September 20, 2024
সাহিত্যকবিতাফিচার ২

প্রেমের গল্প

মেহেরুন নূর রহমান।।

 

অস্ফুট স্বরে মেয়েটি বলল – না

বুঝতে পারে না যুবক,  বিভ্রান্ত হয়

চোখ তুলে তাকায় মেয়েটির দিকে

মেয়েটি এবার একটু জোরে বলে- না

বিস্ময় খেলা করে যুবকটির চোখে মুখে

বাইরে জানলার শার্সিতে তখন আছড়ে পড়ছে বৃষ্টি

ঘরের ভেতর আরাম আরাম উষ্ণতা আর আলো-আঁধারের মায়া

বিছানায় পাতা লাল গোলাপ সাদা চাদর খানিক কুঞ্চিত

বৃষ্টির ঝংকার আর আলো-ছায়ায় চারিদিক অপার্থিব

বিরক্ত যুবক,  না মানে?

বাড়ি যাব প্লিজ, করুণ শোনায় মেয়েটিকে

মেয়েটির সম্মতিতেই দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিলো

চলছিল সব ঠিকঠাক যেমনটি তারা ভেবেছিলো

কমলা শাড়ী আর বেলি ফুলের সুগন্ধ মাখানো মেয়ে

নীল টি-শার্ট আর ব্লু জিন্স এর সুঠাম যুবক

ছেলেটির স্পর্শে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিলো মেয়ে

খসে পড়েছিলো খোপার ফুল শাড়ির আঁচল

তবে হঠাৎ কেন এই বিভ্রান্তি! রাগ হয় যুবকের

না, মানে? তুমি জানতে না? তুমি কি বুঝতে পারোনি?

মেয়েটির মুখ আরো করুণ, প্রতিবাদহীন

আবার বলে- বাড়ি যাবো

যুবকটির মুখ এবার মায়াময় , কোমল গলায় বলে

ভয় পেয়েছো ? আমাকে বিশ্বাস করো না?

হাত বাড়িয়ে মেয়ে স্পর্শ করে ছেলেটির গাল

মাথা নেড়ে জানায় সম্মতি

তাহলে? আবার রাগ এসে ভর করে ছেলেটির মাথায়

তোমার ইচ্ছেই বুঝি সব? আমার ইচ্ছে মূল্যহীন?

খানিক ভয় পায় বোধ করি মেয়েটি

আস্তে বলে- জোর করবে? কান্না পায় ওর খুব

অস্ফূটে আবার বলে, আমি তৈরি নই, ক্ষমা করো

চুপ করে থাকে যুবক

আকাঙ্ক্ষার আগুনে জ্বলছে সারা শরীর

চাইলেই সে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে

দুমড়েমুচড়ে ভেঙেচুরে দিতে পারে মেয়েটির শরীর

চোখ বন্ধ করে যুবক, জোরে শ্বাস নেয়

খানিক বাদে খাট থেকে নেমে খুলে দেয় ঘরের দরজা

বৃষ্টির ঝাপটায় ভিজে যায় তার চোখ মুখ চুল

এলোচুল খোঁপা বেঁধে, শাড়ির আঁচল গুছিয়ে নেমে আসে মেয়েটি

ধীর পায়ে বেরিয়ে পড়ে বৃষ্টিতে

পেছন থেকে বলে ওঠে যুবক হঠাৎ

তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে পারি?

তক্ষুনি ফিরে তাকায় মেয়েটি, মুখ উদ্ভাসিত হাসিতে

দ্রুত হেঁটে মেয়েটির হাত ধরে যুবক

বৃষ্টির ধারায় চারিদিক তখন স্বচ্ছ স্ফটিক

তার মাঝে ঝাপসা দুটি শরীর

হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটছে

ঝমঝমে বৃষ্টিতে তাদের হাসি শোনায় অলৌকিক