লুইস গ্লুকের কবিতা
২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান কবি লুইস এলিজাবেথ গ্লুক। তিনি সাহিত্যে নোবেলজয়ী ১৬তম নারী এবং ৩৫তম কবি। তাঁর “The Myth of Innocence” কবিতার ভাবানুবাদ করেছেন সাদিয়া মেহজাবিন।।
সরলতার রূপকথা
অন্যদিনের মত এক গ্রীষ্মে সে গিয়েছিল মাঠে
থমকে দাঁড়িয়ে পুকুরের ধারে
যেখানে নিজেকে দেখতে পেতো প্রায়ই,
যদি নিরূপণ হতো পরিবর্তন, সে দেখতে পেতো
সেই একই ব্যক্তি, সেই বীভৎস মুখোশ
এখনো এঁটে থাকে তনয়া হয়ে।
জলে সূর্যেকে দেখা যায় নিভৃতে
সে ভাবে, এ তো আমার সে চেনা গুপ্তচর
ভিন্ন পথে প্রকৃতির সকলে আমার স্বজন
সে ভাবে, আমি কখনো একা নই,
সকল ভাবনাই প্রার্থনায় রূপ নেয়
তখন মৃত্যু হাজির হয়, প্রার্থনার উত্তর হয়ে।
কেউ কখনো বোঝে না
কত চমৎকার ছিল সে!
মনে পড়ে পারসিফোনির কথা
মনে পড়ে আদরের আলিঙ্গন
ঠিক এখানেই, চেনা মুখের সামনে
মনে পড়ে সূর্যের উজ্জ্বলতা নগ্ন হাতের ওপর।
এটি শেষ মুহূর্ত তার পরিষ্কার মনে আছে
এরপর ঈশ্বর তাকে অন্ধকার জলোচ্ছ্বাসে ছুড়ে মারে।
তার আবছা আরো মনে আছে
সে মুহূর্ত থেকে অন্তর্দৃষ্টি স্থির হয়েছে
তাকে ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।
যে মেয়েটি পুকুর থেকে অদৃশ্য হয়েছিল
সে কখনো ফিরবে না, এক নারী ফিরবে না
সে মেয়ে খুঁজছে যেমনটি সে ছিল।
পুকুরের ধারে দাঁড়িয়ে পর পর বলছে
আমি সেই অপহরণ হওয়া শিশু, কিন্তু প্রতিধ্বনি
ভুল শোনাল তার কাছে,
সে যেমন ভাবছে তেমন কিছুই না
তারপর সে বলল, আমি অপহৃত না
তারপর সে বলল, আমি নিজেকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম
আমি চাই এই শরীর থেকে পালাতে,
কখনো আমি চেয়েছিলাম, কিন্তু অজ্ঞতা
জ্ঞানকে ছাড়িয়ে যায়, অজ্ঞতা
দৃশ্যকল্পের জন্ম দেয় যার বিশ্বাস অস্তিত্বে
সব ভিন্ন ভিন্ন নাম
সে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছে
মৃত্যু, স্বামী, ঈশ্বর, অচেনা ব্যক্তি…
সব শুনতে স্বাভাবিক, নিতান্তই রীতিসম্মত।
সে ভাবে আমি নিশ্চিত সরল মেয়ে
নিজেকে নিজের মত মনে পড়ছে না
কিন্তু সে ভাবতে থাকে,
পুকুরের সব মনে পড়বে এবং
তার প্রার্থনার উত্তরও ব্যাখ্যা করা হবে
তখন সে বুঝতে পারবে
হয়তো উত্তর দেওয়া হয়েছিল বা না।