নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদ: হাইফেন কেন?
Kytha Kurin এর লেখা “Anarcha-feminism” শীর্ষক প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয় ১৯৮০ সালে। ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরের পাঠকদের জন্য এটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন সুবাহ মালিহা।।
অনেক নারীর জন্য, আমাদের প্রথম সুনির্দিষ্ট নারীবাদী রাজনীতির সূচনা হয়েছিল গর্ভপাতের অধিকার দাবি করার মাধ্যমে, যেটা হলো নিজের দেহকে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার। অন্ধকার যুগের আধিপত্য হিসেবে নয় বরং সচেতন উপায়ে একজন নারীর দেহকে রাষ্ট্রের সম্পত্তি হিসেবে শক্তিশালী করে তুলতে যখন নারীবিরোধী আইন প্রকাশিত হয়েছিল, অনেক নারীবাদী তখন রাজনৈতিক আন্দোলনে কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন, কারণ আমরা ইতিমধ্যে নিজেদেরকে একটা রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে খুঁজে পেয়েছি। রাজনীতি ব্যক্তিগতকরণ করা ‘শেখার’ প্রশ্নই ওঠে না; ব্যক্তির ঘনিষ্ঠতা রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ দ্বারা রাজনৈতিকীকরণ করা হয়েছিল। পুরুষরা এতটা স্পষ্টতভাবে এই বাস্তবতার মুখোমুখি হয়নি। যদিও বেশিরভাগ পুরুষ তাদের শারীরিক/মানসিক শক্তি এবং প্রতিভা বিক্রি করছে মজুরি দাসত্বের মাধ্যমে, এবং যার ফলে তাদের সৃজনশীল দক্ষতা নষ্ট হয়েছে, অবরুদ্ধ হয়েছে এবং গন্তব্য হারিয়ে পণ্য শোষণে রূপ নিয়েছে; অনেক তথাকথিত মৌলবাদী মানুষ এখনও এমন অভিনয় করছেন যেন তারা ‘রাজনীতি’র একটি ব্যবহারিক সংজ্ঞা মেনে নিয়েছেন যে, আপনি বাইরে যান এবং বড়জোর কয়েক ঘণ্টা কিছু করেন।যদিও সবাই এই তাৎপর্যতাকে স্বীকৃতি দেয়নি (আমাদের প্রতিদিন পরিবর্তন আনতে হবে), অনেক পুরুষ রাজনৈতিক তৎপরতার গুরুত্ব স্বীকার করেছেন (কিছু শিগগিরই পরিবর্তন হবে।) নৈরাজ্যবাদ স্বীকৃতি দিয়েছে যে, বিপ্লব সংঘঠনের প্রক্রিয়াটিকে ঐ বিপ্লবের লক্ষ্যগুলি থেকে আলাদা করা যায় না, নারীবাদকে রাজনীতিকরণ এভাবেই আবির্ভূত হয়েছে। নৈরাজ্যবাদীরা স্বীকৃতি দিয়েছেন যে, একটি কর্তৃত্ববাদী, শোষণমূলক আন্দোলন দ্বারা একটি মুক্তিপরায়ণ, অশোষণমূলক সমাজ তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু নৈরাজ্যবাদী তত্ত্ব যা স্বীকৃতি দিয়েছিল, নারীবাদীরা তা দাবি করেছিলেন।
নৈরাজ্যবাদীদের সভা অন্যান্য বামপন্থীদের সভার চেয়ে তেমন ভিন্ন কিছু ছিলনা। রাজনৈতিক সভার সাথে প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় ছিল এবং রাজনৈতিক সভায় কথা বলার যথাযথ উপায় ছিল। এবং যে সকল নারীবাদীরা এখন রাজনীতি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন, তারা দাবি করছেন যে, সকল প্রকার আধিপত্য ও শোষণকে রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হোক কেননা যখন মানুষ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিপীড়নের শিকার হয়, তখন কীভাবে জীবনযাত্রার কিছু ঘটনা রাজনৈতিক কাজের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে এবং অন্যান্য দিকগুলো হতে পারবে না? তাই যখন এটি কেবল বিমূর্ত বা গোষ্ঠীর বাইরে সংঘটিত না হয়ে একটি সভায় সংঘটিত হয়েছিল, তখন নারীবাদীরা আধিপত্য,ক্ষমতার শোষণ এবং লৈঙ্গিক বৈষম্য মোকাবিলা করতে দৃঢ়ভাবে আহ্বান করেছিলেন। নারীবাদীরাও রাজনৈতিক সভাগুলিতে অংশ নেওয়ার পূর্বে ‘যুক্তিযুক্ত’ আত্মকে ‘সংবেদনশীল’ আত্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং জীবনের ভালো ও খারাপ উভয়ই ধারণ করা ব্যক্তির উপস্থিতি দাবি করেছেন। কোন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জীবনের গতিপথ সংবেদনশীলতা থেকে পরিবর্তিত হয়ে পূর্ণাঙ্গতা প্রাপ্ত হয়ে জীবনের বসন্ত আসে না- এটি যৌক্তিক বলে বিশ্বাস করার যে যথার্থতা নেই, তা আমরা উন্মোচিত করেছি। বেশিরভাগ নৈরাজ্যবাদীদের কখনো তাদের নৈরাজ্যবাদকে নিয়ে সরাসরি বেঁচে থাকতে বলা হয়নি এবং পুরুষদের আধিপত্য বিস্তারের প্রক্রিয়া ‘এবং পুনরাবৃত্তিক বাঁধা’ সম্পর্কে নারীবাদী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়নি। বেশিরভাগ নারীবাদী যারা নৈরাজ্যবাদী তত্ত্বের প্রতি আর্কষণ অনুভব করা সত্ত্বেও নৈরাজ্যবাদী অনুশীলনের প্রতি বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন, তারা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন এবং বাকবিতণ্ডায় আবদ্ধ হতে অস্বীকৃত জানিয়েছিলন এই বিশ্বাসের উপর যে নৈরাজ্যবাদীরা সম্ভবত কর্তৃত্বপরায়ণ লিঙ্গ বৈষম্যকারী হতে পারে না। সুতরাং প্রচুর নারীবাদী মিশ্র দল ছেড়েছিল। কেউ কেউ নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদী দলে কাজ করেছেন এবং অনেকে সম্পূর্ণ নৈরাজ্যবাদ ত্যাগ করেছেন। গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে দ্বন্দ্ব অনেক নারীর রাজনৈতিক হয়ে ওঠার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে, যা স্বনির্ভর স্বাস্থ্য উপকরণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি যৌক্তিক সংযোজন ছিল। রাষ্ট্র বা উগ্র রাজনৈতিক দলগুলি যে কর্তৃত্ববাদী কাঠামোর মাধ্যমে জ্ঞান সংগ্রহ ও রহস্যাবৃত করে কর্তৃত্বের ক্ষমতা বজায় রাখে, ফলে নারীবাদীরা ‘নতুন বিশেষজ্ঞ’ হওয়া এড়াতে চেয়েছিল। তারা শরীরকে একটি প্রাকৃতিক অঙ্গ হিসাবে দাবি করতে কাজ করেছিল যা চিকিৎসকরা, বহু-বিলিয়ন ডলারের ওষুধ সংস্থাগুলি বা এমনকি উগ্রবাদী নারীবাদীদের কর্তৃত্বের পরিবর্তে নারীরা নিজেরাই বুঝতে এবং নিজেদের যত্ন নিতে পারে। তারা নিজেদের মধ্যে দক্ষতা ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং ‘রোগীদের সাথে’ জ্ঞান এবং দক্ষতা ভাগ করার চেষ্টা করেছিল। এভাবে, এটা কেবল ‘নারীদের’ স্বাস্থ্য উপকরণ না বরং ‘স্ব-সহায়ক’ স্বাস্থ্য উপকরণ।
তবে আমাদের সংস্কৃতিতে গুপ্তঘাতকের বিরুদ্ধে লড়াই করা বড় কাজ এবং বড় বড় চিকিৎসা গবেষণার প্রয়োজনের অর্থ জোগানোর জন্য নারীবাদীরা যদি সত্যিকার অর্থে কার্যকরী হতে চায় তবে ছোট সংগ্রহের বাইরেও আমাদেরকে কাজ করতে হবে। গর্ভনিরোধ বিষয়ক গবেষণা অন্ধকার যুগের পরে থেকেই অবনতির দিকে গিয়েছে কারণ এমন হওয়াটাই ড্রাগ কোম্পানি এবং পুরুষতন্ত্রের পক্ষে লাভজনক। আর যদি গর্ভনিরোধ বিষয়ক গবেষণা মহিলাদের জন্য একেবারে অপরিহার্য হয়, তবে ওষুধ সংস্থা এবং পুরুষতন্ত্রের শক্তি মোকাবিলা করতে হবে। ধর্ষণ পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলিতে কর্মরত লোকেরা একই ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। যদিও কেন্দ্রগুলি ধর্ষণের শিকারদের জন্য অত্যাবশ্যক, যদি সেগুলি প্রাথমিকভাবে ‘প্রতিক্রিয়া’ কেন্দ্র হয় তবে তারা রাষ্ট্রের সহায়ক হিসাবে অনন্ত ভবিষ্যত পেয়েছে। যদিও অনেক নারী ধর্ষণ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের দিকে এগিয়ে চলেছে, সেক্ষেত্রে উগ্রবাদী নারীবাদীরা আমাদের মতো ধর্ষণকে সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে জানেনা। বরং ক্ষমতাকে ন্যায়পরায়ণ মনে করার সমাজের যে বিশ্বাস, তার চূড়ান্ত প্রকাশ মনে করে। প্রায় সর্বদা দরিদ্র এবং সংখ্যালঘু বর্ণের পুরুষদের যে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, এই বিষয়টির বাইরে পিতৃতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সুবিধা হল নাগরিকদের ধর্ষণকে যৌন পরিতোষের এক বিকৃত রূপ হিসাবে দেখতে উৎসাহিত করা এবং এভাবে যৌনতার ধারণা নেতিবাচক হিসেবে চরিত্রায়িত করা যায়, এইভাবে শরীরকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ এবং বিধিনিষেধের অধীনস্থ একটি ধারণা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। রাষ্ট্র যখন ধর্ষণকে অপরাধ বলে অভিহিত করে, তখন বিজ্ঞাপন, হতাশাবোধ সঞ্চার এবং দুর্বলদের চেয়ে শক্তিশালীর শক্তির ন্যায্যতার ধারণার মাধ্যমে তা মানুষকে বাস্তবিক ধারণা থেকে দূরে সরায়, এবং সমাজ ধর্ষণের প্রসার ঘটায়। বিস্ময়কর সংখ্যক ধর্ষণের শিকার নির্যাতিত স্ত্রীলোকের বাস্তবতা এবং অণু পরিবারগুলোকে বিপর্যস্ত করার যে রাষ্ট্রভীতি, তা নারীবাদীদের বৈধ উপায়গুলির উপর নির্ভর না করে সমাজের মুখোমুখি হতে এবং ধর্ষণ সম্পর্কে শিক্ষিত করতে বাধ্য করেছে। ক্রমবর্ধমান বাড়িগুলোতে নির্যাতিত স্ত্রীরা তাদের সহিংস সম্পর্কের ‘সুরক্ষা’ প্রত্যাখ্যান করতে একে অপরকে সহায়তা করে। প্রচলিত সমাজসেবকদের মতো, উগ্র নারীবাদীরা ঘরে বসে বা আদালতের মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করতে আগ্রহী নন। তারা ধর্ষণ নির্মূল করতে আগ্রহী। জ্ঞান বিতরণ করে ধর্ষণের ক্ষেত্রে সমাজের ভূমিকা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে, ধর্ষণকারীদের বর্ণনামূলক মুদ্রণ করে যাতে ধর্ষণকারীরা তাদের বেনামে শক্তি হারাতে পারে এবং দলে দলে ধর্ষণের শিকার সকলকে নিয়ে ধর্ষণকারীদের রূপ প্রকাশ করা, ধর্ষণ সম্পর্কে সমাজের নিখুঁত অনুমোদন প্রকাশ করা, এবং হতাশা, দুর্বলতা, পুঁজি এবং শক্তির আসল সমস্যাগুলিকে স্পষ্টভাবে আক্রমণ করে শিক্ষার সর্বোচ্চ রূপ বিকাশ করেছে। এটি এমন একটি শিক্ষা যা আসলে বাস্তব শিক্ষা কী তা শেখায় এবং তারপর বাস্তবতা পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যায়।
স্বনির্ভর ক্লিনিক এবং ধর্ষণ পুনর্বাসন কেন্দ্রের মধ্যে যে ধরণের অংশ নেয়া, জীবন্ত, শোষণমূলক শিক্ষার বিকাশ ঘটেছে তা বেশিরভাগ উগ্র নারীবাদীদের দ্বারা অনুশীলন করা শিক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে। জ্ঞান এবং দক্ষতা ভাগ করে নেওয়ার চর্চা কয়েক শতাব্দী ধরে মহিলারা তাদের ঘরে করে আসছেন, তবে এই দক্ষতাগুলি রান্না এবং শিশু যত্নের মতো বিষয়কেন্দ্রিক ছিল, এগুলোকে সাধারণত ‘নারীদের কাজ’ হিসাবে তুচ্ছ করা হয়েছে। তেমনি উন্মুক্তভাবে নারীদের সম্পর্কের কথা বলার ক্ষেত্রে ‘পরচর্চা’ হিসাবে একঘরে করে দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের মুদ্রণ, থিয়েটার, স্বাস্থ্য- আমাদের সমস্ত গ্রুপে নারীরা তাদের দক্ষতা, জ্ঞান এবং অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। নারীবাদীরা যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক সমাজের ইতিহাসকে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ‘নারীদের ইতিহাস’ দাবি করেছিল, আমরা কাঠামোবদ্ধ দাসত্বের বাস্তব অভিজ্ঞতা হিসাবে শিক্ষাকে উন্মুক্ত করার পথে রইলাম। পেগি কর্নেগার পরামর্শ দিয়েছিলেন যে নারীরা ‘সাবসারফেস নৈরাজ্যবাদী চেতনার ধারক হওয়ার অনন্য অবস্থানে’ ছিলেন… এলেন লিডার বলেছিলেন, ‘‘বলা হয়ে থাকে যে নারীরা প্রায়শই নৈরাজ্যবাদ অনুশীলন করে এবং এটি জানে না, আবার কিছু পুরুষ নিজেকে নৈরাজ্যবাদী বলে অভিহিত করে কিন্তু এটি অনুশীলন করে না।’’ যদিও কর্নেগার বা লিডার কেউই বলছেন না যে নারীরা জৈবিকভাবে আরও ভাল নৈরাজ্যবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, তাদের বক্তব্যের একটি খুব সহজ গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে অনেকে কেবল এটি বিশ্বাস করতে উৎসাহিত হয়েছে। তবে যদি নারীবাদী আন্দোলনের মধ্যে নৈরাজ্যবাদী প্রবণতাগুলি নারী হওয়ার প্রাকৃতিক উপজাত হিসাবে গ্রহণ করা হয়, এটি নারীদের উপর ‘তাদের প্রাকৃতিক নৈরাজ্যবাদ অব্যাহত রাখার জন্য’ অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করে এবং এটি রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমাদের সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে কারণ এটি পুরুষদের চেয়ে নারীরা কেন বেশি নৈরাজ্যবাদী আচরণ করে তা পরীক্ষা করা থেকে নিরুৎসাহিত করে। অনেক নারী গোষ্ঠী বিভক্ত হয়ে যায়, অনেক নারী অন্য নারীদের এবং পুরুষদের শোষণ করে, এখনো নারীবাদীরা মানবতা মুক্ত করতে সক্ষম হয় নি। এই ‘ত্রুটিগুলি’ নারীদের নারী অস্তিত্বকে কমিয়ে দেয় না বরং এগুলো নারীর মানবিকতা নিশ্চিত করে। তাহলে কেন নারীবাদী গোষ্ঠীগুলি আমাদের কর্মক্ষেত্রে এতগুলি নৈরাজ্যবাদী নীতি অন্তর্ভূক্ত করেছে? কারণ নারী হিসাবে আমাদের সংবেদনশীল, প্রতিপালনের জন্য এবং আমাদের কাজগুলোকে ক্ষুদ্র পরিসরে আবদ্ধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। যদিও অতীতে এই বৈশিষ্ট্যগুলি পুরুষ আধিপত্যের অধীনে ‘পার্থিব বিষয়গুলিতে’ নারীদের অকার্যকর করে রাখার ব্যাপারকে সহজতর করেছে, এখন আমাদের ‘নারীসুলভ’ গুণাবলীর জীবন লালন শক্তির সচেতন উপলব্ধি দিয়ে আমরা তাদের শক্তি বজায় রেখে তাদের প্রভাব বাড়ানোর অবস্থানে রয়েছি। আমাদের শিক্ষাই যে আমাদেরকে এই স্থানে নিয়ে এসেছে, এটা উপলব্ধি করার মাধ্যমে আমরা পুরুষদের শিক্ষিত করার জন্য এবং বিশেষত আমাদের পুত্রদের লালনপালন এবং আমাদের কন্যাদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই ধরণের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পারি। আমরা এই শিক্ষার অন্তর্নিহিত সীমাবদ্ধতাগুলিও চিনতে পারি। অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিবর্তে নিস্ক্রিয়তা এবং আমাদের মাথার ভিতরে বিস্ফোরণের দিকে ঝোঁক এই সীমাবদ্ধতাগুলির অন্তর্ভুক্ত। যদিও আমরা ছোট গ্রুপগুলিতে কাজ করতে পারছি তবুও আমরা ঐতিহ্যগতভাবে বৃহত্তর গ্রুপগুলি সম্পর্কে সতর্ক হয়েছি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে নিজেদের রক্ষা করার প্রয়োজন বোধ করেছি।
উগ্র নারীবাদী অভিজ্ঞতার পূর্বের ও পরের নৈরাজ্যবাদের রূপ ভিন্ন । নৈরাজ্যবাদ যদি এর ইতিহাস হয় তবে এটি তাৎক্ষণিক এবং ভবিষ্যতের প্রতি ধারাবাহিকভাবে নির্মিত শোষণমূলক এবং সক্রিয় প্রতিক্রিয়া। তত্ত্ব অনুসারে, নৈরাজ্যবাদ সর্বদা নারীবাদকে অন্তর্ভুক্ত করে কেবলমাত্র গত কয়েক বছরে আমরা এই সত্যটি জানতে জানতে সক্ষম হয়েছি। তাত্ত্বিকভাবে নৈরাজ্যবাদীদের নারীবাদী হতে শেখার প্রয়োজন ছিল না, তবে তাদের শিখতে হয়েছিল এবং সেই পাঠগুলি মূল্যহীন ছিল। এই পাঠগুলি আমাদের শিখিয়েছে যে রাজনীতিতে বেঁচে থাকার আসল অর্থ কী এবং এগুলো প্রত্যক্ষ, স্থানীয়, সমষ্টিগত ক্রিয়া সম্পর্কিত বাস্তব ও সমসাময়িক উদাহরণ দিয়েছে। সহজেই দেখা যায় যে কীভাবে নৈরাজ্যবাদ নারীবাদ থেকে উপকৃত হয়েছে এবং এমন অনেকে আছেন যারা নৈরাজ্যবাদী আন্দোলনের পরিবর্তে নারীবাদী আন্দোলনের পক্ষে যুক্তি দেখান। যদিও আমি মনে করি নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদ এর মধ্যকার হাইফেন ফেলে দেওয়ার সময় এখনো হয়নি। আমার দৃষ্টিতে একসময় নৈরাজ্যবাদের দিকে ফেরত আসা বরং এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি আরো উন্মুক্ত করবে নারীবাদকে। নৈরাজ্যবাদকে নারীবাদে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক কংক্রিট কাজকে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণে স্থাপন করতে সহায়তা করেছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ যাতে আমাদের সংগ্রামের সাথে মোকাবিলার সফল, সম্মিলিত মানবিক উপায়গুলি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে দেখা না হয়, বরং জীবন এবং দর্শনের অংশ হিসাবে দেখা হয়। আমরা কেবল তখনই এগিয়ে যেতে পারব যখন প্রথমে বর্তমান প্রকৃত সমস্যাগুলি বুঝতে পারব (এবং এগুলি নারীবাদীদের কাজের মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে), আমাদের অবাধে এগিয়ে যেতে দূরদর্শিতা দরকার। একটি লক্ষ্য আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রকাশ হতে পারে। এই লক্ষ্যের একটি অংশে আমাদের নৈরাজ্যবাদী ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং ইতিহাসের সেই অংশে ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষের দক্ষতা ভাগ করে নেওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইতিবাচক ‘নারী’ দক্ষতা যদি আমাদের শিক্ষার উপকরণ হয় তবে ‘নারী’ ঘাটতিগুলিও উপকরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। পুঁজিবাদী সমাজে সাধারণত নারীরা যে ধ্বংসাত্মক ব্যবহারগুলির মুখোমুখি হয় তা থেকে এবং তাদের পূর্বের অস্বীকৃত ‘পুরুষ’ দক্ষতা থেকে মুক্ত করতে আমাদের পুরুষ কমরেডরা সাহায্য করতে পারে। যদিও নারীবাদীদের অভিজ্ঞতা এই চর্চাকে এগিয়ে নিয়েছে, মুক্তিপরায়ণ সমষ্টিগত জীবনযাপনের প্রচেষ্টা আমাদের নৈরাজ্যবাদের ইতিহাসে এবং বর্তমানে উভয় জায়গায় খুঁজে পাব।
নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদ আন্দোলনের একমাত্র উপাদান নয়। প্রায়শই শোনা অন্য দুটি উপাদান হল অ্যানার্কো-সিন্ডিকালিজম এবং অ্যানার্কো- কমিউনিজম। সকল ক্ষেত্রে নৈরাজ্যবাদের উপাদানকে সংযোজন করাকে সর্বাধিক জোর দেওয়া উচিত বলে মনে হয়। অ্যানার্কো-সিন্ডিকালিস্টরা স্বীকৃতি দিয়েছেন যে বেশিরভাগ মানুষের জীবন কাজকে কেন্দ্র করে এবং তারা বিশ্বাস করেন যে এখানেই প্রধান আয়োজন করা উচিত। অ্যানার্কো-কমিউনিস্টরা কমিউন এবং কমিউনিটির গুরুত্বকে জোর দেয়। কারণ অ্যানার্কো-কমিউনিজম সমস্ত ব্যক্তিগত মিথস্ক্রিয়ায় জীবনের সাথে সম্পর্কিত, আমি মনে করি যে নৈরাজ্যবাদ শব্দটিতে কমিউনিজম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অ্যানার্কো-সিন্ডিকালিজম এবং অ্যানার্কো-কমিউনিজম উভয় দিকই প্রদর্শিত হয় নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদ এ। পুরুষদের চেয়ে নারীরা যে পরিমাণে শোষণ ও অবজ্ঞার স্বীকার হচ্ছে, নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদকে অ্যানার্কো-সিন্ডিকালিজমের মতোই মনে হয়। নৈরাজ্যবাদের সেই অংশের উপর জোর দেওয়া উচিত যা ব্যক্তিগত ও যৌন শোষণের সাথে সম্পর্কিত। নারীবাদ যেভাবে ‘প্রতিক্রিয়া’ ছাড়িয়ে শোষণের দিকে চলে যায় এবং সামগ্রিক জীবন পদ্ধতির জন্ম দেয়, এটি অ্যানার্কো-কমিউনিজমের মতো নৈরাজ্যবাদের সমার্থক হয়ে ওঠে। বলা হয় যে নৈরাজ্যবাদে নারীবাদী চাপকে ফেলা অকালীন, তাহলে আমি কেন এটি করেছি? প্রধান কারণ আমি নৈরাজ্যবাদকে দেখি- এমন একটি নৈরাজ্যবাদ হিসেবে যা নারীবাদীদের অভিজ্ঞতা দ্বারা বিস্তৃত হয়েছে- আশি’র দশকের সবচেয়ে কার্যকর বৈপ্লবিক দিকনির্দেশ হিসাবে। আমরা যারা মিশ্র গোষ্ঠীগুলোকে কাজ করার জন্য মাঝে মাঝে বেছে নিই তাদের সম্ভবত নৈরাজ্যবাদে নারীবাদকে জোরালো অবস্থান দেওয়ার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে এবং অবশ্যই, অনেককে নিজেদের নৈরাজ্যবাদী-নারীবাদ পরিচয় বহাল রাখতে হবে। নিজের জন্য আমি নারীবাদকে সমর্থন দিই, তবে সংগ্রামে নয়। নারীবাদী অভিজ্ঞতায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমি যা আশা করি তার মধ্যে রয়েছে আমাদের নিজস্ব নৈরাজ্যবাদী শিকড় এবং অভিজ্ঞতা উদ্ঘাটন এবং রাজনীতিকে নিত্যদিনের বিষয় হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া। নৈরাজ্যবাদী শিকড় বলতে কেবল বিশেষভাবে নৈরাজ্যবাদ অনুপ্রাণিত ক্রিয়া বা তত্ত্বগুলি বোঝায় না। এর মানে হচ্ছে বিদ্রোহী এবং স্বৈরাচারবিরোধী সমস্ত অভিব্যক্তিতে মনোযোগী হওয়া। ১৬০০-এর দশকে ইংল্যান্ডের ডিগারদের মতো বিভিন্ন বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ১৯৩০-এর দশকের স্প্যানিশ সমষ্টিগত, ফ্রান্সের মে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত বর্তমান আমস্টারডামের বিচ্ছিন্নতাবাদী থেকে, আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে নৈরাজ্যবাদী তত্ত্বটি নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানব বিদ্রোহ থেকে বেড়ে উঠেছে এবং জীবনের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে যা কোনও তত্ত্বের পূর্বে স্থান পায়। মৌলবাদী-নারীবাদের অভিজ্ঞতা হল এই সত্যের সর্বাধিক সুস্পষ্টতম উদাহরণ। এই ঐতিহ্যের পর্যালোচনা আমাদের জীবনের বাস্তবতা আরও নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করার প্রতি উৎসাহিত করে। এর পাশাপাশি এগুলোর প্রেক্ষাপট বুঝতে এবং কর্তৃত্ববাদী সমাজ সমূলে উৎখাতের সম্ভাবনা তৈরি করে। যদি আমরা অসন্তুষ্ট কয়েকজনের চেয়ে বেশি হয়ে উঠতে পারি এবং যদি আমরা সত্যিকার অর্থেই মানুষের মুক্তির সম্ভাবনায় বিশ্বাস করি তবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষত প্রচারমূলক পদক্ষেপসমূহ যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা,নাট্যশালা, ধর্ষিতাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে নারীবাদীরা প্রথমবারের মতো সচেতন রাজনৈতিক চিন্তাধারার সাথে তাদের চাহিদার সংযোগ ঘটাতে পেরেছে, যাদের জীবনটিই মুক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং সম্ভাবনাকে চিত্রায়িত করে। নারীবাদী সংগ্রামের মাধ্যমে নৈকট্যবোধ এবং উদ্যোগের কার্যকরতার মধ্যে সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবং আমি প্রত্যাশা করি যে বেশিরভাগ উগ্রবাদী নারীবাদীরা গত দশক ধরে আমরা যে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছি তা চালিয়ে যাবেন। নারীরা অবশ্যই পুরুষের চেয়ে বেশি নিপীড়িত, রাষ্ট্র এখন গর্ভপাত বন্ধ করতে চেষ্টা করছে কারণ এটি নারীদেরকে তার নিজের দেহের স্বাধীনতা ‘পাওয়ার’ মতো গুরুতর পরিবর্তন দেখতে পেয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক দলগুলি এখনও যৌনতাবাদী… আমরা যদি সত্যিই রাজনীতি পরিচালনা করার মনস্থির করি, আমাদের কর্মক্ষেত্রগুলি উন্মুক্ত করার জন্য আরও কাজ করতে হবে। নারীবাদীরা কর্মক্ষেত্র সংযোজন করতে ক্রমশ বেশি জড়িত হয়ে পড়েছে কারণ গত দুই দশকে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনার মতো আমাদেরকে পুরুষ আধিপত্যবাদী সংস্থাগুলির শ্রেণিবিন্যাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছিল। যেখানে সংস্থাগুলি ইতিমধ্যে বিদ্যমান ছিল, সেখানে নারীবাদের সামান্য ধাপ সংযোজন করতে নারীদেরকে লড়াই করতে হয়েছিল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংস্থাগুলি আগে মহিলাদের সংগঠিত করতে আগ্রহী ছিল না, তাই এখন অনেকাংশে আমরা আমাদের স্বতন্ত্র নারীবাদী সংস্থা গঠন করেছি। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের সংগঠনটি সৃজনশীল এবং মুক্ত হওয়া উচিত যেটি আমাদের জীবনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নারীবাদীরা যেমন রাজনীতির ব্যক্তিবাচক বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য লড়াই করেছেন, এখন নারীবাদীদের এবং নৈরাজ্যবাদীদের কর্মক্ষেত্রে মানবিকতার উপর জোর দিতে হবে এবং শ্রমিক হিসাবে আমাদের অবজেক্টিফিকেশন উৎখাতে কাজ করতে হবে। কর্তৃত্ববাদী লাইনে শ্রমিকদের সংগঠিত করা তেমনই ক্ষতিকারক যেমনটা প্রাথমিকভাবে শ্রমিকদের উপস্থিতি না চাওয়া। কারণ কর্মক্ষেত্র সাধারণত এতটা বিচ্ছিন্ন এবং বিরক্তিকর বলে মনে হয় যেখানে মানবশক্তি মুক্ত করা কঠিন। তবে, কর্মক্ষেত্র যেখানে আমরা বেশিরভাগই রয়েছি, সেখানে আমরা যখন একজন মানুষকে শ্রমিক পরিচয় থেকে মুক্তি দিতে পারব তখন নৈরাজ্যের শক্তি সীমাহীন হয়ে যাবে। নারীবাদ যেমন নৈরাজ্যবাদের বাস্তবতাকে প্রসারিত করেছে, তেমনি শ্রমজীবী মানুষের অবমুক্ত শক্তি নিজস্ব সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের অবাক করে দেবে। যদি আমরা অন্যের জন্য কিছু করার চেয়ে নিজের জন্য কিছু করার ক্ষেত্রে সফলতা দাবি করি,আমাদের কল্পিত সৃজনশীল ভবিষ্যতের কোনও সীমা থাকবে না। আর আমরা যদি ব্যর্থ হই তবে আমরা ভবিষ্যত কেমন হবে তা খুব ভালভাবে জেনে যাব…
স্পষ্টতই আমরা সকলে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া সমস্ত নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারবনা তবে আমরা যদি তাদের লড়াইয়ের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট না দেখি তবে আমাদের স্বতন্ত্র বা ক্ষুদ্র সম্মিলিত সংগ্রাম চালিয়ে যেতে সক্ষম হব না এবং শেষ পর্যন্ত বিনা লড়াইয়ে ধ্বংস হয়ে যাব কারণ এক পর্যায়ে আমরা কেন্দ্রীয় উন্মাদনার মুখোমুখি হব। এখানেই নৈরাজ্যবাদী লক্ষ্য , ইতিহাস এবং নেটওয়ার্কের গুরুত্ব প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের গঠনমূলক স্থানীয় সংগ্রামগুলি তাদের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে দেখা গুরুত্বপূর্ণ যাতে আমরা সিস্টেমে একীভূত না হয়ে যাই, যাতে আমরা অন্যদের কাছ থেকে শিখতে পারি যারা নিজেদের অঞ্চলে লড়াই করে, যাতে আমরা কখনই ভুলে যাই না যে আমরা একটি বিশ্ব বিপ্লবে জড়িত রয়েছি এবং আমরা যখন একটি সামরিকবাদী এবং বিরোধী নিউক এর মতো বিশাল বিক্ষোভে অংশ নেব, এবং অবগত অবস্থান থেকে গঠনমূলকভাবে অংশ নিতে সক্ষম হওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করব… আমাদের প্রয়োজন হবে সমস্ত চেতনা, কল্পনা এবং ধৈর্য। বড় শক্তিগুলি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং পারমাণবিক শক্তি নিয়ে খেলছে। আমাদের ভবিষ্যতের বিষয়ে আশাবাদী থাকাটা বোকামি হবে। তবে নৈরাজ্যবাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারীবাদের স্থায়িত্বের উদাহরণসহ, আমরা মানুষ হওয়ার লড়াইয়ের এক দৃষ্টান্ত তৈরি করব।