চির প্রাসঙ্গিক হুমায়ুন আজাদ: আমাদের বাতিঘর
ফাহাদ হৃদয় ।। ভাষার মূল একক ধ্বনি, যা পাশাপাশি সাজিয়ে শব্দ-বাক্য-অনুচ্ছেদ গঠন করে মানুষ সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করে। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৭ হাজার ১০০-এর বেশি ভাষা টিকে আছে যার মাঝে মাত্র ২৩টি ভাষাভাষী মানুষই বেশি। জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলা বর্তমানে পঞ্চম প্রধান মাতৃভাষা, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১৫% মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন। ভাষার জন্য আন্দোলন করে জীবন দেওয়ার একমাত্র রেকর্ডটিও বাংলাদেশের, যার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।
গর্বের এই ইতিহাস থাকার পরেও স্বাধীন বাংলাদেশে ভাব প্রকাশ করাও যে কতটা কঠিন তা প্রথম বোঝা গিয়েছিল যে কয়েকজন মুক্তচিন্তকের মাধ্যমে, তাদের একজন হুমায়ুন আজাদ।
হুমায়ুন আজাদের সেরা লেখা কোনটা সে ব্যাপারে সর্বসম্মত কোনো সিদ্ধান্তে আসা কোনোভাবেই বোধহয় সম্ভব না, তবে তার লেখার প্রভাব ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব।
হুমায়ুন আজাদের সবচেয়ে প্রভাবশালী তিন চারটি লেখার একটি, উপন্যাস “পাক সার জমিন সাদ বাদ”। উপন্যাসটি ২০০৪ সালের বইমেলায় হার্ডকভার ফরম্যাটে প্রকাশের আগে দৈনিক ইত্তেফাকের ২০০৩ ঈদ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। জনমনে আলোড়ন তুলেছিল এটি, কেননা এভাবেও যে গল্প বলা যায় তা অনেকেরই জানা ছিল না।
পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসটি লেখা হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত রাজাকারদের রাজনৈতিক দলের স্বাধীন বাংলাদেশে ভূমিকার ওপর ভিত্তি করে। উপন্যাসে ডিস্টোপিয়ান এক বাংলাদেশকে দেখানো হয়েছে যেখানে মৌলবাদী একটি দল বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসে ধর্মকে ব্যবহার করছে শাসনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসাবে এবং যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ধর্ম ব্যবহার করে কীভাবে একটা জনপদের মানুষকে শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট করা যায় তার উদাহরণ তীব্র ব্যঙ্গাত্মক উপায়ে তুলে ধরেছিলেন হুমায়ুন আজাদ। শাসনতন্ত্রকে স্বৈরাচারী উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ার রাজনৈতিক পদক্ষেপকেও এই উপন্যাসে কড়া ব্যঙ্গ করা হয়েছে যা হয়তো আজকের যুগেও প্রাসঙ্গিক। দৃশ্যকল্প পরিবর্তন করে বাস্তবে মৌলবাদীদের ঘটানো অনেক ঘটনাও বইতে তুলে ধরা হয়েছে, যার মাঝে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। এত অকপট কড়া ও রূঢ় শব্দ ব্যবহার করে আজাদ তাঁর উপন্যাসটি বর্ণনা করেছেন যে অনেক পাঠকই হয়তো টানা বইটি পড়তে পারবেন না, কথাগুলো ঠিকঠাক সইতে কষ্ট হবে।
তবে বইয়ের টার্ন পয়েন্ট মৌলবাদি শাসনের বাস্তবতা দেখানো নয়, বরং গল্পের প্রধান চরিত্রের রূপান্তর। পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত পাক সার জমিন সাদ বাদ গেয়ে পাকিস্তান প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মৌলবাদি দল জামাঈ জিহাদে ইসলাম-এ যোগ দেওয়া প্রধান চরিত্র উপন্যাসের শেষ দিকে গিয়ে একটি হিন্দু মেয়ের প্রেমে পড়ে ও পরিবর্তন হতে শুরু করে। নিজের কৃত অজস্র ধ্বংসাত্মক কর্মের ফলাফল সে তখন অনুভব করতে থাকে মন থেকে এবং প্রিয় বাংলাদেশকে এভাবে আগুনে পোড়ানোর অনুশোচনা তাকে স্বপ্নেও কুরে কুরে খেতে থাকে।
উপন্যাসটি শেষ হয় কনকলতা নামক হিন্দু মেয়েকে সাথে নিয়ে গল্পের প্রধান চরিত্রের এই মৌলবাদী কর্মকাণ্ড ত্যাগ করে চলে যাওয়ার মাধ্যমে। আজাদ মূলত দেখাতে চেয়েছেন, এই মানুষগুলোকেও পরিবর্তন করা সম্ভব, মৌলবাদিরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদেরও শাসনের সমাপ্তি টানা সম্ভব। প্রবল ভালোবাসা ও দেশপ্রেমের কাছে কখনোই এই অপশক্তি চিরদিন টিকবে না। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র যখন তীব্র ভালোবাসার আবেদনে এই রক্তাক্ত রাস্তা ত্যাগ করতে চায় তখনি স্পষ্ট হয় লেখকের কলমের ক্ষমতা। বাস্তবে কাউকে পরিবর্তন করতে না পারলেও গল্পে তিনি দেখিয়েছেন মানুষ চাইলেই ভালোবাসার রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিতে পারে নিজের অতীতকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে।
উপন্যাসটি প্রকাশের সময় স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক শক্তি দেশের সরকারচালনায় থাকার পরেও দুর্দমনীয় সাহসী এই লেখা প্রমাণ করে – ভাষার ও কলমের শক্তি কতটা তীব্র হতে পারে। ক্ষমতাসীন এমপি ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মৌলবাদী দলটির আমির সংসদে বসে এই লেখার বিরোধিতা করেন এবং লেখাটি নিষিদ্ধ হওয়া উচিত মর্মে বিবৃতি দেন। বইটির জের ধরে ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় ফেরার পথে উগ্র ঘাতকদের আক্রমণের শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। প্রথমে বাংলাদেশের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং পরে থাইল্যান্ডে নিবিড় চিকিৎসার মাধ্যমে হুমায়ুন আজাদ কিছুটা সুস্থ হন।
“লেখকের একটাই গল্প, যা তারা বার বার বলে” – মন্তব্যটি লাতিন আমেরিকার নোবেলজয়ী ঔপন্যাসিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের। ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ পড়তে গেলে মার্কেজের এই মন্তব্যটির প্রাসঙ্গিকতা ধরতে পারা যায়। দেশে-বিদেশে প্রখ্যাত বহু লেখকের মতো হুমায়ুন আজাদও মার্কেজের এই মন্তব্য খণ্ডাতে পারেননি। যে অন্ধত্বের বিরুদ্ধে জীবনের বেশিরভাগ সময় কথা বলে এসেছেন অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, তারই এক অন্য রূপের প্রেজেন্টেশন বলা যায় পাক সার জমিন সাদ বাদ’কে। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনঃআগমন বাঙালি যেন মেনে নিয়েছিল ইতিহাস ভুলে গিয়ে। উগ্র মৌলবাদীদের উত্থান ও বিস্তারে এবং জাতীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়েও বাঙালি ছিল চুপ।
হুমায়ুন আজাদ কি বাঙালির সেই অনুভূতিতে আঘাত করতে চেয়েছেন রূঢ় ও কর্কশ ভাষায় এই রচনার মধ্যদিয়ে? তাদের সেদিনের ভোঁতা অনুভূতিকে শানিত করাই কি ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ এর উদ্দেশ্য?
এই উপন্যাসের আগেও বিভিন্ন সময় সমাজের গোঁড়ায় শক্ত হয়ে বসে থাকা অনেক নিয়মের গায়ে সরাসরি আঘাত করার মতো লেখা লিখেছেন তিনি, যার মধ্যে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ হওয়া বা হতে নেওয়া আরো লেখা আছে। মানুষকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে তার শাণিত প্রবন্ধগুলো যার ভেতরে উল্লেখযোগ্য দুইটি বই হলো, ‘আমার অবিশ্বাস’ আর ‘নারী’। “নারী” বইটি নিষিদ্ধ হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। প্রায় পাঁচ বছরের মতো মামলা চলার পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ২০০০ সালে বইটি আবার মুক্তি পায়।
“নারী” নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কে হুমায়ুন আজাদকে একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ‘বইটি নিষিদ্ধ করার কারণ কি রাজনীতি না ফতোয়াবাজদের কারসাজি?’ তিনি উত্তর দিয়েছেন, ‘এটা হলো আমাদের সরকারের প্রতিক্রিয়াশীলতার প্রকাশ। তবে বইটি যখন নিষিদ্ধ করা হয় তখন শোনা গেল- এর পিছনে যে সরকার সম্পূর্ণ জড়িত তা কিন্তু নয়। এখানে হয়ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে কেউ বুঝিয়েছেন, নিশ্চয় ডানপন্থীরা এ কাজটি করেছে। তখন যিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি হয়ত মাধ্যমিক পাশও নন। তার পক্ষে তো আমার বই পড়া সম্ভব নয়। আমি যখন মামলাটি করি তখন হাইকোর্টের গেটে একজন আমার সঙ্গে দেখা করলেন। তিনি আমাকে বললেন- জানেন আমিও আবেদন করেছিলাম আপনার বইটি নিষিদ্ধ করার জন্য। আমি তার দিকে তাকিয়েছিলাম। কিছুই বলিনি।’
সরাসরি ক্ষমতাসীন মন্ত্রী বা এমন কাউকে এভাবে সমালোচনা করার মতো কলিজা আমাদের এই শতাব্দীতে কয়জন সাহিত্যিকেরই থাকে?
লেখাটি শুরু করেছিলাম মনের ভাব প্রকাশ করা কত কঠিন সেই আলাপ নিয়ে। মূলত মানুষ কথা বলার স্বাধীনতা যত দিন পুরোপুরি না পাচ্ছে ততদিন ভাব প্রকাশ কঠিন হয়েই থাকবে। কারো বক্তব্য যদি সমাজের বা প্রশাসনের বা রাষ্ট্রের গোঁড়া নড়বড়ে করে দেয় আর সাথে সাথে সমাজ বা রাষ্ট্র নিজের গোঁড়া পরিবর্তন না করে সেই বক্তব্য নিষিদ্ধ করতে চায়, তাহলে ভাব প্রকাশের এই বাধা কখনোই দূর হবে না। এই ব্যাপারে হুমায়ুন আজাদের নিজের মুখের কথাই তুলে দিচ্ছি – “আমাদের দেশেতো গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের মধ্যে বাক স্বাধীনতা থাকতে হবে, মানুষের অধিকার থাকতে হবে, মানবাধিকার থাকতে হবে, মানুষের সমস্ত অধিকার রাষ্ট্রকে মেনে নিতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে সেই সব নেই। যে জন্য বলছিলাম – আমাদের দেশে সত্যিকার গণতন্ত্র নেই, এটা হচ্ছে তথাকথিত গণতন্ত্র। যেমন ধরুন – আমাদের দেশে একজন পুলিশ সাধারণ একজন মানুষকে ধরে নিয়ে যায়, তার কিছু করার থাকে না। নিউইয়র্ক সিটির একজন মেয়র রয়েছেন। তিনি কিছুতেই একজন সাধারণ মানুষকে নির্দেশ দিতে পারেন না। একজন মেয়রকে দেখে যদি কোনো মানুষ পাত্তা না দেয়, তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু আমাদের দেশে একজন এমপি, একজন মন্ত্রী, একজন আমলা – তারা তো প্রভুর মত কাজ করেন। সাধারণ মানুষ হচ্ছে তাদের দাস।”
সারাজীবন বাক স্বাধীনতার কথা বলা, ভাষা নিয়ে লেখালেখি করা, কথা বলার স্বাধীনতা নিজের লেখায় রূপকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা অধ্যাপক, কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতিক ভাষ্যকার ও কিশোর সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল তৎকালীন বিক্রমপুরে (বর্তমান মুন্সিগঞ্জ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারবিরোধিতা, যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে তার বক্তব্যের জন্য আশির দশক থেকে পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস, সমালোচনা গ্রন্থ, ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক বই, কিশোরসাহিত্য ও অন্যান্য প্রবন্ধ সংকলন মিলিয়ে ৬০টিরও অধিক গ্রন্থ তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যু পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের সামরিক শাসনের প্রেক্ষাপটে রচিত তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল (১৯৯৪) বাংলাদেশের প্রভাবশালী কিছু লেখার মাঝে অন্যতম।
ভাষাবিজ্ঞান নিয়ে হুমায়ুন আজাদের গবেষণাও অনেক। বাংলার ভাষা বিষয়ক গবেষণায় আধুনিক ভাষাবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সূত্রপাত ঘটে তার মাধ্যমেই। তার পিএইচডি থিসিস টপিকের নাম ছিল ‘প্রোনোমিনালাইজেশান ইন বেঙ্গলি (অর্থাৎ বাংলা সর্বনামীয়করণ)’। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে একই শিরোনামে এটি ইংরেজি ভাষায় দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।
২০০৪ সালে হামলা পরবর্তী সময়ে একটু সুস্থ হয়েই ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান হুমায়ুন আজাদ। সেখানেই ১১ আগস্ট রাতে একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর সঠিক কারণ চিহ্নিত করা না গেলেও অনেকে ধারণা করেন, হামলা হওয়ার ফলেই আজাদের শরীরের অবস্থা অনেকটা নাজুক ছিল যার প্রভাবে পরবর্তীতে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুর পর তার বাসভবনে পাওয়া জিনিসপত্রের ভেতর তিন সন্তানের জন্য লেখা তিনটি চিঠি পাওয়া যায়। অনুমান করা হয়, চিঠিগুলোই ছিল তার জীবনের শেষ লেখা।
ভাষা ও শব্দের বাতিঘর হুমায়ুন আজাদ যদি আর কিছুদিন বেঁচে থাকতেন হয়তো আমরা আরো কিছু তীক্ষ্ণধার লেখা উপহার পেতাম। কিন্তু যা তিনি রেখে গিয়েছেন তা এখনো আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র ও চিন্তার বিচারে প্রাসঙ্গিক ও আলোচনাসাপেক্ষ। জীবিত অবস্থায়ই তিনি কিংবদন্তী ছিলেন, কিন্তু আফসোসের ব্যাপার, এখনো মৌলবাদী গোষ্ঠী দ্বারা প্রভাবান্বিত বাংলাদেশে এই কিংবদন্তীর রেখে যাওয়া অবদান যথাযথ চর্চা হয় না, যতটা হওয়া অপরিহার্য ছিল।