November 22, 2024
নারীবাদ আলোচনাফিচার ২

সেক্সিজম এবং মিসোজিনি কাকে বলে?

পূরবী চৌধুরী ।।

জন্মের পর একটা শিশুর বাহ্যিক দৃশ্যমান শারীরিক বৈশিষ্ঠ্য দেখে তার লিঙ্গ নির্ধারিত হয় অর্থাৎ শিশুটি নারী নাকি পুরুষ নাকি ‘তৃতীয়লিঙ্গে’র*। এটাই ঐতিহ্যগতভাবে হয়ে এসেছে। এই পরিচিতির সাথে সাথে শুরু হয় শিশুটির সামাজিক পরিচিতি, বহুকাল ধরে সমাজে বিদ্যমান নারী এবং পুরুষের অবস্থান অনুযায়ী তারা কী ধরনের কাজে দায়িত্ব পালন করবে কিংবা কী বৈশিষ্ঠ্য বহন করবে তার দিক নির্দেশনা চলতে থাকে। জন্মের পর থেকেই লিঙ্গের বৈশিষ্ঠ্য অনুযায়ী চলতে থাকে তাদের জন্য সমাজ কর্তৃক নির্ধারিত আচার ব্যবস্থা। মূলত এই সামাজিক রীতিনীতির পেছনে রয়েছে ধর্মীয় নির্দেশনা, আচার এবং ভাবনা। যেহেতু শিশুটি যেকোনো একটি নির্দিষ্ট কমিউনিটির অংশ তাই সে বড় হতে থাকে এইসব দিক নির্দেশনা নিয়েই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো এক ধরনের স্থায়ী সামাজিক রীতিনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং নারী বা পুরুষ হিসেবে বেড়ে ওঠা শিশুটি এই নিয়মকানুনের বেড়াজালে আটকে যায়। বহুযুগ আগে থেকেই এসব বিষয়ে নানা গবেষণা হয়ে আসছে, ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিকভাবে গড়ে তোলা এসব নিয়মগুলো নারী বা পুরুষের জন্য ভিন্ন এবং একেবারেই নারীপরিপন্থি বা নারীবিরুদ্ধ। শুধু নারীদের জন্যই নয় বরং অন্যান্য জেন্ডারের জন্য প্রবঞ্চনামূলক।

সেক্সিজম হলো সেই কুসংস্কার বা বৈষম্য যা একজনের লিঙ্গ বা লিঙ্গের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি করা হয়েছে। সেক্সিজম যে কারো জন্য প্রবঞ্চনার কারণ হতে পারে তবে এটি প্রাথমিকভাবে নারী বা মেয়েদেরকে বেশি প্রভাবিত করে। সোজা কথায় সেক্সিজম হলো সামাজিক বা ধর্মীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস যেখানে এটা ভাবতে শেখায় যে এক লিঙ্গ আরেক লিঙ্গের থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং উচ্চতর। এই ধারণাগুলোই জন্মের পর থেকে নারী ও পুরুষের কাজগুলো আলাদা এবং কে কী কাজ করতে পারবে কিংবা করার ক্ষমতা আছে এই ভাবনাকে পোক্ত করে। এক্ষেত্রে নারীদের শারীরিকভাবে দুর্বল এবং কম মেধাসম্পন্ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটার মূল উদ্দেশ্য পিতৃতন্ত্রের, যা পুরুষ আধিপত্যকে রক্ষা করাসহ অর্থনৈতিক শোষণ যুক্ত করে।

একজনের বায়োলজিক্যালি প্রাপ্ত লিঙ্গ বা শারীরিক গঠনের জন্য তার প্রাপ্য সামাজিক অধিকার খর্ব হতে পারে না কারণ লিঙ্গভিত্তিক এই অবস্থান সমাজের তৈরি। এটি সবার মনে গেঁথে গেছে পুরুষ বা নারীর এই যে নির্দিষ্ট এবং মৌলিক বৈশিষ্ট্য এগুলো তারা পরিবর্তনে অক্ষম তাই তাদের জন্য নির্ধারিত আচরণ ও কাজও তারা বদলাতে অক্ষম। এই কুসংস্কারকে বলা হয় ‘‘লিঙ্গ নির্ধারণবাদ”। যদিও সেক্সিজমের মূল ধারণাটি এসেছিল নারী ও মেয়েদের প্রতি নিপীড়নের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে, কিন্তু পরবর্তীতে ২১ শতকে এসে নারী ছাড়াও পুরুষ, ইন্টারসেক্স ও ট্রান্সজেন্ডার- যেকোনো লিঙ্গের প্রতি নিপীড়নকেই এখানে যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে যেকোনো ধরনের কাজ, বক্তব্য, আইন, বা কোনও আচরণ বা মিডিয়ার উপস্থাপনা যদি একটা জেন্ডার দ্বারা আর একটা জেন্ডারের উপর আক্রমণাত্মক, শোষণ এবং প্রবঞ্চনামূলক হয় তাহলেই সেটা সেক্সিস্ট হিসেবে গণ্য হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাই হোক না কেন এটা বিপরীত অবস্থানে থাকা কোনো ব্যক্তির জন্য ক্ষতির কারণ কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ। একজনের লিঙ্গ নির্ধারণ তার যৌনাঙ্গ এবং ক্রোমাজমের উপর নির্ভর করলেও জন্মের পর ধর্ম, সামাজিক কৃষ্টির দ্বারা বানানো জেন্ডার রোলের উপর ব্যক্তির মানসিক গঠন নির্ভর করে। এটি একটি স্টেরিওটাইপ ধারণা যে নারীরা বাচ্চা লালন পালনে পারদর্শী এবং পুরুষরা গণিত ও বিজ্ঞানে ভালো। আমরা জেন্ডার নির্ধারণে যেহেতু সামাজিক ভ্রান্ত ধারণা বিশ্বাস করি তাই তৃতীয় লিঙ্গের কোনো শিশু জন্মালেই আমরা তাকে সামাজিকভাবে অস্বীকার করি যা চরম জেন্ডার বৈষম্য, একে সেক্সিজম বলে।

বিশ্বব্যাপী পুরুষরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষমতার অধিকারী। তাদের এই ক্ষমতায় যখনই ঘাটতি হয় তখনই সেটার বিরূপ প্রভাব পড়ে নারীর উপর, কারণ পুরুষরা শারীরিকভাবে নিজেদের নারীদের থেকে শক্তিশালী মনে করে এবং এই ভাবনাই তাদেরকে নারীর প্রতি সহিংস হতে প্রভাবিত করে। এই ভাবনাকেই বলা হচ্ছে সেক্সিজম, বা পুরুষ প্রাধান্যমূলক চিন্তা। এটা আসলে শুরু হয় কুসংস্কার থেকে যা বিশেষ ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ।

Fred R. Shapiro মতে, Pauline M. Leet ১৯৬৫ সালে প্রথমবার সেক্সিজম শব্দটি ব্যবহার করেন, কিন্তু Caroline Bird’s বক্তব্য- “অন বিয়িং বর্ন ফিমেল”, যা ১৫ নভেম্বর, ১৯৬৮ তারিখে “ভাইটাল স্পিচেস অফ দ্য ডে”-তে সেক্সিজম শব্দটি প্রথম ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন- “সেক্সিজমকে এমনভাবে সব কর্মকাণ্ডের সাথে মিলিয়ে ফেলা হয় যেখানে হয়তো লিঙ্গ বৈশিষ্ঠ্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেক্সিজম বর্ণবাদের মতো করেই ছড়ানো হয়”।

সমাজবিজ্ঞানীরা লিঙ্গ বৈষম্যের ধরনগুলো তুলে ধরলেও সেক্সিজম শব্দটা ব্যবহার করেন নি। মনোবিজ্ঞানী Mary Crawford এবং Rhoda Unger সেক্সিজম নিয়ে বলেন যে এটা নারী গোষ্টির উপর নেতিবাচক মনোভাব তৈরির উদ্দেশ্যে করা। নারীবাদী লেখক Bell Hooks সেক্সিজমকে নিপীড়নের ব্যবস্থা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে বলেছেন যেখানে নারীরাই কষ্টের শিকার হয়। নারীবাদী দার্শনিক Marilyn Frye সেক্সিজমকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন যে এটি পুরুষের আধিপত্য ও অরাজকতার মাধ্যম এবং মিসোজিনি অর্থাৎ নারীবিদ্বেষের মনোগত-ধারণাগত-জ্ঞানগত-প্রাচীনবুনন। দার্শনিক Kate Manne সেক্সিজমকে পুরুষতান্ত্রিক আদেশের শাখা বলেছেন যেখানে পিতৃতান্ত্রিক নিয়মকে যুক্তিযুক্ত করে ন্যায্যতা দেয় এবং মিসোজিনির অংশ হিসেবে এটিকে প্রয়োগ করে অনিবার্য অংশ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যেখানে হয়তো প্রতিরোধ করার কোন কারণ বা পথ থাকেনা।

প্রাচীন মিশরে নারীরা পিতা বা স্বামীর উপর নির্ভরশীল হলেও তাদের সম্পত্তির অধিকার ছিল এবং তারা প্রয়োজনে আদালতে উপস্থিত হতে পারতো। অ্যাংলো-স্যাক্সন যুগের নারীদের সাধারণত সমান মর্যাদা দেওয়া হতো। জানা যায় যে অনেক প্রাক-কৃষি সমাজে নারীদের আজকের নারীদের চেয়ে উচ্চ মর্যাদা ছিল।  প্রাচীন বিশ্বে সেক্সিজমের উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে লিখিত আইন যা নারীদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয়; প্রাচীন রোমে নারীরা ভোট দিতে পারতেন না বা রাজনৈতিক অফিস রাখতে পারতেন না। প্রাচীন চীনে নারীদেরকে কনফুসিয়ান নীতি শেখানো হয়েছিল যে একজন নারীর শৈশবকালে তার পিতার, বিবাহে স্বামীর এবং বিধবা অবস্থায় পুত্রের বাধ্য হওয়া উচিত। ১৫ থেকে ১৮ শতকের মধ্যে জাদুকরী বিদ্যায় নারীদের ভুমিকা রয়েছে এই ভাবনার বশবর্তী হয়ে সেক্সিজম শুরু করেছিল। আধুনিক ইউরোপে এবং উত্তর আমেরিকার ইউরোপীয় উপনিবেশগুলিতে, দাবি করা হতো যে ডাইনিরা খ্রিস্টধর্মের জন্য হুমকি। সেই সময় এই বিষয়ে সৃষ্টি হওয়া নারীবিদ্বেষ নারী নিপীড়নে ভূমিকা রেখেছিল। Malleus Malificarum এর যে বইটি জাদুকর ধরা এবং বিচারের কথা লেখা ছিল সেখানে উল্লেখ ছিল যে নারীরা পুরুষদের চাইতে বেশি জাদুবিদ্যা চর্চা করেন যেখানে নারীদেরকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যার বিচার ছিল মৃত্যুদণ্ড। এই বিষয়টি এখনো রয়েছে। ২০১১ সালে সৌদি আরবে জাদুবিদ্যায় জড়িত প্রমাণ হওয়ায় এক নারীকে শিরচ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তাঞ্জানিয়ায় প্রায় ৫০০ বয়স্ক নারীকে এই অভিযোগে হত্যা করা হয়।

সেক্সিজমের চরম পরিণতি হলো মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষ। যৌন হয়রানি, বাড়ির ভেতর সহিংসতা, নারীদের সামাজিক নানা কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাধা প্রদান এমনকি ভোট প্রদানে বাধাসহ নাগরিকত্ব থেকে বাদ দেয়া এগুলো মিসোজিনি অর্থাৎ নারীবিদ্বেষের উদাহরণ। এছাড়া নারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখার মতোও কিছু সাইকোলজিক্যাল টেকনিক খাটানো হয় এমন কি নারীরা যদি তাদের এমন নীচের অবস্থান মেনে নেয় তাহলে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হতো। এটা খুব স্পষ্ট যে এই ধরনের সহিংস ঘটনাগুলো নারীদের ক্ষেত্রে ঘটতে দেখা যায় এবং এখানে পুরুষই দায়ী এবং তারাই পুরো কর্মকাণ্ডের অংশ। ফলে এই ধরনের ঘৃণা বা দুর্ব্যবহার পুরুষদের জন্য দেখা যায় না। আবার নারীসুলভ আচরণ যদি পুরুষের হয় তাহলেও সে প্রত্যাখ্যাত হয়, এটিও মিসোজিনির অন্তর্ভুক্ত। LGBT গ্রুপের লোকরাও এ ধরনের বর্ণবিদ্বেষ ও কুসংস্কারের শিকার হয়। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী Misogyny শব্দটা এসেছে misos মানে hatred বা ঘৃণিত এবং gune মানে woman বা নারী থেকে, ১৯৭০ এর দশকে নারীবাদ আন্দোলনের দ্বিতীয় স্রোতের সময় মিসোজিনি শব্দটি প্রচারে আসে, এর পূর্বে এধরনের কর্মকাণ্ড চালু থাকলেও শব্দটা খুব কমই ব্যবহৃত হতো।

ব্রোঞ্জ যুগে প্রায় ৩ থেকে ৫হাজার বছর আগে একেশ্বরবাদ বা ঈশ্বরকে পুরুষ ভাবা হতো ইত্যাদি নানা ধর্মের সামাজিক কাঠামো মূলত নারীদের নিম্ন মর্যাদায় রাখার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। আবার যারা একেশ্বরবাদ ধর্ম অনুসরণ করেনি তাদেরও নারীবিদ্বেষ ছিল যেমন আমাজন অববাহিকা এবং মেলানেশিয়ার উপজাতি। নৃতাত্বিক David D. Gilmore মিসোজিনি নিয়ে বলেছিলেন যে, এটি পুরুষের ভেতরে থাকা অনুভুতির বিরোধপূর্ণ ভাবনা  যা তৈরি হয় সন্তান জন্মদানে নারীর উপর নিজেদের অস্তিত্ব বিষয়ক নির্ভরতা থেকে, পুরুষের দুর্বল সময়ে নারীর ক্ষমতা হরণের ভয় থেকে কিংবা নারীর প্রেম, ভালোবাসা, যত্ন এগুলোর উপর নির্ভরতা যা পুরুষকে দুর্বল অনুভব করায়, ফলে পুরুষ নারীবিদ্বেষ লালন করে। প্রাচীন তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় তখন নারীবিদ্বেষের চর্চা ছিল বেশ জোরালো ভাবেই। গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল লিখেছিলেন   এরিস্টোটল লিখেছিলেন- (Cynthia Freeland 1994 তথ্য অনুযায়ী)

“the courage of a man lies in commanding, a woman’s lies in obeying; that ‘matter yearns for form, as the female for the male and the ugly for the beautiful’; that women have fewer teeth than men; that a female is an incomplete male or ‘as it were, a deformity’: which contributes only matter and not form to the generation of offspring; that in general ‘a woman is perhaps an inferior being’; that female characters in a tragedy will be inappropriate if they are too brave or too clever”.

বক্তব্যের সারকথা – নারী পুরুষের চাইতে নিকৃষ্ট।

এবার প্রশ্ন আসতে পারে এমন যে অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তিদের ভাবনায় নারীর প্রতি হেয় ভাবাপন্ন হওয়া মানে আসলেই কি নারীর অবস্থান নিচে? যাদের এমন উক্তি আমরা দেখতে পাই তারা সবাই পুরুষ। বিজ্ঞানী, দার্শনিক যারাই নারীকে নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন সবাই পুরুষ, এবং নারী যাদের কাছে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারাও পুরুষ। সুতরাং বিষয়টা স্পষ্ট যে কারা বৈষম্য বা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং কারা সেখান থেকে লাভবান হচ্ছে।

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে, আমরা লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, নিপীড়ন এবং নারীবিদ্বেষের শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। নিম্ন আয়, অশিক্ষা সাথে ধর্মীয় আচার ব্যবস্থায় একটা মেয়ের সামাজিক অবস্থান আসলে কোথায় রয়েছে তা আমরা আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া প্রতিদিনের ঘটনা বিশ্লেষণে স্পষ্টই দেখতে পাই। ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে চাপিয়ে দেয়া লিঙ্গভিত্তিক দায়িত্ব একটি পরিবার খুব নিখুঁতভাবে পালন করে। মেয়ের প্রতি এমন বৈষম্য আমরা গ্রামে বেশি দেখতে পাই। লেখাপড়ায় অনাগ্রহ সৃষ্টি, বাল্যবিয়ে, যৌতুক, অল্পবয়সে বাচ্চা ধারণ এগুলো একটি কন্যা শিশুর ভবিতব্য, এভাবেই বেড়ে ওঠে তারা। এসবের নিয়মের বাইরে গেলেই নারীবিদ্বেষ ছড়িয়ে সমাজের কাছে তাকে অগ্রহণযোগ্য করে তোলার ব্যাপক চেষ্টা চলে। সমাজে নারীকে হেয় করার নানা শব্দ ব্যবহার হয়- “কুড়িতে বুড়ি”, কুলোটা, দুশ্চরিত্রা ইত্যাদি একই ভাবে একজন পুরুষের জন্য এমন কোনো শব্দ আসলে নেই বা আমরা দেখতে পাইনা। নারীকে যখন অনেক কিছুতে দমিয়ে রাখতে ব্যর্থ তখন নারীর প্রতি সহিংস হয়, নারীকে ভয় দেখাতে চায়, বেড়ে যায় ধর্ষণসহ আরও নানা নিপীড়ন, অত্যাচার। একসময় পুরুষের এহেন আচরণকে স্বাভাবিক ভেবেই আসছিল সবাই। পুরুষ ধর্ষণ করে কিন্তু সমাজ ব্যবস্থায় আবার নারীর সম্মানহানি হবার দায় নারীকেই নিতে হয়। যুগ যুগ ধরে নারীরা পুরুষ জন্ম দিয়েও সেই পুরুষের কাছেই হেনস্তা হবার দায় বয়ে নিয়ে চলে।

*ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর লিঙ্গের ‘দ্বিতীয় বা তৃতীয়করণে বিশ্বাসী নয়, কিন্তু প্রচলিত শব্দ বুঝবার বিকল্প না পেয়ে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ ব্যবহার করা হলো ইনভার্টেড কমার ভেতরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *