আদিবাসী শিশু প্রীতির মৃত্যু ও শ্রম – বিচার চাই অপরাধীদের
রাজধানীর মোহম্মদপুরে একটি শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে অতি সামান্য। কারণ এই পুঁজিবাদী সমাজে শিশুটি সামান্যর চেয়েও সামান্য, অতি সামান্য শ্রেণির একটি শিশু। সে একজন গৃহকর্মী, শুধু তাই নয়, সে আবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিশু। বৈষম্যের ক্ষেত্রে ইন্টারসেকশনালিটির চরম এক উদাহরণ। শুধু তাই না, সেই শিশুটি যে বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো, সে বাসার গৃহকর্তা আবার সমাজে প্রচুর প্রভাবশালী, তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকের নির্বাহী সম্পাদক।
আদিবাসী শিশু প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যুর খবর জেনে প্রথমের মনে আসে, কেন একটি ১৫ বছরের শিশু গৃহকর্মীর কাজ করে? শিশু শ্রম আইনে এ তো নিষিদ্ধ। তাহলে সেটা সম্ভব হলো কীভাবে, তাও আবার একজন সাংবাদিকের বাসায়? প্রীতির মৃত্যুর জন্য কে দায়ী এটি বের করার পাশাপাশি কেন তাকে শ্রমে নিয়োগ দেওয়া হলো, কে দিলো আর কে শ্রম দেয়ালো, সেটিও বিচারের আওতায় আসা উচিত। অবশ্যই উচিত।
জানা গেছে সাংবাদিক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসার ছাদ থেকে পড়ে এর আগেও এক গৃহকর্মী আহত হয়েছিল। এবার প্রীতি ওরাং এর মৃত্যু। একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটার পেছনে কারণ কী? তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে, সেই প্রত্যাশা করছি। একই সাথে সেই সুদূর চা বাগান থেকে একটি আদিবাসী শিশুকে এই রাজধানী ঢাকায় এনে কেন শ্রম বিকোতে বাধ্য করা হচ্ছিল, সেই অপরাধেরও শাস্তি দাবি করছি। আজকে রাজধানীর কোনো মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত পরিবারের শিশুর সাথে কোনো অন্যায় অপরাধ ঘটছে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হতো। কিন্তু আজ সবাই প্রায় নিশ্চুপ। এত অশ্লীল নীরবতাই বা কে ভাঙবে, জানি না। শুধু জানি, বিচারের দাবি তুলতেই হবে। শাস্তি পেতেই হবে অপরাধীদের।