আত্মবিশ্বাসী হলেই সফলতা পাবেন; কীভাবে হবেন?
মেহেরুন নূর রহমান।। আমরা আমাদের লেখায় মেয়েদেরকে আত্মবিশ্বাসী হবার কথা বলি। শুধু মেয়ে বলে নয়, যেকোনো কারো আত্মবিশ্বাসী হওয়া দরকার জীবনে সাফল্যের জন্য। শুধু সাফল্য নয়, আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আত্মবিশ্বাসের দরকার। মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। এটি একটি অর্জন। চেষ্টা করলে যে কেউ নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আত্মবিশ্বাসী হওয়ার ক্ষেত্রে শৈশব একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আপনার পারিবারিক শিক্ষা, আপনার স্কুল, আপনার চারপাশ, বেড়ে ওঠা ইত্যাদি আপনি আত্মবিশ্বাসী হবেন কি হবেন না তার ওপর প্রভাব ফেলে। বলাই বাহুল্য আমাদের দেশের মেয়েরা যেভাবে বড় হয়ে ওঠে, সেখানে পরিবার বলেন, পরিবারের বাইরে বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটি মেয়ে শিশু বা কিশোরীর আত্মবিশ্বাসী/ স্বাবলম্বী/ আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে ওঠার জন্য সে সাপোর্ট দরকার তারা সেটা পায়না। আমার লেখাটা তাদের জন্য যারা নিজেকে বদলাতে চান। যারা নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে চায়। যারা পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়, যারা জীবনে সফলতা চায়। চলুন বোঝার চেষ্টা করি এটা সম্ভব কি সম্ভব নয়।
সবচেয়ে প্রথম নিজেকে পর্যালোচনা করুন। বুঝতে চেষ্টা করুন কোন কোন জায়গায় আপনি আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছেন। বড় হবার পর একজন মানুষ, ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন সে কিন্তু নিজেই বুঝতে পারে সে আত্মবিশ্বাসী কি বিশ্বাসী না। আত্মবিশ্বাসী না হলে আপনি নিজেকে ঠিকমত প্রকাশ করতে পারবেন না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন। যেকোনো সমস্যায় ঘাবড়ে যাবেন। সারাক্ষণ কারো না কারো সহায়তা চাইবেন এবং অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবেন। আমাদের দেশের নারীদের একটি বড় অংশ যে তাদের স্বামী, ভাই বা বাবার উপর প্রচন্ডভাবে নির্ভরশীল, তার বড় কারণ হল আত্মবিশ্বাসের অভাব। আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী হন তাহলে পাহাড়ও ডিঙোতে বলতে পারবেন, সাহসের সাথে যে কোন প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়াতে পারবেন। সুতরাং নিজের প্রতি সৎ থেকে নিজের দুর্বলতাগুলোকে সনাক্ত করুন। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে গেলে, যেটা আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে সেটা হলো – চেষ্টা করলে আপনি নিজেকে বদলাতে পারবেন। নিজেকে বদলাবার আকুতি বা ইচ্ছা আপনার মধ্যে থাকতে হবে। বিশ্বাস করতে হবে, চেষ্টা করলে আপনি নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার চারপাশের আত্মবিশ্বাসী মানুষদের অবজার্ভ করেন, তাহলে কিন্তু তাদের দেখেই সেটা বুঝতে পারবেন, এমনকি তারা তাদের মুখ খোলার আগেই। আত্মবিশ্বাসের একটি শারীরিক ভাষা / বডি- ল্যাঙ্গুয়েজ আছে। সেই ভাষা আয়ত্ত করা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার প্রথম পদক্ষেপ। মানুষ তার হাঁটাচলায়, পোশাক-আশাকে, কথা বলার ভঙ্গিতে যেভাবে নিজেকে পরিবেশন করে বা যেভাবে নিজেকে বহন বা ক্যারি করেন সেটা তার ব্যক্তিত্ব, স্বকীয়তা, আত্মবিশ্বাস ইত্যাদিকে রিপ্রেজেন্ট করে। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন আমি যখন পোশাক-আশাক বলছি তখন কিন্তু এটা বলছি না যে আত্মবিশ্বাসী হতে হলে আপনাকে খুব দামি পোশাক পড়তে হবে বা আপনাকে পলিশড ভাষায় কথা বলতে হবে। যেকোনো সামাজিক অবস্থানে থেকে আপনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন।
হাঁটুন সোজা হয়ে। একজন মানুষ শিরদাঁড়া সোজা করে হেঁটে আসছে আর একজন কুঁজো হয়ে, যেন নিজেকে খানিকটা আড়াল করে করতে চাইছে এই ভঙ্গিতে – আপনার কাকে আত্মবিশ্বাসী মনে হবে? যখন কারো সঙ্গে কথা বলবেন, স্পষ্ট করে আপনার বক্তব্য উপস্থাপনের চেষ্টা করবেন। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বললে সামনের মানুষটির সাথে এক ধরনের সহজ যোগাযোগ তৈরি হয় যা আত্মবিশ্বাসের পরিচয় বহন করে।
আত্মবিশ্বাসী হবার একটি বড় উপাদান হলো নিজের ভেতরে পজিটিভিটি বা ইতিবাচকতাকে নিয়ে আসা। নেতিবাচক চিন্তা থেকে যতটুকু পারেন নিজেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করুন। নিজের আত্মাকে বা ইনারসেল্ফকে শান্তি দিন পজিটিভিটি’র মাধ্যমে। মুক্ত করুন নিজেকে দ্বিধা আর “আমি পারবো না” এই সন্দেহবাতিকগ্রস্থতা থেকে। মুক্ত করুন নিজেকে অন্যের দোষ ধরা থেকে। জেনে রাখুন ছিদ্রান্বেষণে রক্তচাপ বাড়ে।
আপনি আপনার ফোকাস পরিবর্তন করুন। কোনো একটি সমস্যার মুখোমুখি হলে শুধু আক্ষেপ না করে এবং সমস্যাটির কারণে কী কী অসুবিধা হতে পারে সেসবের কথা না ভেবে কী করে এই সমস্যা থেকে বের হওয়া যায় সে ব্যাপারে আলোকপাত করুন এবং পদক্ষেপ নিন। মনে করুন আপনার সন্তানের হাত কেটে গেছে। সেটা দেখে আপনার ভয় হবে বা কান্না পাবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে হাত কেটে যাওয়ার কারণে আপনার সন্তান ভাত কী করে খাবে কিংবা কী করে লিখবে, এসব ভেবে হায় হায় না করে চট করে ভাবুন কী করে আপনার সন্তানকে ব্যথামুক্ত করা যায়। ভাবুন এই মুহূর্তে আপনার করণীয় বা কর্তব্য কি। ভাবুন কত দ্রুত আপনি তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারবেন কিংবা ঘরে রাখা ব্যান্ডেজ দিয়ে তার হাত ব্যান্ডেজ করে দিতে পারবেন।
কিংবা ধরুন আপনার অফিসে কোনো একটি প্রজেক্টের জন্য আপনাকে একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে হবে এবং সিনিয়র ম্যানেজমেন্টকে সেটা প্রেজেন্ট করতে হবে। অনেক সময় এবং মনোযোগ দিয়ে আপনি প্রেজেন্টেশনটা তৈরি করলেন। কিন্তু সারাক্ষণ ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে আপনি ঠিকমত ব্যাখ্যা করতে পারবেন তো? আপনার সহকর্মী বা বসদের কী প্রতিক্রিয়া হবে? ইত্যাদি ইত্যাদি দুশ্চিন্তায় আপনি নার্ভাস হয়ে পড়ছেন। আপনি ভাল করে জানেন নার্ভাস অবস্থায় কিছু উপস্থাপন করলে সেটা ভালো না হবারই কথা। পজিটিভিটি নিয়ে আসুন নিজের মধ্যে। আপনার ভিতরে যে নেগেটিভ চিন্তাগুলো হচ্ছে সেটগুলোকে উপেক্ষা করুন। বিশ্বাস করুন আপনি ভালো একটি কাজ করেছেন। নিজেকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করুন বসদের সম্ভব্য সকল প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য। কয়েকবার রিহার্সেল দিন। দেখবেন আপনি আর ভয় পাচ্ছেন না। উপরের দুটো উদাহরণ দেবার কারণ হলো কোনো একটি কঠিন পরিস্থিতিতে শুধু নেতিবাচক চিন্তা না করে কী করে নিজেকে একটি ইতিবাচক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যায়, তা বোঝানো।
আত্মবিশ্বাসী হওয়ার প্রথম শর্ত হলো নিজেকে ভালোবাসা। নারীদের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলো তারা নিজেকে ভালবাসতে জানে না। সারাক্ষণ আপোষ করতে প্রস্তুত। সংসারের প্রয়োজনে তাদের স্বপ্নগুলোরই সবার প্রথম বলি হয়। অন্যদের দাবি মেটাতে মেটাতে, সমাজের চোখে পারফেক্ট হতে চাইবার বিশাল বাসনায় নারীরা নিজেকে ভালোবাসতে ভুলে যায়।
অনেকসময় আমরা আমাদের গায়ের রং, চেহারা, উচ্চতা, অন্যদের চোখে আমাকে ভালো লাগলো কি লাগলো না, এসব নিয়ে এত বেশি সচেতন থাকি যে নিজেকেই নিজে ছোট করি এবং ভালোবাসিনা। আমাদের বেড়ে ওঠা, আমাদের সমাজ, আমাদের পরিবার, আমাদের মধ্যে এমন অনেক বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেয়, সেই বিশ্বাসের নিরিখে আমরা নিজেকে যাচাই করতে থাকি এবং সেল্ফ লাভ হারিয়ে যায়। নিজেকে ভালোবাসা একটি চর্চার ব্যাপার। এটি শুরু করুন।
নিজেকে ভালোবাসার অপরিহার্য শর্ত হলো নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছাকে গুরত্ব দেয়া। ভুলে যান আপনাকে নিয়ে কে কী ভাবছে। নিজের মত করে নিজেকে প্রকাশ করুন। নিজেকে নিয়ে ভাবুন। আপনি জীবনে কী চান, কোন জিনিসটি আপনাকে আনন্দ দেয় কোন জিনিসটি আপনাকে বিরক্ত করে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। বাইরে আপনি যেভবে নিজেকে তুলে ধরেন তা কিন্তু আপনার ভেতরের চিন্তা, উপলব্ধি এবং বোধেরই বহিঃপ্রকাশ।
আমাদের সকলেরই কিছু মানবিক চাহিদা আছে। আমরা আমাদের জীবনে নিশ্চয়তা চাই। আমরা চাই আমাদের বেঁচে থাকাটা সিগনিফিকেন্ট বা তাৎপর্যপূর্ণ হোক। আমরা আমাদের জীবনে ডাইভারসিটি বা বৈচিত্র খুঁজি। আমরা ভালোবাসা চাই, মায়া চাই, বন্ধুত্ব চাই, যত্ন চাই। আমরা চাই জীবনে উন্নতি করতে এবং সফল হতে, সেইসাথে পরিবার ও সমাজে কন্ট্রিবিউশন বা অবদান রাখতে। এই সকল চাহিদা আমাদের জীবনে যেকোনো সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। আপনি বুঝতে চেষ্টা করুন এই মানবিক চাহিদাগুলির মধ্যে কোনগুলো আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই অনুযায়ী নিজের কাজ এবং চিন্তাকে প্রবাহিত করুন। আপনি হয়তো নিজেই জানেন না আপনি বৈচিত্র কত ভালোবাসেন, কিন্তু কাজ করছেন এমন একটি জায়গায় যেটা হয়তো আপনার জীবনে নিশ্চয়তা বা সিকিউরিটি দিচ্ছে কিন্তু একঘেয়ে। এরকম একটি পরিবেশে কাজ করলে আপনি আত্মবিশ্বাসী হতে পারবেন না কখনোই। নিজের সাথে কথা বলুন। নিজের সাথে কথা বলার মানে হচ্ছে নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকে যে অনুভূতি সেগুলোকে বোঝার চেষ্টা করা। আপনার এই মূল্যবান অনুভূতিগুলো, যেগুলোকে আপনি গুরুত্ব দেন না, তারাই কিন্তু আপনাকে নির্মাণ করে। নির্মাণ করে আপনার ব্যক্তিত্ব, স্বকীয়তা এবং আত্মবিশ্বাস।
জোর করে অন্যকে খুশি করতে নিজের উপর কিছু চাপিয়ে দেবেন না। চেষ্টা করুন বুঝতে কোন জিনিসটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন জিনিসটি নয়। আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে নিজের ভেতরের শক্তি সম্বন্ধে অবহিত হওয়া। বুঝতে পারা আপনি কী চান, আপনার জীবনের লক্ষ্য কী এবং সেটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা। সেইসাথে আত্মশক্তির উপর বিশ্বাস রাখা যে চেষ্টা করলে আমি সেই স্বপ্নপূরণ করতে পারব। লক্ষ্যহীন, স্বপ্নহীন মানুষ কখনো আত্মবিশ্বাসী হতে পারে না। আপনি যদি বুঝতে পারেন আপনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো কি, কোন জিনিসগুলো আপনি অর্জন করতে চান, এবং এই ব্যাপারে আপনার চিন্তা যদি পরিষ্কার থাকে তাহলে দেখবেন আপনি অবশ্যই আপনার নিজের পছন্দের জিনিসগুলো পাবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যেহেতু আপনার চেষ্টা থাকবে সৎ, সেহেতু এটা আপনার কাজকর্মে প্রতিফলিত হবে এবং আপনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাবেন। অনিচ্ছুক মনে কোন কিছু করলে তার প্রতিফলন কাজের মধ্যে যেমনি পড়ে, তেমনি পড়ে আপনার যাপিত জীবনে এবং আত্মবিশ্বাসে।
জীবনে কৃতজ্ঞতাবোধ নিয়ে আসুন, সৌজন্যবোধ নিয়ে আসুন, সৌন্দর্যবোধ নিয়ে আসুন। কৃতজ্ঞতাবোধ করুন যে আপনি একটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছেন। আপনার ভেতর যদি কৃতজ্ঞতাবোধ থাকে তাহলে অনেক না পাওয়া, হতাশা, ভয় থেকে আপনি মুক্ত হতে পারবেন। নিজেকে সুখি রাখার চেষ্টা করুন। আপনি যদি অসুখি থাকেন, হাতাশাগ্রস্থ থাকেন, তবে তার প্রভাব আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, মুখের অভিব্যক্তি, কথা এবং কাজে পড়বে এবং আপনাকে আত্মবিশ্বাসহীন করে তুলবে।
সাহসী এবং পরিশ্রমী হোন। কোনো সমস্যায় পড়লে, অন্য কেউ এসে আপনাকে উদ্ধার করে দিয়ে যাবে এ ভাবনা থেকে বের হয়ে আসুন। নিজেই উদ্যোগ নিন নিজের সমস্যায় সমাধানের। কঠিন লাগতে পারে, বা অসম্ভব মনে হতে পারে কিন্তু বিশ্বাস করুন আপনার সমস্যা আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ সমাধান করতে পারবে না। যেকোনো সমস্যায় নিজেকে ভিকটিম বানানো যেমন কাজের কথা না তেমনি নিজেকে অহেতুক আত্মসমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। বর্তমানে বাস করুন। অতীতে আপনি কী করতে পারেননি, কোথায় ব্যর্থ হয়েছেন তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন কিন্ত তা নিয়ে পড়ে থাকবেন না, বরং এখন আপনার কী দরকার, কী করলে এখন আপনি আপনার স্বপ্নকে পূরণ করতে পারবেন সেটি নিয়ে ভাবুন এবং সে ব্যাপারে ফোকাসড হন। আত্ম-সন্দেহ, দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলুন। ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করুন।
সদয় হন। মানুষকে সাহায্য করুন। নিষ্ঠুর আচরণ থেকে বিরত থাকুন। আপনার কারণে কেউ একজন বড় কোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে এরকম ঘটনা আপনার আত্মবিশ্বাসকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে। রেগে, বকে, কুৎসিত আচরণ করে যারা “আমি কি হনুরে” এটা প্রকাশ করতে চায়, তারা আসলে আত্মবিশ্বাসহীনতাতেই ভুগছে এবং হম্বিতম্বি করে তারা সেটাকে ঢাকতে চায়।
নিজের ভেতর নতুন নতুন বিষয়ে জানার আগ্রহ তৈরি করুন। নিজের গণ্ডির বাইরে নতুন কিছু শুনুন, জানুন, পড়ুন। আপনি যদি ওয়েল ইনফরমড হন তাহলে দেখবেন কত কনফিডেন্টলি আপনি কারো সাথে বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলতে পারছেন।
অনেকেই মনে করে থাকেন সফলরা আত্মবিশ্বাসী হন। কিন্তু আসল কথা হলো আপনি আত্মবিশ্বাসী হলেই সফলতা পাবেন। যে অবস্থানেই থাকুন না কেন, আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী হন, নিজের উপর আস্থাশীল হন, তাহলে আপনার স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন। আর সৎ ইচ্ছা, সৎ চিন্তা, পরিশ্রম, নিজের প্রতি ভালোবাসা, সহৃদয়তা, ইতিবাচক মানসিকতা, বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ এবং প্রকাশভঙ্গি, পড়াশোনা, সৌন্দর্যবোধ, কৃতজ্ঞতাবোধ, আত্মশক্তি এসবের সমন্বয়ে আপনি হয়ে উঠতে পারে একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ, যে নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে সক্ষম এবং আত্মনির্ভরশীল। যে অন্যের ছায়ায় না থেকে বরং অন্যদের ছায়া দেয়।
[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত কলাম লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]