লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখুন
শারমিন শামস্।। আজ ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরের প্রথম বর্ষপূর্তি। এটা একটা আশা জাগানিয়া দিন। এমন এক নারীবিদ্বেষী সমাজে একটি সম্পূর্ণ নারীবাদী অনলাইন পত্রিকা আস্ত একটা বছর টিকে গেল, ব্যাপারটা আসলেই দারুন। তাহলে কি ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর এর পাঠক, দর্শকদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে নারীবাদ মানে নারীকে বেশি সুবিধা দিয়ে পুরুষের প্রতি বিদ্বেষ ধারণ করা নয়! ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর কি তবে নারীবাদের প্রকৃত অর্থ ও সংজ্ঞাটিকে তুলে ধরতে পেরেছে সকলের সামনে? ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর কি তবে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার কথা বলতে পেরেছে? সবার আস্থার জায়গাটি ছুঁতে পেরেছে?
আমি বিশ্বাস করি, ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর এক্ষেত্রে সফল। ফেমিনিজম বা নারীবাদ নিয়ে সমাজের যে তীব্র ভ্রুকুটি, যে অনর্থক ভীষণ ঘৃণা বিরাজমান, তার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে কাজ শুরু করেছিল ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর। নারীবাদ ও নারীবাদীদের প্রতি যে বিভ্রান্তি, ভুল ধারণা, অপপ্রচার ইত্যাদি, সেসব মাথায় রেখেই পত্রিকাটি শুরু করেছিলাম আমরা। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এসব নেতিবাচকতা দূর করে একটি শান্তিময় সহাবস্থান তৈরি করে বহু মানুষকে নারীবাদের সুশীতল ছায়াতলে নিয়ে আসা। আজ এক বছর পর বলতে পারি, এ কাজে আমরা ব্যর্থ তো হইনি, বরং সফলতার হাসিমুখ একটু একটু করে দেখতে শুরু করেছি। যারা একসময় কিছু না জেনে, না বুঝে, না পড়েই নারীবাদ নিয়ে অকথ্য বক্তব্য দিতেন, তাদের অনেকেই আজ অনেকটা সহনশীল ভূমিকায় আসতে পেরেছেন। নারীবাদ নিয়ে একের পর এক গবেষণামূলক, বিশ্লেষণধর্মী ভালো লেখা, কন্টেন্ট প্রকাশ ও প্রচারই এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। এর পাশাপাশি সব শ্রেণি, বয়স, পেশা ও নেশার পাঠক এবং লেখকের কাছে পৌঁছুনোর যে চ্যালেঞ্জ আমরা হাতে নিয়েছিলাম, সেটিও যথাসম্ভব সুষ্ঠুভাবে করেছি, এখনও করে চলেছি।
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর মাত্র এক বছর শেষ করেছে। কিন্তু যে ভালোবাসা আর শুভকামনা তার ঝুলিতে জমা হয়েছে তা হাজার বছরের সমান। এই ভালোবাসাই আমাদের শক্তি ও প্রেরণা। এখনও যেতে হবে বহু বহু দূর… পুরোটা পথে এই ভালোবাসাই আমাদের একমাত্র অবলম্বন।
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরের জন্মদিনে এর লেখক, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রইলো অশেষ কৃতজ্ঞতা। আপনারা ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। লিঙ্গবৈষম্য ও পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখুন।
ভালোবাসা।