ইরানে ‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরায় মোরালিটি পুলিশ কাস্টডিতে নারীর মৃত্যু
ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টর ডেস্ক ।। ইরানে ‘মোরালিটি পুলিশ’ এর কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় একজন তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। ২২ বছর বয়সী ওই তরুণীর নাম মাহসা আমীন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ‘সঠিকভাবে হিজাব না পরা’য় পশ্চিম ইরানের সানন্দাজ থেকে ‘তেহরান মোরালিটি পুলিশ’ তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে একই দিনে একটি হাসপাতালের কোমাতে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় এবং সেখানেই সে মারা যায়।
মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলছেন, ‘চলে গেছে…… সে চলে গেছে’। ইরানি নিউজ আউটলেট ইতেমাদ জানিয়েছে যে, ‘মাহসা তার ভাইয়ের সাথে তেহরানের হাঘনি মেট্রো স্টেশনের সামনে ছিল, ‘মোরালিটি পুলিশ’ কর্তৃপক্ষ মাহসাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করে ‘সঠিকভাবে হিজাব’ না পরার অভিযোগে। তারা মাহসার ভাইকে বলেছিল ‘ শিক্ষা ও অভিযোজন মূলক ক্লাস’র জন্যে ‘মোরালিটি পুলিশ’র সদর দপ্তরে মাহসাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দু’ঘণ্টা পরে মাহসার ভাই জানতে পারে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে মাহসার ভাই জানান ‘তার জন্যে সদর দপ্তরের বাইরে যখন অপেক্ষা করছিলেন তিনিসহ অন্যরা প্রচুর চিৎকার শুনতে পান। বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে আসা একাধিক নারীরা বলছিলেন, তারা সেখানে কাউকে মারছে।
১৫ সেপ্টেম্বর ইরানের পুলিশ ইনফরমেশন দাবি করেছেন, হেফাজতে থাকাকালীন মাহসা হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তারা তাকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর একটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভিডিও প্রকাশ পায় যেখানে দেখা যাচ্ছে, মাহসা ‘অরিয়েন্টেশন’ ক্লাসে প্রবেশ করছে ও সেখানে একজনের সাথে কথা বলছে যাকে আপাতত পুলিশ আফিসারই মনে হচ্ছে এবং পরবর্তীতে মাহসা পড়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছেন তারা অতিরিক্ত তথ্য দেবেন। পার্লামেন্টের সদস্য ও রাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকজন প্রাক্তন ও বর্তমান ইরানি কর্মকর্তা ব্যাখ্যা ও তদন্তের আহ্বান জানান।
ইরানের ‘বাধ্যতামূলক হিজাব আইন’ অনেক নারীরা না মানার কারণে তাদের বেআইনি বলপ্রয়োগের সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। জুলাই মাসে পুলিশ একজন নারীকে গ্রেফতার করেন, যাকে আইন অমান্যের দায়ে হেনস্থা করা হয় ও ছবি তোলা হয়েছিল। আরো জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ক্ষমা চাওয়ানোর আগে তাকে কাস্টাডিতে প্রচুর মারধর করা হয় ও অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।