আর্জেন্টিনায় গর্ভপাতকে বৈধতা দিয়ে ঐতিহাসিক আইন পাস
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। গর্ভপাতকে বৈধতা দিয়ে আইন প্রবর্তন করেছে লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। বুধবার দেশটির সিনেটে এক ভোটাভুটিতে ৩৮-২৯ অনুপাতে জয়ের পর ঐতিহাসিক এ আইন অনুমোদন পায়। আইনটি অনুমোদন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজধানী বুয়েন্স এইরেসের রাস্তায় সমবেত হন নারীরা, বিশেষ করে পার্লামেন্টের সামনে উল্লাসে ফেটে পড়েন তারা। বিভিন্ন জায়গায় লাউডস্পিকারে বিজয়ের গান বাজানো হয় এবং এসময় অনেকেই আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বুধবার আইনটি অনুমোদন হওয়ার পর উল্লাস প্রকাশ করে ২৫ বছর বয়েসি মেল্যানি মারকাটি বলেন, “আমি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি। দীর্ঘদিন ধরে কোনো কিছুর জন্য লড়াই করার পর যখন বিজয় আসে, তখন কী অনুভূতি হয় তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমি অনেক কেঁদেছি। আমি যে এতটা কাঁদব এটা বুঝতে পারিনি”।
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ এক টুইট বার্তায় বলেন, “নিরাপদ, বৈধ এবং স্বাধীন গর্ভপাত এখন আইন। আজ থেকে আমরা আরও ভালো সমাজে উন্নীত হলাম”। এর আগে প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দেজ জানিয়েছিলেন, তার দেশে ১৯৮৩ সালে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফেরার পর এ পর্যন্ত অনিরাপদ গর্ভপাতের কারণে ৩ হাজারের বেশি নারীর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে আর্জেন্টিনায় শুধু ধর্ষণের শিকার নারী—যাদের জীবন ঝুঁকিতে তারাই কেবল গর্ভপাত করতে পারতেন। দেশটির ক্যাথলিক চার্চ বরাবরই গর্ভপাতের বিরুদ্ধে মত দিয়ে আসছে। এবারও আইনটি অনুমোদন হওয়ার পর ক্যাথলিক চার্চ এর বিরোধিতা করেছে। উল্লেখ্য, এতদিন আর্জেন্টিনায় গর্ভপাত করলেই জেলে যেতে হতো নারীদের।
দক্ষিণ আমেরিকায় আর্জেন্টিনা মাত্র তৃতীয় দেশ হিসেবে গর্ভপাতকে বৈধতা দিলো। তবে এ অঞ্চলের রাজনীতিতে আর্জেন্টিনার বিপুল প্রভাব থাকায় দেশটির এ সিদ্ধান্তের ফলে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশ গর্ভপাতকে বৈধতা দিতে চাপ অনুভব করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর্জেন্টিনায় নারীবাদী আন্দোলনের কর্মী গিসেল্লে কারিনো জানান, তিনি মনে করেন—পোপ ফ্রান্সিসের দেশ আর্জেন্টিনায় গর্ভপাত বৈধ ঘোষণা করে আইন হওয়ায় গোটা অঞ্চলেই এর বড় প্রভাব পড়বে।