কোড ওয়ার্ড ‘মাস্ক ১৯’: নির্যাতককে আটক করবে পুলিশ
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। রোববার ফ্রান্সের ন্যান্সি শহরে এক নারী একটি ওষুধের দোকানে গিয়ে হাজির হোন। তবে তিনি কোন ওষুধ কিনতে যাননি। সেখানে গিয়ে তিনি একটি কোডওয়ার্ড ব্যবহার করে জানালেন যে বাড়িতে স্বামী তার ওপর নির্যাতন করছে। পরে ওই নারীর স্বামীকে আটক করে পুলিশ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশে দেশে লকডাউন শুরু হওয়ার পর নারীরা নিজেকে এমন এক জায়গায় আবিষ্কার করলেন যেখানে মূলত তাদের নির্যাতনকারী স্বামী বা প্রেমিকরা আরও বেশি সহিংস হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ এ পরিস্থিতিতে পুলিশকে ফোন করতেও পারছেন না। এমনকি পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ।
বাড়িতে সহিংসতার শিকার অথচ পুলিশের সাহায্য চাইতে ভীত নারীদের জন্য এবার স্পেনের আদলে একটি পদ্ধতি চালু করেছে ফ্রান্স। যেসব নারী পরিবারে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন কিন্তু পুলিশকেও জানাতে পারছেন না, তারা ওষুধের দোকানে গিয়ে একটি কোড উচ্চারণ করলেই হবে। কোডওয়ার্ড ব্যবহারের কারণ হল, হয়ত কোন নারীকে একা ওষুধের দোকানেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে তিনি চাইলে ওষুধের দোকান বা ফার্মেসিতে গিয়ে কোনভাবে আড়ালেও শব্দটি উচ্চারণ করতে পারেন। কেননা শুধুমাত্র ওষুধের দোকানগুলোই এখন দেশটিতে খোলা থাকে। এক্ষেত্রে নির্যাতিত নারীকে ফার্মেসিতে গিয়ে বলতে হবে মাস্ক-১৯। তবেই ফার্মেসিস্ট বুঝতে পারবেন এই নারী নির্যাতনের শিকার ও পুলিশের সাহায্য চাইছেন।
ফ্রান্সের ন্যান্সি শহরের ওই নারী সরকারের এ পরামর্শমত পদ্ধতিটি ব্যবহার করে তার নির্যাতিত স্বামীকে আইনের আওতায় আনতে সমর্থ হয়েছেন। ফ্রান্সের সমতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মার্লেনা শিপ্পা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সে কোডওয়ার্ড উচ্চারণ করে পুলিশের সাহায্য চাওয়ার এ পদ্ধতি এ সপ্তাহেই চালু করেছে সরকার।
এর আগে করোনায় বিপর্যস্ত দেশ ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার কাস্টনার এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান তার দেশে পারিবারিক সহিংসতা বেড়ে গেছে। তিনি জানান, ‘লকডাউন’ বা ‘স্টে অ্যাট হোম’ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর এই ক’দিনে পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে গেছে অন্তত ৩০ শতাংশ। দেশটির রাজধানী প্যারিসে এ হার আরও বেশি। শহরটিতে পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন- লকডাউনে বাড়ছে নারী নির্যাতন, সহিংস হয়ে উঠছে পুরুষ