রাষ্ট্রের জবানে ধর্ষিতা
সৈকত আমীন ।।
কিন্তু আপনি যদি হন বুদ্ধিমান-
ছেড়ে দিন তাকে সুধী সমাজের হাতে
ধর্ষণ শেষে হত্যা করবেন না, বাঁচতে দিন তাকে।
আইন যদিও অন্ধ তবু
সমাজ জানে কী করে হত্যা করতে হয়,
রাষ্ট্র’ই ধর্ষককে মন্ত্রী বানায়
আর ধর্ষিতার যেহেতু কোনো দেশ মেলে না
অথবা পৃথিবীর সকল নারীর ভাষা এক
এবং বিচার বিভাগও জানে
ন্যায় বিচার মাত্রই একটা মিথ,
আদালতের সকল ধারা কেবলই ক্ষমতার কল্যাণে।
বরং উকিল তাকে পুনরায় পোশাক খুলতে বলুক
জিপার খুলে পুরুষ দণ্ডে পুনরায় আপনিও রাখুন হাত
পুনর্বার ধর্ষণের প্রস্তুতি চলুক এই বলে-
বিচার চাহিয়া লজ্জা দেবেন না,
নারী হয়ে জন্মানোর পাপের দায় রাষ্ট্র নেবেন না।
আপনার সমাজ এমনিও তাকে বেঁচে থাকতে দেবেন না।
দূরে, আজও তনুর মা বুক চাপড়ে কাঁদেন একই করুণ সুরে
আয়শা’কে নিয়ে হজরত আলী গিয়েছেন ট্রেনের তলে
মেয়ে হয়ে জন্মানোর আজন্ম পাপ ধুয়ে
আজও ভেসে ওঠে কত ধর্ষিতার
কত বেওয়ারিশ দেহ কত লাশ কত নদীর জলে।
তবু ধর্ষণের পর বাঁচতে দিন তাকে,
ধর্ম যেহেতু নেবে না, ভাই আর বন্ধুও নেবে না মেনে
ধর্ষিত হবার অপরাধের দায় শুধু মৃত্যুই বাকি থাকে।
ধানমন্ডি বত্রিশের বাড়িটাও একদিন জাদুঘর হয়ে যায়,
ধর্ষিতার ঠিকানা হয় না কখনওই।