চন্দ্রাবতী মন
মাহিনুর আক্তার।।
ফুলেশ্বরী নদী তীরের নিসর্গের কোলে লালিতা চন্দ্রাবতী,
দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা সে —অনন্য গুণে পরমা সুন্দরী।
কবি চন্দ্রাবতী রামায়ণের সীতাকে সাজায় নতুন পরিচয়ে,
আজও পাঠ হয় রামায়ণকথা নানা উৎসবে-ধ্রুপদী আশ্রয়ে।
মনসার ভাসান গানে ভেসে যায় চন্দ্রাবতী কল্পনা-সাগরে,
অনাথ জয়ানন্দকে কবিতার শ্যামলিমায় দেয় হৃদয় সঁপে।
নির্বোধ জয়ানন্দ সিন্ধা গ্রামের বেঈমান প্রেমিক ভাঙ্গে মন,
লোভে অন্যত্র বিয়ে করে দেয় জীবন ফুলেশ্বরীতে, বিসর্জন
হতভাগা তকমায় শেষে নিক্ষিপ্ত হয় ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে।
অপমানে চন্দ্রাবতীর মন ভেঙে হয় খান খান তীব্র আঘাতে।
বিরহী কবি পিতার আশ্রয়ে শিবমন্দিরে মগ্ন লোকসাহিত্যে,
বেদনার স্বচ্ছ ধারায় লোকগাথা মলুয়া,মহুয়া করে রচনা।
কিশোরগঞ্জে বিলীন ফুলেশ্বরী শত বছরের করাল গ্রাসে,
ভাঙা শিবমন্দির আজো বাতাস ভারি করে চলে দীর্ঘশ্বাসে।
প্রেম মরে নাতো মরে যায় প্রেমিক-পুরুষ —থাকে হৃদয় ক্ষরণ,
চন্দ্রাবতী লোকগাথায় ধূপের মতো পুড়ে হয় যে অসাধারণ।
ভালোবাসা রোমন্থনের তীব্র আকুতিতে মলুয়া, মহুয়া একাকার,
শূন্যতাকে ঘিরে অন্তরাত্মার হু হু কান্না নিরন্তর করে হাহাকার।
তাই নানা ভাষী মাঝে বিরহিণী চন্দ্রাবতী আলোচিত দেশে-বিদেশে,
চন্দ্রাবতী মন ভাঙে, গড়ে ওধারে, মানুষ মিলায় পুরুষে-পৌরুষে।