November 21, 2024
অনুবাদসাহিত্য

বিদ্রোহী মেয়েদের জন্য শুভরাত্রির গল্প: আদা লাভলেস

Good night stories for rebel girls বইটির লেখক এলেনা ফাভিলি ও ফ্রানসেসকা ক্যাভালো। প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত পেঙ্গুইন প্রকাশনা সংস্থা। মূলত কিশোর বয়সীদের লক্ষ্য করে লেখা এই বইটি। বিশ্বজুড়ে যে মেয়েরা ইতিহাসের নানা সময়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে বা রেখে চলেছে, তাদের সম্পর্কে ছোট ছোট গল্পের মতো করে লেখা। সন তারিখ তথ্য কম দিয়ে নাটকীয় করে তোলার চেষ্টা আছে, যাতে পড়ে মজা পাওয়া যায়। 

প্রতিটি গল্পের সঙ্গে একটা ছবি, সেটাও বেশিরভাগ নারী শিল্পীদের আঁকা।  

‘বিদ্রোহী মেয়েদের জন্য শুভরাত্রির গল্প’ নামে বইটি ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করেছেন মেহেদী হাসান, ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরের পাঠকদের জন্য

 

আদা লাভলেস

ইংরেজ গণিতবিদ
জন্ম: ১০ ডিসেম্বর ১৮১৫; মৃত্যু: ২৭ নভেম্বর ১৮৫২

আদা লাভলেস মেশিন ভালোবাসতো, পাখির মতো আকাশে উড়তে চাইতো।

সে পড়েছিল পাখিবিদ্যা। কীভাবে পাখার আকারের সঙ্গে শরীরের ওজনের  সামঞ্জস্য রেখে পাখি উড়ে যায় – এ ছিল তার পড়ার বিষয়।

ওড়ার স্বপ্নে বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে সে গবেষণা করতে লাগলো এবং কয়েকটা ডিজাইনও দাঁড় করাতে সক্ষম হলো।

আদা কখনো পাখির মতো উড়তে পারে নি।  তাতে কী? তার হাতে সৃষ্টি হলো একটি অনন্য গ্রন্থ, যার পাতায় পাতায় ছড়িয়ে ছিল তার কল্পনায় আঁকা ছবি, তার গবেষণার সব তথ্য-উপাত্ত ও ফলাফল। এ বইয়ের নামটাও দিয়েছিল সে দারুণ, ‘উড়াল-বিদ্যা’ ( Flyology)।

এক রাতে আদা বল নাচে গেল। সেখানে তার সাথে দেখা হয়ে গেলো রুক্ষ স্বভাবের বৃদ্ধ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজের। আদা নিজেই ছিল দুর্দান্ত গণিতবিদ। খুব স্বাভাবিক কারণে দ্রুতই তারা ভালো বন্ধু হয়ে গেল।  চার্লস আদাকে নিমন্ত্রণ করলো তার আবিষ্কার করা একটি আশ্চর্য মেশিন দেখানোর জন্য।  সে এটার নাম দিয়েছিলো ‘ডিফারেন্স ইঞ্জিন’। এ যন্ত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেকোনো সংখ্যার যোগ অথবা বিয়োগ করতে পারে। এর আগে কারো দ্বারা এভাবে যোগ-বিয়োগ করার নজির ছিল না।

মেশিনটা আদাকে মুগ্ধ করলো। সে বললো, ‘কেমন হবে আমরা যদি এমন একটি মেশিন বানিয়ে ফেলি,  যা আরও জটিল সব অঙ্কের সমাধান দেবে? ‘উচ্ছ্বসিত আদা ব্যাবেজের সঙ্গে তেমন একটা মেশিন আবিষ্কারে নেমে পড়লো। মেশিনটি হলো বেশ বড় এবং এটি চালানোর জন্য দরকার পড়লো একটি বিশাল আকারের বাস্পীয় ইঞ্জিনের।

আদা এরপর থামতে চাইলো না। সে বললো, ‘কেমন হবে যদি এ-মেশিনটি গান শোনায় এবং লেখা দেখায় কিংবা সংখ্যাগুলো চোখের সামনে মেলে ধরে?’ আদা আসলে আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কারের বহু আগেই একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটারের বিবরণ দিয়েছিল।

ইতিহাসে আদা’র নাম লেখা আছে, কারণ আদা পৃথিবীর  প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামটির লেখক।

সে বলতো,  “সময় একদিন বলবে, আমার মাথাটা নশ্বর কিছু নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *