যমের কাছে। তারা জানিয়েছে, পুরো বিষয়টিই একটি ভয়ংকর ও আতংকজনক অভিজ্ঞতা ছিল তাদের জন্য। তারা এও অভিযোগ করেছে যে, অন্তর্বাস পরীক্ষার আগে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ও অধ্যক্ষ তাদের চরম হযরানি করেন।
এ ঘটনার পর কলেজ ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছে একদল শিক্ষার্থী। তারা এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছে। কলেজের এক ট্রাস্টি বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন আপাতত। এরপর গুজরাট স্টেট উইমেনস কমিশন এই লজ্জাজনক ঘটনার যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ বরাবর অভিযোগও দাখিল করা হয়েছে।