সুস্থ যোনি: মাথায় রাখুন জরুরি ১০টি টিপস
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। যোনি- আপনার শরীরের এই অঙ্গটিকে আপনি ভাবেন গোপন অঙ্গ। তাই এটা নিয়ে কথাই বলেন না। অথচ আপনার শরীরের এই দরকারি অঙ্গটিরও চাই যত্ন, আরাম। এটি নিয়ে ফিসফিস, কানাকানি অর্থহীন। বরং নিজের শরীরকে জানুন। যত্ন নিন প্রতিটি অঙ্গের, এমনকি যোনিরও যত্ন নিতে হবে। যোনি’র যত্নে বহু কিছু করবার দরকার হয় না। চাই সামান্য মনোযোগ এবং সঠিক উপায়ে যত্ন নেয়া। তাতেই সুস্থ থাকবে এই অঙ্গটি। চলুন জেনে নিই কীভাবে যত্ন নেবেন আপনার যোনির। দেয়া হলো ১০টি কার্যকর টিপস।
১. সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার খান। ওজন আয়ত্ত্বে রাখুন। যথেষ্ঠ ব্যায়াম করুন। এগুলো যে শুধু আপনার পুরো শরীরকে ফিট রাখবে তাই নয়, আপনার যৌনাঙ্গ ও প্রজননতন্ত্রগুলোর সুস্থতাও নিশ্চিত হবে। ক্রনিক স্বাস্থ্যসমস্যা আপনার যৌনাঙ্গের সুস্থতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। যেমন নিয়ন্ত্রণহীন ডায়েবেটিস যোনিতে ইস্ট ইনফেকশন এবং urinary tract infections (UTIs) এর জন্য দায়ী।
২. নিয়মিত চেকআপ করান। একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো নিয়মিত Pap test সহ অন্যান্য পরীক্ষা করান। অল্পবয়সী মেয়েরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে HPV vaccination নিতে পারেন সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে।
৩. যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার আপনাকে যৌনবাহিত রোগ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ থেকে রক্ষা করবে। নতুন সঙ্গীর ক্ষেত্রে অবশ্যই এটি মাথায় রাখা জরুরি।
৪. যোনি এমন একটি অঙ্গ যার নিজেকেই নিজের পরিস্কার রাখবার পদ্ধতি আছে। তাই শুধু পরিস্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন আপনার যোনি। কোনো কেমিক্যাল, সাবান, ক্ষারজাতীয় জিনিস কিংবা প্যাকেটজাত ওয়াইপ ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত ঘটবে। খুব হালকা ক্ষারযুক্ত সাবান যোনির বাইরের এলাকা পরিস্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু সরাসরি যোনিতে নয়। বাজারে যেসব জিনিস পাওয়া যায়, বলা হয় এতে যোনি পরিস্কার ও সুগন্ধযুক্ত থাকবে, ভুলেও সেসব ব্যবহার করবেন না। কারণ এগুলোর কোনোটারই বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই যা প্রমাণ করে যে এগুলো যোনিকে পরিস্কারে কাজ করে। উল্টো নানারকম চুলকানিসহ কঠিন চর্মরোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে।
৫. পিউবিক হেয়ার পুরোপুরি নির্মূল করতেই আমরা ভালবাসি। কিন্তু সত্য হলো এই পিউবিক হেয়ার আপনার যোনিকে নানারকম ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ঘাম ও অনাকাঙিক্ষত আঘাত থেকেও আপনার যোনিকে বাঁচায়। ফলে একদম পুরোপুরি নির্মূল না করে হালকা ছেটে নিতে পারেন, সেটিই স্বাস্থ্যকর।
৬. রকমারি বিজ্ঞাপন দেখে চমকিত হয়ে যেকোনো লুব্রিকেন্ট ব্যবহার না করে শুদ্ধ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার যোনির সুস্থতা ধরে রাখবে।
৭. যৌনমিলনের পর নিজেকে পরিচ্ছন্ন করা এবং প্রস্রাব করবার অভ্যাস আপনাকে মূত্রনালী ও যোনির ইনফেকশন থেকে রক্ষা করবে।
৮. একই অন্তর্বাস দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট সময় পর পর সেগুলো বাতিল করুন। অপরিস্কার ও ভেজা পেন্টি ব্যবহার করবেন না। পেন্টির কাপড়টি যেন নরম, আরামদায়ক ও ভালো মানের হয়, সেটি লক্ষ্য রাখবেন। আরামদায়ক পোশাকে ঘুমুতে যাবেন, টাইট অন্তর্বাস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
৯. মেনোপজের পরও যদি আপনার রক্তক্ষরণ হয় অনেকটা পিরিয়ডের মতো, দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান ও তার পরামর্শ নিন।
১০. বয়সের কারণে যোনিতে পরিবর্তন আসে, ফলে ব্যাথাদায়ক যৌনমিলনের মতো নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে (যোনির দেয়ালগুলো পাতলা হয়ে যাওয়া এবং ইলাস্টিসিটি কমে যাওয়ার কারণে)। এছাড়া যোনির pH ভারসাম্যে পরিবর্তন আসার কারণে এর অম্লীয় ভাব কমে যায় , ফলে UTI এর ঝুঁকিও বাড়ে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, প্রয়োজনে চিকিৎসক ভ্যাজাইনাল এস্ট্রোজেন ব্যবহার করতে দেবেন, এটি সাধারণত অধিকাংশ নারীর জন্য নিরাপদ।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট