September 20, 2024
মন ও জীবন যাপনফিচার ২

মুড ভালো করে দেবে কোন খাবারগুলো?

ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। মুড অফ? কিংবা ঘন ঘন মুড সুইং? এগিয়ে আসছে পিরিয়ডের দিন? শরীর ম্যাজম্যাজ করছে তো বটেই, সাথে মেজাজটাও তিরিক্ষি হয়ে আছে। কিছু মিছু খেতে ইচ্ছে হচ্ছে? বুঝতে পারছেন না কী খাবেন! কী খেলে একটু ভালো লাগবে!

বেশিরভাগ মেয়েই মাসের এই বিশেষ সময়টিতে এই সমস্যায় ভোগেন। এর বাইরেও নানারকম শারীরিক মানসিক ও সামাজিক কারণে আমরা মুড ওঠা নামার সমস্যায় ভুগি। কখনো কখনো মন খারাপ এত বেশি হয় যে কিছুই ভালো লাগে না। তখন অনেকেই ভালো লাগবার আশায় নানারকম হাবিজাবি খাবার খেতে থাকেন। বেশিরভাগই ভাবেন মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার খেলে ভাল লাগবে। তখন নানারকম মিষ্টি, চকলেট ইত্যাদি খেতে শুরু করেন। অনেক বেশি চিনি আছে এমন খাবার তাৎক্ষনিক একধরণের এনার্জি দেয়। এতে ভালো লাগতে থাকে। কিন্তু সমস্যা হল, চিনি বেশি এসব খাবার যত দ্রুত এনার্জি লেভেল বাড়ায়, তত তাড়াতাড়িই এটি এনার্জি মাত্রা নামিয়েও দেয়। এই এনার্জি স্বল্প সময়ের তো বটেই, পাশাপাশি এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

তাই আমাদের জানতে হবে, ঠিক কোন খাবারগুলো আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়, যা এই মুড খারাপের সময়গুলোতে আপনার দেখভালও করবে আবার একইসাথে মুড ভালো করতে সাহায্যও করবে।

এখানে একটি লিস্ট দেয়া হল, যে খাবারগুলো মন ভালো রাখতে এবং মুড চনমনে হয়ে উঠতে সাহায্য করে।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ: যেসব মাছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড আছে, সেস মাছ মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ ওমেগা ৩ এর বড় উৎস। সেজন্য স্যামন বা টুনা মাছ খেতে পারেন মন ভালো করতে। এছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণও করতে পারেন।

ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেট মন ভালো অন্যতম ওষুধ। মুড ঠিক করতে অনেক কার্যকর। এর ভেতরে থাকা মিষ্টিজাতীয় উপাদান দ্রুত মন ভালো করে, পাশাপাশি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

ফার্মেন্টেড খাবার: দই, কিমচি, কমবুসার মত ফার্মেন্টেড খাবার মুড ভালো করে। এ ধরণের খাবারে থাকা ব্যাকটেরিয়া খাবারে থাকা চিনিকে অ্যালকোহোল ও অ্যাসিডে পরিনত করে। এই প্রক্রিয়ায় প্রোবায়োটিকস উৎপন্ন হয়। এতে কিছু স্বাস্থ্যকর ব্যাকটিরিয়ার জন্ম হয় যা শরীরে সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়ায় এবং চনমনে রাখে আপনাকে। সেরোটোনিন আপনার মুড, স্ট্রেস, যৌন আকাঙক্ষা, ক্ষুধা ইত্যিাদিকে নিয়ন্ত্রণ করে।

কলা: কলায় উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি-৬ আছে। বি-৬ সেরোটোনিন ও ডোপামিনের মাত্রা বাড়িয়ে আপনাকে উৎফুল্ল হতে সাহায্য করে। একটা ১৩৬ গ্রাম সমান বড় কলায় ১৬ গ্রাম চিনি ও ৩.৫ গ্রাম ফািইবার থাকে। চিনি ও ফাইবার মিলে রক্তপ্রবাহে মিশলে সেটি রক্তে চিনির পরিমান ঠিক রেখে মুডও নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তচাপ অতিরিক্ত কম থাকলে মেজাজ খিটখিটে হয় এবং মুড সুইং ঘটে।

ওটস: সকালবেলা এক বাটি ওটস সারাদিন আপনার মন ভালো রাখবে। ইন্সট্যান্ট ওটস ছাড়াও আপনি মুজলি বা গ্রানোলাও খেতে পারেন দুধ বা দইয়ের সাথে। এক কাপ বা ৮১ গ্রাম ওটসে ৮ গ্রাম ফাইবার থাকে। ফাইবার আপনার এনার্জি লেভেল স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে এবং মুড ভালো করবে।

বেরি: যেকোন ফল ও তাজা সবজিই ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নানারকম বেরি মুড সুইং সারায়। বেরিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা স্ট্রেস কমাতে কার্যকর। ফ্রােজেনের চেয়ে ফ্রেশ বেরি বেশি কাজ করে।

নানারকম বাদাম ও সিড: উদ্ভিজ্জ আমিষ, ফ্যাট ও ফাইবারের উৎস এগুলো এবং ট্রাফোফেন, অমিনো এবং সেরেটোনিন উৎপন্ন করতে সাহায্য করে। মুড বুস্টিং এ খুব কার্যকর। আমন্ড, কাজু, পিনাট, ওয়ালনাট এবং কুমড়ার বিচি, সূর্যমুখীর বিচি এবং তিল মুড চাঙা করতে দারুন কাজ করে এবং বিষন্নতা কমায়।

কফি: কফি পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পানী। এটি মন ভালো করে। কফিতে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে সচল করে। ক্লান্তি দূর করে, মনোযোগ বাড়ায়। মুড বুস্টিং ডোপামিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে চনমনে করে তোলে।

মসুর ডাল ও নানারকম বিন: মন ভালো করবার একটি খাবার হল মসুর ডাল। প্রচুর পরিমানে ভিচামিন বি এর উৎস এই ডাল। এছাড়া জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, সেরেনিয়াম, আয়রনেরও উৎস, যা শক্তি যোগায়, কর্মউদ্দীপনা বাড়ায়। এছাড়ায়ও নানা ধরণের বিন মন ভালো করায় সহায়ক।

 

সূত্র: ইন্টারনেট