September 20, 2024
মুক্তমত

ধর্ষক পাললে বেশিদিন টিকবেন না

কানিজ ফাতেমা।। “জোর যার মুল্লুক তার” একটা পুরুষতান্ত্রিক আদর্শ।
সোজা বাংলায় বললে যার ক্ষমতা আছে এবং যিনি এই ক্ষমতা দুর্বলের উপর প্রয়োগ করেন তিনিই পুরুষতান্ত্রিক।

পুরুষ কেন ধর্ষণ করে তার অনেক কারণের মধ্যে একটি কারণ ক্ষমতার প্রভাব খাটানো। নারীর উপর ক্ষমতা দেখানোর জন্যই তারা ধর্ষণ করে।

ক্ষমতা কাঠামো সবসময়ই পুরুষকে ধর্ষণ করার শক্তি জোগায়। যে মনস্তত্ত্ব নিয়ে পুরুষ বেড়ে উঠেছে তাহলো, তারা ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী এবং নারীদেরকে তাদের ক্ষমতার চাইতে একটু হেয় করে দেখা, দুর্বল ভাবা, তাকে সবসময় নিপীড়ন এবং নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা, মগজে গেঁথে ফেলা যে নারীকে ভোগ করা, নির্যাতন করা, মেরে ফেলার অধিকার তাদের আছে- এটাই মূলত ধর্ষণের জন্য দায়ী। ধর্ষণ ব্যাপারটা আগাগোড়া পুরুষতান্ত্রিক।

ধর্ষণ যারা করে তারা জন্মের পর থেকেই পুরুষতন্ত্র দ্বারা মগজ ধোলাই হওয়া। তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে নারী মানেই দুর্বল, নারী মানেই তাকে ভোগ করা যায়, নির্যাতন করা, নিপীড়ন করা, শোষণ করা, মেরে ফেলা কেটে ফেলা মানে তার সাথে যাচ্ছেতাই করা যাবে। তাই যতদিন পিতৃতন্ত্র বা পুরুষতন্ত্র বজায় থাকবে ততদিন ধর্ষণ চলবে। যতদিন প্রত্যেকটা পুরুষ মানুষ না হবে মানসিক পরিবর্তন না আনবে পারিবারিক শিক্ষা না পাবে ততদিন পর্যন্ত ধর্ষণ চলবে। ধর্ষণ করে ক্ষমতার প্রভাবে ছাড় পেয়ে যাওয়ার অনেক দৃষ্টান্তও আছে এই সমাজে।

রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ করে যখনই একটা আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে, যখনই একটা মানুষ বুঝতে পারে সে দোষ করে ছাড় পেয়ে যাবে, তার কোনো শাস্তি হবে না তখনই সে এক ধরনের বিচারহীনতার সুবিধা ভোগ করে।

প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। যখন যে ক্ষমতায় থাকছে তাকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দেখানো ও ধর্ষণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাজনৈতিক দলগুলোর পরিষ্কারভাবে দেখা উচিত কারা তাদের দলে ঢুকছে, রাজনীতি মানে তো কেবল বক্তৃতা দেওয়া না। তাদের উচিত দলটাকে সুসংগঠিত করা। যারা এ ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের দল থেকে বের করে দেওয়া। কারণ এরা তো সবার জন্য ক্ষতিকর। এরা কেবল নারীর জন্য নয় জাতির জন্য বিষাক্ত। অবশ্যই কোনো জাতি এমন সরকার চাইবে না যে সরকার ধর্ষক পালে। সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠবে। সুতরাং কেবল আইন তৈরি পর্যন্তই না, এর যথাযথ প্রয়োগও নিশ্চিত করা উচিত।

আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে অপরাধী অপরাধকে অপরাধ বলে মনে না করে বিনোদন মনে করছে৷ আইনকে তারা উলঙ্গ করছে। শাস্তিদানকারীকে নিশ্চুপ থাকলে হবে না।

[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত মুক্তমত লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]