November 2, 2024
মন ও জীবন যাপনফিচার ৩

লিঙ্গ বৈষম্য যেভাবে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। লিঙ্গ, বর্ণ বা শ্রেণিগত কারণে বঞ্চিত করা হচ্ছে, কিংবা ন্যায্য আচরণ করা হচ্ছে না- এমন অনুভূতি কাউকেই ভালো রাখে না। বৈষম্যের শিকার হতে হতে একসময় মানুষ চরম বিরক্ত ও হতাশ হয়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে ক্রমাগত এই অন্যায্য ব্যবহার পাওয়ার ঘটনা ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

লিঙ্গ বৈষম্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য:

অনেকেই বলে, শৈশবের কোনো ভয় বা একটানা চাপ তাদের মানসিক অবস্থার উপর কেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে মানসিক এই অবস্থার জন্য আরো কিছু কারণ দায়ী, যেগুলো নিয়ে কেউ কথাই বলে না। বিশেষ করে সেক্সিজম ও লিঙ্গ বৈষম্য কীভাবে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, সেই কথাগুলো আলোচনার বাইরেই থেকে যায়। অবাক ব্যাপার হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্যকে নির্দোষ বা তুচ্ছ ব্যাপার হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু গবেষণা বলছে, লিঙ্গ বৈষম্য ও খারাপ মানসিক স্বাস্থ্য একটি অপরটির সাথে সম্পর্কিত। গবেষণায় দেখা গেছে, যে নারীরা লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হন তাদের ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ভোগার হার অন্যদের চেয়ে তিন গুণ বেশি। এমনকি একবার লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হবার পর যদি তা বন্ধও হয়, তবু ভুক্তভোগী নারীরা বহু বছর ধরে নানারকম মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকেন।

আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত যে মেয়েরা কথা দিয়ে হয়রানির শিকার হন, যাদের ওপর যৌন হয়রানি ও যৌন নির্যাতন ঘটে, তারা বিষন্নতায় ভোগেন বেশি। কটু মন্তব্য, অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ কেউ কেউ একেবারেই মেনে নিতে পারেন না। সেক্সিজম কমে আসলে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যহানির হারও কমে আসতে দেখবো।

দুর্ভাগ্যবশত, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর লিঙ্গ বৈষম্যের নেতিবাচক দিকটি একসময় মাদকাসক্তির মত সমস্যারও সৃষ্টি করতে পারে। যখন লোকে নিজেদের মানসিক সমস্যাগুলো ঠিক করবার চেষ্টা চালায়, তখন নিজেকে ভালো রাখার জন্য অনেকেই ড্রাগ বা অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে যায়। গবেষণা বলছে, বর্ণ বৈষম্য বা লিঙ্গ বৈষম্য নারীদের অ্যালকোহল আসক্তি এবং পুরুষের ড্রাগ আসক্তির দিকে প্ররোচিত করে। বিষন্নতার সঠিক চিকিৎসা না করে মাদকে আসক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের মানসিক সমস্যা আরো জটিল হয়ে যায়।

নিজের মানসিক সমস্যাগুলো একা একা ঠিক করা সম্ভব নয় সবক্ষেত্রে। পরিস্থিতি জটিল হবার আগেই তাই পেশাদার কাউন্সিলর ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। আর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে লিঙ্গ বৈষম্যের মতো ক্ষতিকর আচরণ নির্মূল করা।

 

সূত্র: ইন্টারনেট