November 1, 2024
সাহিত্যকবিতাফিচার ৩

মেয়ে

সাদিয়া ইসলাম রিমি

 

মেয়ে তুমি নিরাপদ নও

সেইসব নিকট আত্মীয় থেকে

যাদের তুমি মামা, চাচা, ভাই বলে ডাকো

যাকে বলো তুমি বন্ধু

সেই অপরিচিত ছেলেটি

যাকে দেখছিলে রাস্তায়

ভাবছো “এই পথ হবে নিরাপদ?”

হা হা হা!  হাসালে তুমি।

তুমি নিরাপদ নও এমনকি তোমার প্রিয় বাবার কাছ থেকেও।

 

তুমি ভাবছো, “আমি আমার মায়ের আট বছরের লক্ষ্মী ছোট্ট মেয়ে’’

ভাবছো,  “আমি বিবাহিতা”

তাতে কি আসে যায়  সেই নরপশুর?

 

ভাবছো, “আমি সুন্দর, এইটাই কি আমার ভুল?”

না, না। তোমার ভুল ঐ শরীর। যেখানে ঠাঁই পেয়েছে তোমার অন্তর আত্মা।

 

ভাবছো, “আমি কালো, আমার আর ভাবনা কী?”

ভাবছো, “আমি ছ’ বছরের ছেলের মা।”

হায়! তুমি কি বোকা!

 

হিংস্র নরপশু জানেনা তোমার আর তার সম্পর্ক

সেই হিংস্র নরপশু জানেনা, তুমি আট বছরের সেই ছোট্ট খুকি

সেই হিংস্র নরপশু মানেনা তুমি বিবাহিতা

ঐ দানব দেখে না তোমার গায়ের রঙ।

ঐ দানব ভাবে না তুমি কোনো নিষ্পাপ শিশুর মা।

 

সেই দানব শুধু জানে, তুমি মেয়ে।

চেনে তোমার শরীর।

আর তোমার শরীর পাওয়া মাত্রই তোমার অন্তর আত্মাকে করে দেবে ক্ষত বিক্ষত।

সে জানে,  তুমি মুখ ফুটে বলবে না কাউকে।

 

তুমি এই শরীর থেকে মুক্তি চাইবে?  হতে পারবে কি মুক্ত?

তুমি নতুন করে বাঁচতে চাইবে, পারবে কি বাঁচতে?

হ্যাঁ, আমি জানি। তুমি খুব পারবে।

শুধু পারবে না কাউকে বলতে।

 

তবে এই বেঁচে থাকাই কি বেঁচে থাকা?

যেখানে অন্তর আত্মার মৃত্যু ঘটেছে সেখানে শরীরের বেঁচে থাকাই কি বেঁচে থাকা?

তবে তো মৃত্যুই ভালো।

 

জাগ্রত করো তোমার অন্তত আত্মাকে

চিনিয়ে দাও সেই নরপিশাচকে, যে তোমার অন্তর আত্মাকে করেছে ক্ষত বিক্ষত।

তার শাস্তি কি প্রাপ্য নয়?

তার মৃত্যু কি অনিবার্য নয়??

তুমিই পারো সেই দানবের ভয়াল ছোবল থেকে অন্য কোনো মেয়ের আত্মাকে রক্ষা করতে।

 

মেয়ে ভয় পাচ্ছো?

ভয় কি তোমার?

চেয়ে দেখো হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মেয়ের মুক্তির প্রেরণা তুমি।

মুক্তির চাবি এখন তোমারই হাতে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *