November 24, 2024
কলামফিচার ৩

নারী কেন আত্মহত্যা করে? প্রতিকারের উপায় কী?

লাবণী মণ্ডল।। শেফালী আক্তার (ছদ্মনাম)। বয়স ৩০-৩৩। ডিভোর্সী। ছাত্রজীবনে প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে প্রগতিশীল চিন্তাধারার সাথে নানাভাবেই যুক্ত। মানবিক মানুষ। চাকরি করেন। স্বাধীনচেতা। যতটুকু জানি একাই থাকেন। বন্ধুসংখ্যা সীমিত। বাবা তার অনেকটা বন্ধুর মতো। এছাড়া আরও দু’চারজন খুব নিকট বন্ধু রয়েছে।

তার সাথে আমার পরিচয়টা ফেসবুকে। দু’একবার দেখাও হয়েছে। বেশ বোল্ড চরিত্রের মানুষ। আত্মসম্মানবোধে পরিপূর্ণ। পারতপক্ষে কারো ক্ষতি করেন না।

বেশ কয়েক মাস আগে দেখেছিলাম তিনি ‘আত্মহত্যা’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কষ্ট পেয়েছিলাম। অবাক হইনি। খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপারই মনে হয়েছিল। তার ভেতরের দহন তো আর আমার জানা নেই। বাহ্যিকভাবে একজন মানুষকে যত সহজ মনে হয়, আসলে বাস্তবতা হয়তো তত সহজ নয়। ‘মরে যেও না, বেঁচে থাকো’ বলে অনুরোধ করেছিলাম। যে অনুরোধের কোনো মানে হয় না। নিজেকে নিজে কিছুটা হলেও সান্তনা দেওয়া।

যাইহোক, যেকোনো কারণেই হোক কিংবা কারো বিশেষ অবদানের কারণে তিনি আর আত্মহত্যা করেননি। এরপর সেদিন আবারও দেখছি তার ‘আত্মহত্যা’ করবে বলে স্ট্যাটাস। এবারও অনুরোধ করলাম। তিনি বেঁচে আছেন। হয়তো একদিন এভাবেই কাউকে না জানিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করবেন।

আজকাল ফেসবুকে জানান দিয়ে, অনেককেই আত্মহত্যা করতে দেখছি। তারা তাদের হতাশার কথা, ক্ষোভের কথা বলে চলে গিয়েছেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। কখনও রাগ করেছি। কি দরকার মরে যাওয়ার বলে মনে মনে ওই পথে যাওয়া মানুষদের বকে দিয়েছি।

এখন আর বকে দিতে ইচ্ছে করে না। আত্মহত্যার দায়, যিনি করেন তার উপরই চাপাতে ইচ্ছে করে না। সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করতে গিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হই। মানুষ কেন এত সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে এত অবলীলায় চলে যান! স্তব্ধ হয়ে পড়ি। চিন্তার জগত বিকল হয়ে যায়। যখন সম্বিত ফিরে পাই তখন নিজেকে একজন ‘দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী’ মানুষ হিসেবে কাঁঠগড়ায় দাঁড় করাই।

বাংলাদেশে আত্মহত্যার চিত্র দিনকে দিন ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে। আমাদের চোখে খুব ছোট কোন কারণেই মরে যাচ্ছে মানুষগুলো। কিন্তু আমরা জানি না আমাদের কাছে যা ‘ছোট কারণ’ তা ওই মানুষটার কাছে কতটা বড়, পাহাড়ের মতো বিশাল ছিল।

আমাদের দেশে পুরুষের তুলনায় নারীদের আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি। তাদের সবার বয়সই ১৪ থেকে ৩০-এর মধ্যে। কেন নারীদের আত্মহত্যা প্রবণতা বেশি? এ প্রশ্নটা এলেই পরিষ্কার হয় যে, এটি এক পুরুষতান্ত্রিক ও ভোগতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা, যেখানে নারীকে ‘ভোগপণ্য’ হিসেবে দেখা হয়। নারীমাত্রই তার কোনো অধিকারবোধ থাকতে নেই, ভালো লাগা, মন্দ লাগার বালাই থাকতে নেই। যৌতুকের কারণে নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন, পারিবারিক সহিংসতা, নারী হওয়ার কারণে অবদমিত করে রাখার সামাজিক মানসিকতা এবং অতিরিক্ত চাপ—অর্থাৎ সামাজিক, পারিবারিক, জৈবিক এসব কারণ নারীকে আত্মহত্যায় উদ্বুদ্ধ করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় দুই কোটি নারী ও পুরুষ আত্মহননের চেষ্টা করে। এরমধ্যে ‘সফল’ হন (মারা যান) প্রায় আট লাখ নারী-পুরুষ। বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করেন। আর উপমহাদেশে অন্তত ৬৫ লাখ মানুষ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মহত্যার দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। এ দেশে আত্মহত্যার ক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যাই বেশি, যাদের বয়স ১৪ থেকে ৩০ বছর। ১৪ বছর বয়স থেকে একজন নারী শারীরিক, মানসিকভাবে নিজেকে নতুন করে ভাবতে শুরু করে। তার সামনে হাজারটা স্বপ্ন এসে দেখা দেয়। না পাওয়া চলে আসে। পরিবারের চাপ। সমাজের চাপ। কালো হওয়ার চাপ। খাটো হওয়ার চাপ। জীবনের কোনো মূল্য নেই বলে ভাবতে শুরু করে এ বয়স থেকে নারীরা। ম্যাচিউরিটি কম থাকে। জীবনের যা সিদ্ধান্ত তা ইমোশনের উপর নির্ভর করে নেয়। যে কারণে এ বয়সটায় আত্মহত্যার চাপ বেশি থাকে।

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ (বাংলাদেশ) পরিচালিত ২০১৩ সালের এক জরিপের তথ্যমতে, প্রতিবছর দেশে গড়ে ১০ হাজার লোক আত্মহত্যা করে। বিভিন্ন বয়স, লিঙ্গ, পেশা এবং ভৌগোলিক অবস্থানের নিরিখে ৮ লাখ ১৯ হাজার ৪২৯ জনের ওপর সরাসরি জরিপ চালিয়ে তারা এ তথ্য প্রকাশ করে। আর শহরের চেয়ে গ্রামে আত্মহত্যার হার ১৭ গুণ বেশি। গ্রামে যারা আত্মহত্যা করে, তাদের বড় অংশই অশিক্ষিত এবং দরিদ্র। ওই জরিপে বলা হয়, নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এদের মধ্যে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী নারীরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

এটা একটা পরিসংখ্যান। এর বাইরের হিসেবটা আমাদের জানা নেই। কতশত ‘শেফালী’ জীবনের মায়া তুচ্ছ করে চলে যাচ্ছে তার কোনো হিসেব এই রাষ্ট্রব্যবস্থার কাছে নেই। ক’জনের আর ময়নাতদন্ত হয়? ক’জনের হিসেবই রয়েছে এসব সংস্থাগুলোর কাছে?

পনেরদিন আগের কথা। ফেসবুকে এক ২০-২২ বছর বয়সের মেয়ের আত্মহত্যার খবর ভাসছিল। কিন্তু তার পরিবার দিব্যি অস্বীকার করল, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। কিন্তু আমরা জানি ‘মৌনী’ (ফেসবুক নাম) আত্মহত্যা করেছিল। তার পরিবারের সাথে বণিবনা ছিল না। এই লকডাউনে সে চাপে পড়ে বাড়ি চলে যায় এবং আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। এই খবর কি সংস্থাগুলোর কাছে রয়েছে? নাহ্। কারণ তাদের কাছে কোনো অভিযোগপত্র জমা হয়নি।

এদিকে পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে গড়ে ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। এর বাইরে ঘুমের ওষুধ খেয়ে, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়ে ও রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে অনেকে আত্মহত্যা করেন। পুলিশের তথ্যমতে, দেশের বড় বড় হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে যত রোগী ভর্তি হয়, তার সর্বোচ্চ ২০ ভাগ হচ্ছে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া লোকজন।

আমাদের দেশের বুর্জোয়ারা গলা উঁচিয়ে বলে থাকে, নারীরা বের হচ্ছে, তাদের উপর চাপ কমছে। তারা এখন স্বাধীন। কিন্তু আমরা যারা ঘরের বাইরে কাজ করি, চাকরি করি বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে তারা বুঝি জীবন কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। কোথাও নিরাপদ নয়। ঘরে-বাইরে-অফিসে-আদালতে-বাসে-ট্রেনে কোথাও নেই নিশ্চয়তা! চারদিকে ভয়াল থাবা। কখন যেন কার অনাকাঙ্ক্ষিত হাত এসে পড়বে নারীর গায়ে।

ঘরে-বাইরে নারীরা কাজ করার কারণে তাদের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। চাকরিস্থলে পুরুষ সহকর্মীদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারা, তাদের জন্য হুমকি হয়ে পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিগুণ কাজ করেও পুরুষের সমতুল্য মর্যাদা, শ্রমের মূল্য পান না নারীসমাজ। বিশেষ করে শ্রমজীবী নারীদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টা খুব ঘটে। আমরা দেখি গার্মেন্টস, ছোট ছোট কারাখানাগুলোতে নারীকে দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে পুরুষের তুলনায় অর্ধেক পারিশ্রমিক দিচ্ছে। এসবই বৈষম্যের ফল।

চাকরি শেষ করে বাসায় ফিরে হাজারটা কাজ নারীকেই করতে হয়। বেশিভাগ পরিবারেই পুরুষরা কোনো ধরনের কাজে হাত লাগান না। সন্তান দেখা, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সেবাযত্ন নারীকেই করতে হয়। এর সাথে অবিশ্বাস, সন্দেহপ্রবণতা। চাকরি করতে না দেওয়ার হুমকি। সবকিছুর চাপ নারীকে একাই পোহাতে হয়। এসব চাপ মিলে নারীদের ভেতরে মানসিক অশান্তি তৈরি হয়, যা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি হয়।

এসব চিন্তা থেকে জীবনে অনেকবার ‘আত্মহত্যার’ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু ‘দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ’ বেঁচে থাকার প্রেরণা দিয়েছে। লড়াই করো। জিতো। বেঁচে থাকো। সংগ্রাম ছাড়া উপায় নেই। এ শব্দগুলো বারবার কানে বাজছে। বেঁচে রয়েছি। এখনও ‘সুইসাইডাল ট্রেন্ডেসি’ কাজ করে। যখনই দেখি কোনো নারীর উপর নির্যাতন চলছে, যৌতুকের চাপে নারীটি দিনের পর দিন মার খাচ্ছে, কোনো ধরনের মর্যাদা পাচ্ছেন না নারী। তখন বড় অসহায় লাগে। ঘৃণা লাগে। থু থু ছিটাই এ সমাজব্যবস্থার উপর।

যৌতুকের নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা সহ্য করতে না পেরে নারীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। কিশোরীরা যৌন নিপীড়ন, উত্যক্তের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। নারী প্রতিবাদী, স্বাধীনচেতা সমাজের চোখে ‘খারাপ’ হয়ে যান- এ অপবাদ না নিতে পারে অনেক নারীই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। ‘মৌনী’র ক্ষেত্রে ঠিক এ ঘটনাই ঘটেছিল। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এ চাপ ছাড়া নারীদের সংখ্যা খুবই কম। অনেক সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে কোনও ঝামেলা হলে নিজের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে ডিপ্রেসনে ভুগে ছাত্রছাত্রীরা আত্মহত্যা করছে।

চারুকলার ছাত্রী সিমির ইতিহাস আমরা ভুলিনি। তখনকার মিডিয়াগুলো ফলাও করে নিউজ করেছিল। সিমি অত্যন্ত প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। পুরুষতন্ত্রের মুখে থু থু ছিটানোর জন্যই সিমিদের জন্ম হয়। সিমিকে দমানোর জন্য, তার বাড়িতে গিয়ে পুলিশ সদস্য পর্যন্ত থ্রেট করেছে – তুমি কেন নিজেকে শেষ করে দাও না? মেয়েদের যে সমাজে অবদমিত করে রাখা হয়, মেয়েদের বিকাশের সুযোগ দেওয়া হয় না, এগুলোও তাদের আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে।

বাংলাদেশের সরকারি হিসাব বলছে, দেশে গড়ে প্রতি দিন প্রায় ৩০টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। বছর শেষে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১১ হাজারে।

বাংলাদেশ পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা আছে এমন লোকের সংখ্যা প্রায় ৬৫ লাখ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এর মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘জৈবিকভাবে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে আলাদা, তেমনি মানসিকভাবেও আলাদা। মেয়েরা বেশি আবেগপ্রবণ হয়। দেখা যায় যে যখন মেয়েরা আবেগটা দমন করতে পারে না, তখন আত্মহত্যা করে বসে। এখানে ইমোশনটা রিলেটেড। হতাশা, নিজেকে দোষী ভাবা থেকে রেহাই পেতে তারা আত্মহত্যা করে। অনেক সময় দেখা যায়, মেয়েরা বিষন্নতায় বেশি ভোগে। সেই ক্ষেত্রেও মেয়েদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েরা সামাজিক বৈষম্যেরও বেশি শিকার হয়। পারিবারিক, কর্মক্ষেত্রে, রাস্তাঘাটে সবখানে মেয়েরা বেশি বৈষম্যের শিকার হয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তারা অপমানগুলো নিজের ভেতরে রাখে। কাউকে বলে না, বললে কাজ হয় না। তখন তার নিজের সম্পর্কে, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। একটা ছেলে কিন্তু এত সহজে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে না। মেয়েরা তো অনেক সময় পারিপার্শ্বিকতার ওপর নির্ভরশীল থাকে। কোনও ব্যক্তির ওপর এই নির্ভরশীলতা। কালচারই তাকে নির্ভরশীল করে তৈরি করেছে। এই নির্ভরতার জায়গাটা যখন সরে যায়, তখন সে মনে করে তাকে দেখার কেউ নেই। সে কিছুই পারবে না। তখন ভাবে যে তার আর বেঁচে থেকে লাভ নেই।’

এ বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে একটা প্রবাদ রয়েছে, ‘নারীর বুক ফাটে তো মুখ ফুটে না।’ এটা সমাজেরই শিক্ষা। নারী তার চাহিদার কথা জানাতে পারবে না। তার বন্ধু থাকতে পারবে না। অন্যের উপর সবসময় নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে কর্মজীবী নারীরাও মুক্ত নয়। যেসব কারণে জীবনের প্রতি মায়া কমে যায়, হতাশাচ্ছন্ন হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এখন প্রশ্ন হলো, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় বা পথ কী? তাৎক্ষণিকভাবে আত্মহত্যা প্রবণতা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সাথে যদি অন্তরঙ্গভাবে মেশা যায়, তাদের ভেতরের আকুতিগুলো শোনা যায় আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যা কিছু কমবে। কিন্তু এটাই সমাধান নয়।

পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে জোরালো লড়াইটা জরুরি। লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজন সামন্ততান্ত্রিক, পুঁজিবাদী, পুরুষতান্ত্রিক, ভোগবাদী রাষ্ট্রযন্ত্রের উৎখাত। নয়াগণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করার মধ্যদিয়েই একমাত্র ‘নারীমুক্তি’ সম্ভব। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, সামন্ততন্ত্রবিরোধী গণমানুষের লড়াইটা জরুরি। নয়াগণতান্ত্রিক বিপ্লবের লড়াই নারী স্বাধীনতার এক নতুন পথ। নয়াগণতান্ত্রিক বিপ্লবকেই সমাজতন্ত্র-কমিউনিজমের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রকৃতপক্ষে ‘নারীমুক্তি’ সাম্যবাদী সমাজব্যবস্থাতেই হবে।

 

 

[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত কলাম লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]