পারমিতা
আরেফিন আরিফ ।।
২৭ বছরের অনেক মুখ পেছনে ফেলে খুঁজে নিতে হয় পারমিতাকে। অফিসের হিমঘরে সবাইকে অবাক করে পারমিতা খামচে ধরে আমার শার্ট, চিনতে পারো নাই? আমি পারমিতা! হঠাৎ থমকে যাই।
সেই রাধাচূড়ার নিচে বাঁশের খুটি ধরে অপেক্ষা করতাম, কখন তুমি ফিরবে?
পারমিতা ভালোবাসত আমাকে?
কখনো বলেনি,
কিংবা পারেনি,
অথবা হয়ে ওঠেনি।
পুরু চশমার লেন্স ভেদ করে তাকিয়ে থাকে।
এই প্রথম, এত্ত কাছে,পারমিতার ভালোবাসা, এই আমি। কফির পোড়া গন্ধ, আমি তাকাই পারমিতার দিকে।
গাঁয়ের মেঠোপথের মত সিঁথি বুঝিয়ে দেয়, সময় ছুঁয়েছে। পারমিতা দাঁড়িয়ে আছে ২৭ বছর পেছনে। প্রশ্নবিদ্ধ চোখ।আমি তাকাই পারমিতার দিকে,তবে কি এখনও একা পারমিতা? শেষ বিকেলের বিষন্ন রোদের মতোই ক্লান্ত?
আমি তোমার স্বপ্নের সাথে হাঁটতে পারিনি, তুমিও তো সাহসী হওনি কখনও।
সেই বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে ডিঙি নৌকো
বইয়ের ভাঁজে লুকোনো বকুল ফুল….
প্রতিমার সামনে করজোরে তবে কি আমার জন্যই প্রার্থনা?
আমাকে ক্ষমা কর পারমিতা।
সেই বিসন্ন বিকেলগুলো শুকনো পাতার মতো উড়ে এসে এখনও ঘরে বাঁধে আমার ভেতর।
৩০ বছরের অচীন উদ্ভিদ কী করে ভালোবাসো এখনও?
ঠান্ডা হয়ে আসছে কফি
পারমিতা তাকিয়ে আছে,
শব্দহীন উচ্চারণ।
আর কি দেখা হবে না? ৩০ বছরের ফিকে বসন্ত কখনও কি রঙীন হবে না? ভেতরের পোড়া বাড়িটায় শুধুই কি আমার কান্নার প্রতিধ্বনি শুনবো?
আমাকে ক্ষমা কর।
ক্ষমা কর আমার তাবৎ অক্ষমতা,
ক্ষমা কর ঈশ্বরের মত,
কিংবা,
আমাদের মত।
যে রকম আমরা প্রতিদিন ক্ষমা করি
ঈশ্বরকে।