ধর্ষণ বন্ধে পুরুষের করণীয় ১৫টি কাজ
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। যৌন সহিংসতা এখন সমাজের সবচেয়ে ভয়াবহ একটি সমস্যায় রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলো আমাদের হতাশ, বিব্রত ও বেদনার্ত করছে। কীভাবে বন্ধ হবে ধর্ষণের মত চরম যৌন সহিংসতা? নারীর প্রতি ঘটে যাওয়া এই সহিংসতা বন্ধে সমাজের পুরুষেরা কি কোনো ভুমিকা রাখতে পারে?
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে পুরুষ সবচেয়ে বড় ভূমিকাটি পালন করতে পারে। এবং করা খুব জরুরি। আসুন জেনে নিই, নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংতা রুখতে একজন পুরুষ হিসেবে আপনি কোন ১৫টি উপায়ে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
১. নারীর নীরবতাকে সম্মতি বলে ধরে নেবেন না। এবং নারীর ‘না’ মানে না। ‘না’কে ‘হ্যাঁ’ হিসেবে ধরে নেবেন না।
২. আপনার পৌরুষকে সঠিকভাবে জানুন। পৌরুষ মানে শক্তিপ্রয়োগকারী বা নারীর শাসক নয়। আপনি কেমন পুরুষ হতে চান, সেটি ঠিক করুন ও মাথায় রাখুন।
৩. ধর্ষণের শিকার নারীকে তার উপরে ঘটা সহিংসতার জন্য দায়ী করবেন না। ভিক্টিম ব্লেইমিং একটি অপরাধ।
৪. আপনার যৌন আকাঙ্ক্ষা, রুচি, চাহিদার দায় আপনার নিজের। আপনার সঙ্গীর ওপর অথবা অন্য কোনো নারীর ওপর এই দায় চাপিয়ে দেবেন না।
৫. যৌনক্রিয়ায় কাউকে রাজি করানোর জন্য তাকে মাদক বা অ্যালকোহল বা কোনো ধরণের ঘুমের ওষুধ খাওয়াবেন না।
৬. অসুস্থ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসুন। অথবা যৌনতা নিয়ে রাখঢাক না করে সঙ্গীর সাথে খোলাখুলি কথা বলে নিজেদের ভেতরের দূরত্ব কমিয়ে আনুন।
৭. নারীর দৃষ্টিতে বাস্তবতাকে দেখার চেষ্টা করুন। ধর্ষণ নারীর জীবনকে কীভাবে বিপর্যস্ত করে, সেটি উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। তাদের কথা শুনুন।
৮. নারীকে অবজেক্টিফাই বা স্টেরিওটাইপিং করে, এমন কোন ধরণের সেক্সসিস্ট আচরণ করবেন না বা এ ধরণের আচরণে অংশ নেবেন না। যেমন রাস্তায়, অফিসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা যেকোনো স্থানে পরিচিত অপরিচিত কোনো নারীর দিকে আপত্তিকরভাবে তাকাবেন না। কোনো পুরুষকে এ ধরণের দৃষ্টিতে তাকাতে দেখলে, তাকে নিষেধ করুন।
৯. আপনার বন্ধু, সহকর্মী, ভাই, প্রতিবেশিকে যৌন সহিংসতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলুন। এ নিয়ে যেসব প্রচলিত কুসংস্কার আছে সেগুলো ভেঙ্গে দিতে সাহায্য করুন এবং বাস্তবতাটা তাদের সামনে তুলে ধরুন।
১০. আশেপাশের পরিচিত পুরুষদের সাথে কথা বলুন। নিজেকে একজন ধর্ষক হিসেবে ভাবতে বা দেখতে তাদের কেমন লাগে, জিজ্ঞেস করুন। তাদের ভাববার সুযোগ তৈরি করে দিন।
১১. কেউ ধর্ষণ নিয়ে কৌতুক করলে, তাকে তখনই থামিয়ে দিন।
১২. শব্দ ব্যবহারে সচেতন হোন। নারীর প্রতি অবমাননাকর শব্দ প্রয়োগ বন্ধ করুন।
১৩. বিজ্ঞাপনে, গণমাধ্যমে, এমনকি পর্ণগ্রাফিতেও যদি নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা দেখানো হয়, তবে সেটিকে চ্যালেঞ্জ করুন। প্রতিবাদ জানান।
১৪. যৌন সহিংসতা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের সমর্থণ দিন; সময়, অর্থ বা অন্য যেকোন উপায়ে সহযোগিতা করুন।
১৫. মনে রাখবেন, যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ ইত্যাদি কোনোদিন বন্ধ হবে না যতদিন পর্যন্ত না পুরুষ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, এর সমাধানে কাজ করবে।