November 2, 2024
ফিচার ৩ফিটনেস ও সুস্থতা

মেয়েদের গুরুতর রোগ পিএমডিডি; পিএমএস থেকে কি আলাদা?

বিদেশি পত্রিকার আর্টিকেল অবলম্বনে লিখেছেন অর্চি সাহা ।।

প্রিমেন্সট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার (পিএমডিডি) আর প্রিমেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম (পিএমএস) এর পার্থক্য কী? পিএমডিডির চিকিৎসা কী?

প্রিমেন্সট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার (পিএমডিডি) একটি ভীষণ গুরুতর রোগ যা অনেক সময় প্রিমেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম (পিএমএস) এর উপসর্গ থেকেও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। যদিও পিএমএস ও পিএমডিডি দুটোরই শারীরিক ও মানসিক প্রভাব আছে, তবে পিএমডিডি এতটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে মানুষকে যে অনেক সময় সামাজিক জীবন যাপনও মুশকিল হয়ে পড়ে।

পিএমডিডি ও পিএমএসের লক্ষণগুলোর সাধারণত পিরিয়ড শুরু হবার ৭ কিংবা ১০ দিন আগে থেকে দেখা দিয়ে পিরিয়ডের প্রথম কয়েকদিন পর্যন্ত থাকতে পারে।

পিএমডিডি ও পিএমএসের লক্ষণগুলো প্রায় একই রকম। যেমন- পেটে গ্যাস হওয়া, স্তনে সংবেদনশীলতা, ক্লান্তি, ঘুম ও খাওয়ার অভ্যাসে পরিবর্তন ইত্যাদি। তবে পার্থক্য হলো প্রকটতায়। পিএমডিডিতে নীচের সমস্যাগুলোর সবগুলো বা যে কোনো একটি জটিল কঠিন হয়ে দেখা দেয়-

-বিষণ্ণতা বা হতাশা

-উদ্বেগ বা অতিরিক্ত চিন্তা

-মাত্রাতিরিক্ত মেজাজ খারাপ

-বিরক্তি বা রাগ

পিএমডিডি কেন হয় তার কারণ অজানা। পিএমএস ও পিএমডিডিতে বিষণ্ণতা ও উদ্বেগ দুটোই সাধারণ সমস্যা, তাই ধারণা করা হয় মাসিকে যেসব হরমোনের পরিবর্তন হয় তাই মানসিক অবস্থার অবনতির জন্য দায়ী।

পিএমডিডির চিকিৎসা মূলত এর লক্ষণগুলো প্রতিরোধ বা লাঘব করা। যেমন-

অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট: সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিআপটেক ইনহিবিটরস (এসএসআরআইস) যেমন ধরুন ফ্লু অক্সেটাইন (প্রোজ্যাক, সারাফেম, অন্যান্য) এবং সেরট্রালাইন (যোলফট) ওষুধগুলো মানসিক পীড়ন, ক্লান্তি, অতিরিক্ত খিদে ও ঘুমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। চিকিৎসক চাইলে এই ওষুধগুলো প্রেসক্রাইব করতে পারেন মাসজুড়ে অথবা ওভুলেশন ও মাসিক শুরুর হবার সময়টাতে।

জন্মনিরোধক বড়ি: টানা খাওয়া যায় অথবা সাময়িক বিরতি দিয়ে খাওয়া যায় এমন জন্মনিরোধক বড়িও পিএমডিডি ও পিএমএস কমাতে সাহায্য করে।

পুষ্টি সম্পূরক বড়ি: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন ক্যালসিয়াম সেবন করলে পিএমডিডি ও পিএমএসে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও ভিটামিন বি-৬, ম্যাগনেসিয়াম, এল-ট্রিপটোফ্যানও কার্যকরী হতে পারে। তবে এগুলো সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নেবেন।

ভেষজ টোটকা: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিশিন্দা পিএমডিডির কিছু উপসর্গ যেমন বিরক্তি, পেট ফাঁপা, অতিরিক্ত খিদে, পেট ব্যাথা ইত্যাদি উপশমে সাহায্য করে। কিন্তু এ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া না নেয়াই ভাল।

খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের পরিবর্তন: নিয়মিত ব্যায়াম প্রিমেন্সট্রুয়াল লক্ষণগুলো অনেকটাই কমায়। ধূমপান, মদ্যপান ও ক্যাফেইন ত্যাগেও উপকার পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত ঘুম, মনঃসংযোগের চর্চা, যোগব্যায়াম ইত্যাদিও ব্যাথা নিরসনে উপকারি ভূমিকা রাখে। এছাড়াও সম্পর্ক বা অর্থনৈতিক জটিলতা যা মানসিক চাপের কারণ, তা থেকেও দূরে থাকা উচিত যতটা সম্ভব।

পিএমডিডির লক্ষণগুলো যদি নিজের ভেতর দেখতে পান, শিগগিরই ডাক্তারের শরণাপন্ন হউন রোগের পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *