হাইপেশিয়া ফিরে এসেছিল
লাকী আক্তার।।
আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারে
তার বক্তৃতার দিন
মোহর গুনে গুনে
শ্রোতার আসনগুলোয় হুমড়ি খেতো
তাবৎ জ্ঞানী গুণী!
আর তার আত্মা যেন নির্ঘাত প্লেটো!
তার জ্ঞানের ছটায়,
মন্ত্রমুগ্ধ ছাত্রদের মধ্য থেকে হঠাৎ কেউ বলে উঠতো
ঐ-তো দেখো, মিনার্ভা!
আবার কেউ কেউ বলে উঠতো,
রূপে সে যেন সাক্ষাৎ আফ্রোদিতি!
তার ধারালো যুক্তিতে পরাস্ত হয়ে
‘প্যাগান সাইন্টিস্ট’ বলে চেচিয়ে উঠত পুরোহিত!
যাদের চোখে সে ছিল
‘সাপের চেয়েও ধূর্ত’!
তার প্রতি নগরপাল অরিস্টিসের ভরসা,
যেন পুরোহিতের দগ্ধ ঘায়ে নুনের ছিটা!
এর শোধ নিতে উদগ্রীব তারা,
সময়ের অপেক্ষায় প্রহর গোনে।
তারপর একদিন এক বসন্তে,
সে সুযোগ ধরা দেয় তাদের হাতে,
তাকে হত্যা করা ছাড়া যেন বিকল্প নেই।
পিটার নামধারী এক ল্যাক্টর-
তাকে ধরে নিয়ে যায় কেসারিয়ামে,
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আক্রোশে
তারা চেঁছে ফেলে তার চামড়া!
তাদের আক্রোশ দেখে মনে হয়,
যেন তার চামড়ার রন্ধ্রে রন্ধ্রে,
যুক্তির বাণ নির্গত হয়।!
তাতেও সাধ মেটেনা তাদের,
তাই সেদিন মহোল্লাসে তাকে হত্যা করে।
আর সেই নগ্ন মৃতদেহকে
খণ্ড বিখণ্ড করে,
যেন যুক্তি আর প্রগতিকেই টুকরো টুকরো করে তারা!
কিন্তু তাতেও স্বস্তি মেলেনা তাদের,
সে টুকরো টুকরো মৃতদেহও,
আতংকিত করে তাদের।
তারা ভীত হয়ে দেখে,
সে মৃতদেহের ভগ্নাংশ থেকেও,
যুক্তি আর জ্ঞানের আলো,
যেন জ্বল জ্বল করে উঠছে!
ভয় পেয়ে উদ্ভ্রান্ত তারা,
সিনারনের মাটিতে তার দেহাংশকে,
পুড়িয়ে ভস্ম করে দেয়।
আর তারা হাসতে হাসতে ভাবে,
সে গতরের সাথে সাথে,
তারা পুড়ে ছাই করতে পেরেছে,
দর্শন আর যুক্তির লহর!
অবিনাশী সে নারীর নাম ছিল হাইপেশিয়া!
যার মৃত্যুতে পৃথিবী দেখেছিল
এক নিকষ অন্ধকার সহস্রাব্দ!
কিন্তু সেদিন সিনারনের ছাইভস্ম,
হতে ফিনিক্স পাখির মতো বহুকাল পর,
আবারো জন্মেছিল সে,
এই বাংলা তার নাম রেখেছিল খনা!