ঋতুস্রাব
সৈকত আমীন।।
১৩ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়া মেয়ে
নাভির নিচে বয়ে বেড়াচ্ছে বারো মাস
সমগ্র প্রজাতির জন্মের যন্ত্রণা,
প্রতি মাসে রক্তের লজ্জায়
যারা তবু তাঁর মুখ চেপে ধরে,
তারাও এই উর্বর রক্তে গড়া
শস্যের মতো শিশু ছিল কোনোদিন,
তাঁদের কেউ কি কখনো
কেবল একটি মানুষরেও গর্ভে ধরতে পারে?
১৩ বছর বয়সী স্কুলে যেতে না পারা মেয়ে,
নাভির নিচে বয়ে বেড়াচ্ছে বারো মাস
সমগ্র স্থান-কাল ভবিষ্যৎ সভ্যতার যন্ত্রণা
হাতে স্যানিটারি প্যাড যার পৌঁছাতে
কেউ পারেনি কোনোদিন,
তবু উপহাস ছুড়ে দিয়ে প্রতি বাজেটে
দাম বাড়িয়েছে বারে বারে,
জন্মের যন্ত্রণার ঋণ তাঁরা এভাবেই বুঝি শোধ করে।
হায় আমার মুখ চেপে ধরা রক্তের লজ্জা
হায় আমার জন্ম প্রক্রিয়ার অনৈচ্ছিক অভিশাপ
যতদিন ভয়ের চাদরে তুমি মুখ বুজে থাকো
যতদিন সম্মানের চাদরে তুমি নিজেরে লুকিয়ে রাখো
ততদিন সুযোগ সন্ধানী সকলে তোমার অধিকার নিয়ে বাজারে করে যাবে দরদামের খেলা,
অধিকারের প্রশ্নে বারবার মুখে ছুড়ে দেবে অবহেলা,
ততদিন সমযন্ত্রণায় সমব্যথী সঙ্গী পাবেনা তুমি,
ততদিন নিষিদ্ধ কথার আড়ালে থেকে যাবে
নাভির নিচে যন্ত্রণায় উর্বর প্রজাতির পূর্ণভূমি।
অথচ সমগ্র প্রজাতির অস্তিত্বের পতাকার রঙ
ঋতুস্রাবের রক্ত দিয়ে তৈরি।