May 16, 2024
ফিচার ৩ফিটনেস ও সুস্থতা

হরমোনের কারণে পুরুষেরও হয় চরম মুড সুইং

ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক।। এখন আমরা অনেকেই জানি যে, মেনোপজ শুধু নারীরই হয়- এটা ঠিক নয়, পুরুষেরও মেনোপজ হয়। পুরুষের মেনোপজকে বলে অ্যান্ড্রোপজ। চল্লিশের পর পুরুষের শরীরে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে খিটখিটে মেজাজ, অল্পতেই রাগ, মুড সুইং ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষ এই সমস্যায় ভোগেন। একে ইরিটেবল মেল সিন্ড্রোম বলে।

ইরিটেবল মেল সিন্ড্রোম বা আইএমএস এর জন্য দায়ী উচ্চমাত্রার করটিসোল এবং টেস্টোস্টেরন এর কম মাত্রা। এ দুটির কারণে কিছু পুরুষ বদরাগী হয়ে যান, অল্পতেই রাগ করেন; আবার কিছু পুরুষ ভোগেন বিষন্নতায়, কারণ তারা ভেতরের আবেগ অনুভূতিগুলো নিজের ভেতরে আটকে রাখেন।

ইরিটেবল মেল সিন্ড্রোম এর কারণে পুরুষের ভেতরে যেসব উপসর্গ দেখা যায় সেগুলো হলো-

রাগ

ধৈর্যহীনতা

কথায় কথায় ব্যঙ্গ করার অভ্যাস

দুশ্চিন্তা

অস্থিরতা

শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব

অকারণে তর্ক করার চেষ্টা

ভালবাসাপূর্ণ মনোভাবের অভাব

হতাশ

হাল ছাড়ার মনোভাব

নিজেকে সবকিছু থেকে সরিয়ে নেয়ার মনোভাব

খুব বেশি চাই চাই স্বভাব

নিজের দোষ স্বীকার না করে সবসময় নিজের পক্ষ নিয়ে তর্ক করার স্বভাব

দুঃখী

অতৃপ্ত মন, ইত্যাদি।

সাধারণত নিম্নমাত্রার টেস্টোস্টেরন অথবা অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে ইরিটেবল মেল সিন্ড্রোম হয়। আবার উচ্চমাত্রার এস্ট্রোজেনও এটির জন্য দায়ী। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অ্যান্ড্রোপজের কারণে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রার কম বেশি হয়। এর ফলে পুরুষের অ্যান্ড্রোপজ সংক্রান্ত মুড সুইং এর লক্ষণ দেখা দেয় এবং কারু কারু ওজন বেড়ে যায়। হরমোনের এই তারতম্য পুরুষকে বানায় খিটখিটে স্বভাবের। আবার কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলেও এ ধরণের মুড সুইং এর সমস্যা দেখা দেয়।

চিকিৎসা

মুড সুইংয়ে ভোগা পুরুষের ভেতরে সাধারণত নিজের এই সমস্যাকে অস্বীকার করার প্রবণতা দেখা দেয়। তারা নিজের ভেতরে ছাড়া দুনিয়ার সবার মধ্যে সমস্যা দেখতে পায়। নিজের ভেতরে গড়ে ওঠা সামাজিক পৌরুষের ধারণাও তাকে এ ধরণের আচরণ করতে উৎসাহিত করে, নিজের সমস্যাকে তাই স্বীকার করাটাকে সে অপুরুষোচিত মনে করে। পুরুষ মনে করে, হরমোনাল সমস্যা শুধু নারীরই হয়। পুরুষের হয় না। এটি চরম একটি ভুল ধারণা। কিন্তু সঠিক হলো, নিজের ভেতরের সমস্যাটাকে বুঝতে হবে, গুরুত্ব দিতে হবে এবং মনে রাখতে হবে, এ ধরণের সমস্যা হওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, হরমোনের অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে। Bioidentical hormone therapy এর সাথে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার, ব্যায়াম এবং জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

আপনার সুস্থতা আপনার পরিবার ও আশেপাশের সবার সুস্থতার জন্যও জরুরি। তাই সুস্থ থাকুন, জীবনকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনুন।