November 2, 2024
কলামফিচার ৩

কেন পুরুষতান্ত্রিক আইন সন্তানকে মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়!

তানিয়া নাসরীন তৃপ্তি।। বিবাহিত জীবনে সমস্যা দেখা দিলে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও ধর্মীয় অনুশাসনে বিবাহবিচ্ছেদ অনুমোদিত। যদিও আমাদের সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদকে খুবই নেতিবাচক ভাবে দেখা হয়। দুই দশক আগেও আমাদের দেশে পুরুষ কর্তৃক স্ত্রী ত্যাগ ছিল মুখের কথার মত সাধারণ ও সহজতর ঘটনা। পুরুষের তালাক প্রদানকে অবশ্য ততোটা নেতিবাচক মনে করা হতো না। তবে যুগের পরিবর্তন, শিক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে অনেক মেয়েই ডিভোর্স দিচ্ছে; দিচ্ছে বলাটাও ভুল কারণ মুসলিম অধ্যুষিত দেশের আইন অনুযায়ী মেয়েরা (কাবিনে তালাক দেবার ক্ষমতা না থাকলে) দিতে পারে না, নিতে পারে। নারী নির্যাতন বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ হলেও অন্যান্য অনেক কারণেই বিবাহ বিচ্ছেদ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। লেখার মূল প্রসঙ্গ বিবাহিত দম্পতির যদি সন্তান থাকে সেক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তানসন্ততি কার কাছে থাকবে।

বাংলাদেশে সন্তানের দেখাশোনা অভিভাবকত্ব এবং ভরণপোষণের বিষয়গুলো অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন ১৮৯০ ও পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়। এই আইন অনুযায়ী বাবাই অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের আইনগত অভিভাবক (Legal Guardian) আর মা হচ্ছেন সন্তানের তত্ত্বাবধায়ক (Custodian)। বাবা মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স পর্যন্ত এবং মেয়ে সন্তানের বয়ঃসন্ধি বয়স পর্যন্ত মা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময়ের পর মা সন্তানকে যদি নিজের কাছে রাখতে চান, তাহলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। তবে মা যদি দ্বিতীয় বিয়ে করেন তাহলে সন্তানকে নিজের কাছে রাখার ক্ষমতা হারাবেন।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই আইনটি নিয়ে কথা বলা অত্যাবশ্যকীয়। আমি কোনো আইন বিশারদ নই। একজন নারী হিসেবে, মা হিসেবে আমার দৃষ্টিকোন আর বিবেচনায় কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি। পৃথিবীর সব উন্নত দেশে মায়েরাই সন্তানের লিগ্যাল গার্ডিয়ান তবে ভরণপোষণ বাবা বহন করেন এমন আইন প্রচলিত। আমাদের এই আইনটির সংস্কার আবশ্যক।

একজন মা নয় মাস সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করে এই পৃথিবীতে আনেন। তাই নতুন করে প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই যে কে তার মা। কারণ একজন নারী চাইলেও তার গর্ভাবস্থার লম্বা জার্নি, সাইন, সিম্পটম গোপন করতে পারেন না। কিন্তু বাবা হতে গেলে শরীরবৃত্তীয় কোনো পরিবর্তন হয় না। বাবারা চাইলেই অস্বীকার করতে পারেন সন্তানের পিতৃত্বের দায়। আমাদের দেশে দায় এড়াতে হরহামেশাই অনেক বাবারা এটা করে থাকে। কারণ তারই বীর্যেই সন্তানের জন্ম হয়েছে তা প্রমাণ করতে হলে ডিএনএ টেস্টের মতো জটিল প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। তাই মায়ের পরিচয়ই বেশি গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। যেখানে বিশ্বব্যাপী মায়ের পরিচয় স্বীকৃত সেখানে বাংলাদেশ ২০০০ সালের পর থেকে সন্তানের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টে মায়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; আগে সেটাও ছিল না। আমি ক্লাস নাইনে (২০০১ সালে) ফরম ফিলাপের সময় প্রথম আমার মায়ের নাম লিখেছি, এর আগে স্কুলে ভর্তি বা অন্য কোথাও কোনো কাজে মায়ের নাম লেখার কোনো অপশনই ছিল না।

উন্নত বিশ্বের মতো না হলেও পূর্বের তুলনায় আমাদের দেশে বিবাহবিচ্ছেদ বেড়েছে। নারীর অর্থনৈতিক মুক্তিকে তার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয় আমাদের সমাজে। আমিও মেনে নিলাম যে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বন একমাত্র কারণ আর সেটা মেনে নিয়ে বলবো যে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হলে কী দরকার অপমান, লাঞ্চনা, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন সহ্য করে অসুখী দাম্পত্য বয়ে বেড়াবার। দাম্পত্য কলহ সন্তানের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকারক। তাই সন্তানদের মঙ্গল কামনা করে এক সাথে থাকার নামে তাদের সামনে ঝগড়াঝাটি, মারামারি করে তাদের শৈশব, কৈশোর বিভীষিকাময় করে না তুলে আলাদা হয়ে যাওয়াই শ্রেয়।

বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তানরা কার কাছে থাকবে সে বিষয়ে  আমাদের পারিবারিক আইনের বর্ণনা শুরুতেই দিয়েছি। আইন অনুযায়ী সন্তান মায়ের কাছে থাকতে পারবে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত। সন্তানের জন্য কোনটা মঙ্গলজনক সে বিবেচনায় আদালত এ সময়সীমা বাড়াতে পারেন ক্ষেত্র বিশেষে। তবে তার জন্য নতুন করে অনুমোদন নেয়া বা পুরো প্রক্রিয়াটিই খুবই অবান্তর লাগে।

আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেই বলুন সন্তানের সাথে মায়ের অ্যাটাচমেন্টই বেশি থাকে। একজন মা যেভাবে সন্তানকে ভালোবাসেন পৃথিবীর আর কেউ সেভাবে ভালবাসতে পারেন না। এ কথা যদি আমরা মানি তাহলে সন্তানের জন্য কে মঙ্গলজনক এই বিচার করার অপশন আসারই কথা নয়। মায়ের চেয়ে বেশি সন্তানের মঙ্গল আর কে চাইতে বা বুঝতে পারে?

অনেকের ব্যাখ্যামতে মায়ের অর্থিক সংগতির বিষয় মাথায় রেখেই বাবাকে সন্তানের গার্ডিয়ানশিপ দেয়া হয়। আর আইন অনুযায়ী সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্বও বাবার। যদি তাই ধরি সে বিবেচনায় মায়ের আর্থিক সঙ্গতি না থাকলেও সন্তান মায়ের কাছে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হবে না, যদি বাবা আইন মেনে ভরণপোষণ বহন করেন। তাই এক্ষেত্রেও সন্তান মায়ের কাছে থাকা যুক্তিযুক্ত। আর যদি মায়ের কাছে থাকলে বাবা ভরণপোষণ না দেন তাহলে তার জিম্মায় থাকলে যে সন্তানের প্রতি দায়িত্ব তিনি সঠিকভাবে পালন করবেন তার ভরসা কী?

এখনকার মায়েরা যারা অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল, তারা সন্তানের ভরণপোষণ থেকে শুরু করে অন্যান্য সব কিছুই দিতে পারেন, যা অনেক বাবাই দিতে পারবে না। আর স্বাবলম্বী না হলেও সন্তানের জন্য মা নিজেকে স্বাবলম্বী করে নেবেন। কারণ সন্তানের জন্য একজন মা পারেন না এমন কিছু পৃথিবীতে নেই। সন্তান জন্ম দিতে একজন মা যে যন্ত্রণা সহ্য করেন শুধুমাত্র সেটুকুও একথা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট। আর মা আর যাই করুক, কিছু কিছু বাবার মতো রাস্তায় ফেলবেন না। তাই সব বিবেচনায় সন্তান তার মায়ের কাছেই থাকা উচিত।

নির্দিষ্ট সময়ের পর মা তার সন্তানকে নিজের হেফাজতে  রাখার জন্য আবেদনে করলে আদালত যেসব বিষয় বিবেচনায় নেয় তারমধ্যে আর্থিক সংগতি, মাদকাসক্তি বা অপরাধমূলক কোন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অন্যতম। আমাদের দেশের অধিকাংশ মায়েরই হয়তো আর্থিক সঙ্গতি থাকেনা কিন্তু বাবার আর্থিক সঙ্গতিই কি সন্তানের সকল মঙ্গল নিশ্চত করতে পারে? অন্যতম আরেকটি ইস্যু মাদকাসক্তি; বাবা যদি মাদকাসক্ত হয় সেটি পরীক্ষা করার যে উপায় সেটি যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ বলেই জানি। আমি নিজে একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তির টেস্ট নেগেটিভ আসতে দেখেছি। আর মানদণ্ড হিসেবে এগুলোই কি সন্তান প্রতিপালনের জন্য যথেষ্ট? বাবা সন্তানকে মায়ের মত ভালোবাসবে কিনা, টেককেয়ার করবে কিনা,  সঠিক শিক্ষা দিতে পারবে কিনা সেগুলো কোন মানদণ্ডে মাপা হবে? মায়ের বিকল্প কোনো কিছু হতে পারে কি?

ছেলে সন্তানের সাত বছর পর্যন্ত আর মেয়ে সন্তানের বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত কাস্টডি দেওয়াটা অনেকটা পুরুষতন্ত্রের স্বার্থ উদ্ধার। ছোট বাচ্চা লালন পালন করা যত কঠিন সে তুলনায় সাত বছর বা তেরো/চৌদ্দ বছরের বাচ্চা লালন পালন সহজ। গ্রামে অনেকে ছাগল গরু অন্যের বাসায় পালতে দেয়। নির্দিষ্ট সময় পর ফেরত আনেন। সেখানে আর্থিক সুবিধার বিনিময় থাকে উভয় পক্ষেরই। আমাদের প্রচলিত আইনে মায়ের কাস্টডি অনেকটা সেই টাইপের, মায়ের কোনো আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তি ব্যতীত। একজন পুরুষের সন্তান গর্ভে ধারণ করে লালন পালন করে ঝামেলামুক্ত করে তাকে হস্তান্তর করা। হস্তান্তর করাও ঠিক না, মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া। সাত বছরের ছেলে সন্তান বাবার বংশে বাতি জ্বালাতে জ্বালাতে বড় হয়ে সংসারের হাল ধরবে আর বয়ঃসন্ধির মেয়ে সন্তানকে বিয়ে দিয়ে বাবা কন্যাদায় মুক্ত হবেন। মা মোটামুটিভাবে উহ্য হয়ে গেল প্রচলিত বিধি মোতাবেক। এদেশে ডিভোর্সি মায়ের ভূমিকা প্রাচীনকালে মাটির নিচে অন্যের সম্পদ পাহারা দেয়া সেই যক্ষের মতোই।

আরেকটি প্র্যাকটিস আছে এই আইনে, সেটা হচ্ছে সে কার কাছে থাকবে এ ব্যাপারে সন্তানের মতামত নেয়া। সাত বছর বয়সী একটি ছেলে শিশু বা তেরো/চৌদ্দ বছরের একটি মেয়ে শিশু তার জীবনের এত বড় সিদ্ধান্ত কোর্টে গিয়ে বলার সক্ষমতা রাখে কি? সে কতটুকুই বা বোঝে জীবনের? বরং আদালত, উকিল, বাবা বা মায়ের পক্ষের চাপাচাপিতে শিশুটি আজীবন ট্রমাটাইজড হয়ে থাকে। যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষই আমাদের দেশের আইনি প্রক্রিয়ায় জটিলতায় যেতে ভয় পান সেখানে কোমল শিশুকে কাঠগড়ায় নিয়ে টানাটানি করা বর্বরতাসম।

আইনের শেষ অংশটি আরো বিস্ময়কর! মা দ্বিতীয় বিয়ে করলে সন্তানের কাস্টডি হারাবে যা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘন। একজন চব্বিশ/পঁচিশ বছর বয়সী মেয়ের যদি তিন চার বছরের একটি বাচ্চাসহ ডিভোর্স হয়, এরপর সে দ্বিতীয় বিয়ে করলে কেন তাকে তার বাচ্চার  কাস্টডি হারাতে হবে? তাকে কয়েক বছরের মাতৃত্বের কাস্টডি পেতে বিয়ে না করে, নিজেকে বঞ্চিত করে মহান সাজতে বাধ্য করা হচ্ছে। কি মর্মান্তিক! বাবা নিশ্চয়ই দ্বিতীয় বিয়ে না করে বসে থাকবেন না। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করলেও বাবাই যদি শুধু গার্ডিয়ান থাকে তাহলে দ্বিতীয় বিয়ের পর মা কেন আর কাস্টডিয়ান মাও থাকবে না? বাবার ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য নয় কেন?

আইনের এই অংশটি মোটামুটি একজন মেয়েকে জিম্মি করে রাখা। অধিকাংশ মায়েরাই এই অংশটির কারণে ডিভোর্স নিতে বা ডিভোর্সের পর দ্বিতীয় বিয়ে করতে ভয় পান। কারণ একজন মায়ের কাছে সন্তানের চেয়ে প্রিয় আর কিছুই নেই, মা কখনোই তার সন্তানকে হারাতে চান না। যদি ডিভোর্স নিয়েও নেন দুঃসাহস দেখিয়ে তবে সবসময় একটা ভয়ের মধ্যে কাটানো যে কখন তার প্রাণ পাখিটিকে আইনি অভিভাবক বাবা এসে নিয়ে যাবে।

আমাদের দেশে যেহেতু ডিভোর্সের পর প্রাক্তন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক রাখার প্রবণতা বা প্রচলন নেই সেক্ষেত্রে সন্তানের বাবাও তার এই অন্যায্য অধিকারটি ফলাতে আসবেন বারবার, ছড়ি ঘুরিয়ে যাবেন মায়ের উপর। একজন মায়ের জন্য সর্বদা সন্তান হারানোর ভয় নিয়ে বেঁচে থাকা যে কত যন্ত্রণাদায়ক তা শুধু মায়েরাই জানেন।

সন্তান মায়ের কাছে শুধুমাত্র তখনই থাকতে পারে যখন বাবা সন্তান ফেলে রেখে যায়। সবই বাবার মর্জির (পুরুষের) উপর নির্ভর করে। কারণ সন্তানের প্রতি বাবা কোন দায়িত্ব পালন না করলেও তিনিই প্রকৃত অভিভাবক থাকবেন আজীবন মেয়াদে। মা শুধু সেই যক্ষের মত অন্যের ধন সামলাতে সামলাতে নিজেকে বঞ্চিত করতে করতে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করবেন নিজেকে।

আমরা সবাই কোনো না কোনো মায়ের সন্তান, তাই এ কথাটি স্বীকার করতে আমাদের কারোরই বাধা থাকার কথা না যে মায়ের তুলনা কারো সাথে হয় না। সন্তানের জন্য একজন ডিভোর্সি মায়ের ভালোবাসা অন্য সব মায়ের মতই অপরিসীম; একবিন্দুও কম নয়। তাহলে এই একুশ শতকেও কেন এমন আইন? মাকে কেন সন্তানের শুধুমাত্র কাস্টডি পেতেও আদালতে যেতে হবে?

সম্প্রতি আমাদের দেশে সন্তানের গার্ডিয়ানশিপ পেয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। তিনি স্বনামধন্য, সুপরিচিত নারী এবং তার সন্তানটি মেয়ে। তিনি যে পর্যন্ত যেতে পেরেছেন হয়তো সাধারণ মায়েরা তার দোরগোড়ায়ও পৌঁছাতে পারবেন না। উকিল আর কোর্ট পর্যন্ত যেতে যেতেই তাদের অর্থ বা অন্যান্য সাপোর্ট শেষ হয়ে যাবে। এসব মায়েরা কী করবেন? ছেলে সন্তানের মায়েরা কী করবেন? শুধুমাত্র বাবারাই কেন সন্তানের একক ও একচ্ছত্র অভিভাবক হবেন?

শুধু কাস্টডি নয় একমাত্র মা-ই হতে পারে সন্তানের লিগ্যাল গার্ডিয়ান। আমরা সন্তানের ভরণপোষণ চাই না, শুধুমাত্র কাস্টডিও চাই না; সন্তানের লিগ্যাল গার্ডিয়ান হতে চাই জটিল আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই (আমি মনে করি সব মায়েরাই এটাই চাইবে, তাই আমরা লিখলাম)। আমরা আর যক্ষ হয়ে অন্যের (আইনে অর্পিত) সম্পদ পাহারা দিয়ে জীবন নিঃশেষ করতে চাই না। আমরা মা তাই সম্পদের (সন্তান) আইনগত অধিকার আমাদের হওয়া উচিত। একজন ভালো অভিভাবক হিসেবে সন্তানকে ভালোবাসা, লালন পালন করাসহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার যোগ্যতাই আমাদের আছে। সন্তানের সকল দায়িত্ব নিতে আমরা প্রস্তুত। তাই আইনগতভাবে এ স্বীকৃতি আমাদের প্রাপ্য। শুধু ডিভোর্সি মা নয়, সকল মা-ই সন্তানের অভিভাবকত্বের দাবিদার। একজন মায়ের যথাযোগ্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য অনতিবিলম্বে এই আইনের সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।

 

[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত কলাম লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]