November 23, 2024
ফিচার ৩ফিটনেস ও সুস্থতা

নারীর ওভুল্যশান সময়- অজানা কষ্টের না জানা কারণ

ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। পিরিয়ড নারীর জীবনে একটি স্বাভাবিক তবে অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা, প্রতি মাসেই যার মুখোমুখি তাকে হতে হয়। এই পিরিয়ড ছাড়াও নারীকে প্রতি মাসে আরেকটা অস্বস্তিকর সময় পাড়ি দিতে হয়, যার কথা কখনো আলোচনাও হয় না। বেশিরভাগ মেয়ে বিষয়টা ঠিকমত জানেওি না। অথচ এ সময় অস্বস্তি, ব্যাথা, বেদনা, কষ্ট সবকিছুর ভেতর দিয়েই সে যায়। কিন্তু জানার অভাবে তারা বুঝতেও পারে না, কেন তার এত কষ্ট হচ্ছে!

সেটা কোন সময়?

সেটা হল তার ওভুল্যশান টাইম। বাংলায় একে বলা যেতে পারে- ডিম্বানু নির্গমনের সময়।

ওভুল্যশান হয় সাধারণত পিরিয়ড হবার সপ্তাহ দুই আগে। মেয়েদের শরীরে ইউটিরাস ছাড়াও দুটি ওভারি থাকে। এই ওভারি দুটো থেকে পরিপক্ক একটা ডিম্বানু বের হয়। এই ডিম্বানুই স্পার্মের সংস্পর্শে আসলে নিষিক্ত হয়ে প্রেগনেন্সি ঘটায়। মাসের একটা নির্দিষ্ট সময়ে, সাইকেল অনুযায়ী ডিম্বানু বের হয় ওভারি থেকে, তারপর নিষিক্ত হওয়ার জন্য Fallopian Tube এ চলে যায়। এই ডিম্বানু বের হওয়ার সময়টিই ওভুল্যশান টাইম।

পিরিয়ড হবার সপ্তা দুই আগে ওভুল্যশান ঘটে। এ সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানের অভাবে এবং বাইরে এর লক্ষণের তেমন কোন প্রকাশ নেই বলে মেয়েরা এটা সেভাবে খেয়াল করে না।  অথচ প্রেগনেন্সির জন্য এই সময়টা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওভুল্যশানের পর থেকেই প্রেগনেন্সির চান্স তৈরি হয়।

তবে সমস্যা হল, ওভুল্যশানের সময়টাতেও মেয়েরা অনেকটা পিরিয়ডের সময়ের মত নানাভাবে কষ্ট পায়। কিন্তু যেহেতু সময়টা বেশিরভাগ মেয়ের মাথাতেই থাকে না, তাই শরীরিক কষ্টের কারণ সে উদঘাটন করতে পারে না। ওভুল্যশানের সময় এর নানা লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে অন্যতম হল ব্যথা। দুই ওভারির কোন একটা থেকে ডিম্বানু বের হয়, ফলে যে কোন এক দিকে, তল পেটের বাম অথবা ডান দিকে এবং হিপবোনে ব্যাথা হয় এ সময়। অনেকটা ব্যাক পেইনের মত। অনেকটা পিরিয়ডের সময়ের মত অস্বস্তি হতে থাকে ব্যথায়। এই ব্যাথা থাকে সাধারণত আটচল্লিশ ঘণ্টা। আটচল্লিশ ঘণ্টার বেশি এই ব্যথাবোধ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত। প্রতি পাঁচজন মেয়ের একজন ওভুল্যশানের সময় এ ধরণের ব্যথায় আক্রান্ত হয়। এ সময় হালকা ব্লিডিংও হতে পারে, যা দেখতে ব্রাউন ডিসচার্জের মত লাগে।

ডাক্তাররা বলেন, এ সময়টা প্রতিটা মেয়ের উচিত নিজের যত্ন নেয়া। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্রাম। একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে না থেকে সুযোগ পেলেই একটু শুয়ে বিশ্রাম নেয়া বা ঘুমানো উচিত। হালকা গরম সেক নেয়া যেতে পারে তলপেটে ও হিপ জয়েন্টে। আর ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেয়া উচিত, বিশেষ করে ব্যথা যদি বাড়ে আর সেটা যদি দু’দিনের বেশি থাকে।

পিরিয়ডের তারিখের সাথে সাথে ওভুল্যশানের ডেটটাও সব মেয়ের মাথায় রাখা উচিত। এ সময়টা বাড়ির লোকদেরও জানা দরকার। কারণ এ সময় মুড সুইং হতে পারে। জ্বর জ্বর বা হালকা গা গরম হতে পারে। ফলে তারা যেন মেয়ের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকেন।

আজকাল পিরিয়ডের টাইম ক্যালকুলেট করার জন্য নানা রকম মোবাইল অ্যাপ পাওয়া যায়। সেগুলো ডাউনলোড করে নিজের পিরিয়ড ট্র্যাক করা উচিত। এইসব অ্যাপ ওভুল্যশানের সময়টিও ঠিকঠাক জানিয়ে দেয়।