জঠরের পাপ
শাশ্বতী বিপ্লব।।
এ ক্যামন দিন দ্যাখাইলা আমারে খোদা!
ছোট্ট সখিনার লাশ ওই ক্ষেতের ধারে
পইড়া আছে, রক্ত মাখা, ঠান্ডা নিথর!
কানাঘুষা হুনি, আমার ছাওয়ালেই পালের গোদা
দল বাইন্ধা করসে ধর্ষণ মাইয়াডারে
হেরপর উদাম ফালাইয়া থুইয়া আর রাখে নাই কুনো খবর।
নিজে না খাইয়া খাওয়াইসি যেই পোলারে
মাডিতে থুই নাই পাছে ওরে পিঁপড়ায় ধরে
বুকের ওমে করসি বড় যেই ছাওয়াল
ধর্ষক হইসে সে খোদা, এই আমার ক্যামন কপাল!
এতো পাপ ক্যামনে ছিলো আমার জঠরে?
তুমিই কও খোদা, ক্যামন কইরা মাইনা নিবো তারে?
জন্ম দিলেই ছাওয়াল ব্যাটা হয়না মানুষ
বুঝলাম আমি এতো কাল পরে
দিনশেষে দেখি সে শুধুই হইসে পুরুষ
শরীর জুইড়া ওর শুধুই লোভের লালা ঝরে।
মন জুইড়া শুধুই ওর পাপের চাষ
মানুষ না হইয়া আইজ সে হইসে পিশাচ।
ঠিকাছে, আমি যদি জন্ম দিসি ওরে,
যদি সব দোষ অহন আমার ঘাড়ে;
তহন আমিই বিচারক এই পাপের বোঝার।
যেমন কইরা ও জান নিসে ওই মাসুম মাইয়ার
তেমন আমিও জান নিবো ওর, কসম আল্লার।
খবরদার কইলাম, কেউ আগাইবেন না ধারে কাছে
এই যে দ্যাখতাসেন বটিখান, আমার হাতে অহনও ধরা আছে
প্রয়োজনে কোপাইতে পারুম আরো কয়েক শুয়োর
ব্যাডাগিরি ফলাইতে চাইলে আসেন দেহি আগাইয়া কেউ
দেখি আছে কত সাহস কারো বুকের ভিতর?
হ, মায়া আছে আমারও পরানে
কতোটা কইলজা পোড়ে সে শুধু আমার মাবুদ জানে
বুকের ভিতর পাথর ভাঙ্গে, পাহাড় সমান
হাজার হোক, সেতো আমারই পেটের সন্তান।
তবু ধর্ষণের ক্ষমা নাই আমার কাছে
এইযে হাতে বটিখান ধরা আছে
এই বটি দিয়াই করলাম আইজ পোলার বিচার
ধর্ষণের হাউস জানি কোনদিন ওর মনে জাগে না আর।
এইবার আপনেরা মানবতার কথা কইতে পারেন
ডাইকা আনতে পারেন যতো আছে আইন আদালত
ওইসব গুনিনা আমি, শুধু জানি
মা হইয়া আমি করি নাই কোন ধর্ষকের হেফাজত।
ফাঁসি দিলে দ্যান, আফসোস করি না আমি তার
মা বইলাতো আর ডাকবো না আমারে কোন কুলাঙ্গার।
মরণের পরে যদি দেখা পাই সখিনার
বুকে নিয়া তারে প্রায়শ্চিত্ত করুম সন্তান হত্যার।
না জানি কতো কষ্ট পাইয়া মরসে মা আমার
তার দ্বিগুন ভালোবাসা দিবো তারে কসম খোদার।