April 29, 2024
সাহিত্যআরও ভাবনাফিচার ৩

সেক্স এডুকেশন: নতুন করে ভাবতে শেখালো যে সিরিজ

রাহাত মুস্তাফিজ ।। কয়েকদিন আগে ‘সেক্স এডুকেশন’ সিরিজটি দেখে শেষ করেছি। এমন তো কত টিভি সিরিজ, সিনেমা দেখা হয়, কিন্তু সবগুলো নিয়ে লেখার তাগিদ অনুভব করি না। এটা দেখার পর মনে হলো, নেটফ্লিক্সের অনেক হাবিজাবি কন্টেন্টের মধ্যে এটি একটি ভাল কাজ হয়েছে। এটি শিক্ষামূলক এবং একইসাথে মজার। বর্তমানে টিনেজাররা সেক্স, সেক্সুয়ালিটি ও সেক্সকেন্দ্রিক টেনশানে কীভাবে ভুগছে, কী ভাবছে বা এসবকে ঘিরে তারা কী কী প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে জানা ছিল না। এই একই প্রশ্নের মুখোমুখি আমাদের স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা হয় কি না তাও জানা নেই। এই জানতে না পারার পেছনে সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ দায়ী। এই টিভি সিরিজটিতে যেসব বিষয় ও যেভাবে দেখানো হয়েছে বা বলা হয়েছে বিষয়গুলো নিশ্চয়ই দেশ ও কালচার ভেদে ভিন্ন ভিন্নভাবে হাজির হয়।

আমাদের সমাজে সেক্স এখনও ট্যাবু হয়ে আছে। এ নিয়ে আমরা জন পরিসরে কম বলি বা কম লিখি। এগুলো নিয়ে খোলামেলা আলাপের ক্ষেত্রে ইমেজ সঙ্কটে পড়ার ভয়ে থাকি আমরা। একটা মেকি ভাব নিয়ে থাকতে ভালবাসি। অন্যান্য গুতুত্বপূর্ণ ব্যাপারে কথা বললেও, সেক্স নিয়ে কথা হাজির করলে ব্যক্তিত্ব লঘু হয়ে যেতে পারে এমন একটা ধারণাও হয়ে থাকে আমাদের। অথচ, এই ব্যাপারে সম্ভবত লোকজনের আগ্রহ চূড়ান্ত পর্যায়ে।

কৈশোরে “সেক্স কী” এটা জেনেছি ক্লাসমেটদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া সচিত্র চটিবই পড়ে। স্কুলের বিজ্ঞান বইতে এসব বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ আমাদের ছিল না। আমরা এখন জানি বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদেরকে বিবিধ শরীরিক পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যেতে হয়, এসময় যৌন অনুভূতি তৈরি হয়। পরিরচিত শরীরের ভেতরে জন্ম নিতে থাকে আরেকটি শরীর। এই জাতীয় শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের কিছুই জানা হয় না। না পরিবার, না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, না শিক্ষাক্রম – জানা-বোঝার সবগুলো দরোজা-জানালা থাকে বন্ধ। তখন ওই রুদ্ধ দরোজা-জানালা দিয়ে গোপনে প্রবেশ করে ভুল শিক্ষা। যৌনতা বিষয়ে আমাদের হাতেখড়িই হয় ভুলভাবে, যে ভুল বিকৃতি আকারে বিকশিত হয়ে শরীর ও যৌনতার ব্যাপারে কেবলই অজ্ঞতার বোঝা ভারি করে। এখনও স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ এই অধ্যায় সম্পর্কে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞান পায় না। সেই কারিকুলাম বা শিক্ষা ব্যবস্থা আজও তৈরি করা যায়নি। কবে যাবে তাও কারও জানা নেই।

সেক্স এডুকেশন সিরিজটি তাই খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতে বসি। হাইস্কুল পড়ুয়া ১৬+ কিছু ছেলেমেয়ে, তাদের প্যারেন্টস, স্কুল কর্তৃপক্ষ, একজন সেক্স থেরাপিস্ট নিয়ে কমেডি-ড্রামা ঘরানার সিরিজিটি এগিয়েছে। সেক্স এডুকেশনের বিষয়টি তাই সিরিয়াস একাডেমিক আলোচনা হিসেবে নয়, চরিত্রগুলোর যাপিত জীবনের ঘটনাক্রম হিসেবে হাজির হয়। সেক্সকে ঘিরে তাদের প্রশ্ন, দ্বন্দ্ব, জটিলতা কাহিনীর গতিকে বাধাগ্রস্ত না করেই উত্থাপিত হয়। সেক্সুয়ালিটি, সেক্সুয়াল হেলথ ও রিলেশনশিপ – মোটাদাগে বললে এই বিষয়গুলি বিভিন্ন চরিত্রের বৈচিত্রময় ঘটনার মধ্যদিয়ে আলোচিত হয়েছে।

মাস্টারবেশন নিয়ে দ্বিধা, প্রথম সেক্স অভিজ্ঞতা কীভাবে হবে এ নিয়ে টেনশনে পড়তে দেখা যায়। মাস্টারবেশনকে ঘিরে টেনশন দেখে নিজের কিশোরবেলার কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুনকে আমরা অত্যন্ত কুৎসিত ব্যাপার হিসেবে ভাবতাম। এরকম ভাবনার পেছনে ধর্মীয়বোধ একটা কারণ হয়ে থাকতে পারে। ‘একফোটা বীর্য বেরিয়ে যাওয়া মানে ৭০ ফোঁটা রক্ত শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া’- ছোটবেলায় আমরা এমনটিই জানতাম। যদিও সেই ১৪/১৫ বছর বয়সে ধর্মীয় এই ভীতি থাকা সত্ত্বেও আমাদের মধ্যে অনেকেই মাস্টারবেশনে অভ্যস্ত ছিল। নিজের সাথে নিজের এই আনন্দদায়ক খেলার পর আমরা গিলটি ফিলিংসে ভুগেছি। আর কখনও এটা করব না শপথ নিয়েও ঘরে ফিরে ঠিকই খেলাটা চালিয়ে গিয়েছি। পুলক ও পাপবোধের এই দ্বান্দ্বিক অবস্থার মধ্যদিয়ে আমাদের কৈশোর এগিয়েছে। প্রথাগত ওই ‘জ্ঞানের (অপজ্ঞান)’ বাইরে আমাদেরকে কেউ বলেনি এটা শরীরের জন্য আদৌ দরকারি না ক্ষতিকর। সিরিজে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র মাস্টারবেশন নিয়ে ভীতির মধ্যে পড়ে যায়। এই ভীতির উৎস ছিল ছোটবেলায় প্যারেন্টসের কলহপূর্ণ দাম্পত্যসম্পর্ক এবং পরবর্তীতে তাদের সেপারেশন ও ডিভোর্স। এটা ওই চরিত্রের পারসোনালিটি ডেভেলপমেন্টে প্রভাব ফেলে।

ওদিকে চরিত্রটি আবার বিচক্ষণ ও শান্ত। সে মনে মনে পছন্দ করে, ভালবাসে সহপাঠীকে, কিন্তু বলতে পারে না তার ভালবাসার কথা। সে সহপাঠীদের সেক্সুয়াল সমস্যার ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পছন্দ করে। ওর এই দক্ষতার বিষয় পর্যবেক্ষণ করে প্রিয় সহপাঠী অর্থের বিনিময়ে পরামর্শ কার্যক্রম চালু করার প্রস্তাব দেয়। পরে ওরা আণ্ডারগ্রাউন্ড সেক্স থেরাপি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু করে। তবে এই প্রকল্প ওদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনের উপর নির্ভর করে কখনও সচল থাকতে দেখা যায়, কখনও দেখা যায় বন্ধ হয়ে আছে।

উপরে উল্লেখিত অ্যামেচার সেক্স ক্লিনিকের সাথে যুক্ত ছাত্রের বাইরে একটি আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্র আছে। তিনি সেক্স থেরাপিস্ট ও রিলেশনশিপ স্পেশ্যালিস্ট। এই চরিত্রটি ডিভোর্সের পর থেকে সিরিয়াস-কমিটেড রিলেশনশিপে নিজেকে জড়ান না। প্রথম সিজনে দেখানো হয় তিনি বিভিন্ন পুরুষের সাথে ‘ক্যাজুয়াল সেক্সে’ জড়িত হচ্ছেন। এখানে ক্যাজুয়াল সেক্স বিষয়ে কিছুটা আলাপ করে নেওয়া যেতে পারে। সেক্সের এই টার্মটা সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। এর সোজাসাপ্টা মানে হচ্ছে জাস্ট শরীরের প্রয়োজনে শরীর মেলানো। সেক্সটা এখানে তাই একটা ‘নিড’, যা একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের দরকার হয়। ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, এই ক্যাজুয়াল সেক্সের সাথে কমিটেড রিলেশন এবং কমিটেড রিলেশনে হওয়া সেক্সের পার্থক্য। তাইতো বলতে শোনা যায়, ইটস জাস্ট আ ক্যাজুয়াল সেক্স, নাথিং সিরিয়াস, উই আর নট ইন আ রিলেশনশিপ। (ইউরোপের অধিকাংশ দেশে সেক্সুয়াল কনসেন্ট দেওয়ার বয়স ১৬। অর্থাৎ এই বয়স থেকে ছেলেমেয়েরা বা ছেলে-ছেলে, মেয়ে-মেয়ে যৌনতা করতে চাইলে আইনগতবাধা থাকবে না।) ফিজিক্যাল অটোনমি তথা নিজের শরীরের এজেন্সি নিজের কাছে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এই ঘোষণার মধ্যদিয়ে একটা মেয়ের ক্যারেকটারের ভালমন্দের সার্টিফিকেট বিতরণকারী প্যাট্রিয়ার্কিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। আরেক সহপাঠীর সাথে ক্যাজুয়াল সেক্সের বিষয়ে অবগত থাকার পরও ওই নারীকে ভালবাসা যায়। মানে ওরা সেক্স ও প্রেমকে আলাদা হিসেবে শনাক্ত করতে পারে। ধর্মীয় প্রত্যাদেশ মেনে নির্ধারিত পুরুষের সাথে প্রথাগত সম্পর্কে বাধা পড়ার যে বাধ্যবাধকতা মেয়েদের জন্য, যে নির্দেশ ও বাধ্যবাধকতা না মানলে একটি মেয়ে ‘ছেনাল’ বা ‘বেশ্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত হয়, পুরুষের প্রেমের বা দাম্পত্য সঙ্গী হিসেবে অযোগ্য কিংবা কম ‘বাজার মূল্যে’ ভূষিত হয়। মোদ্দা কথা, ‘ভার্জিন ড্রিমে’ ভোগা সস্তা মূল্যবোধ দ্বারা ওরা তাড়িত নয়। সেক্সকে তাই সেক্সের জায়গায় থাকতে দেখা যায়। হৃদয়ঘটিত বিশ্বস্ত সম্পর্ক নির্মাণে পূর্বের যৌনতা ও পূর্ব পুরুষ প্রতিদিনের জীবন যাপনের পথে অস্বস্তি বা কাঁটা হিসেবে আবির্ভূত হয় না। একই পার্টিতে সবাই আমন্ত্রিত হওয়াটা সেখানে কোনো অস্বাভাবিক বিষয় হিসেবে প্রতিভাত হয় না।

সমকামি সম্পর্কের বিষয়টি সিরিজটাতে বেশ জোরালোভাবে দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে ‘গে’ সম্পর্ক। গে সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশনের তিনজনের মধ্যে জটিল আন্তঃসম্পর্ক, তাদের প্রেম ও ঈর্ষাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। সমকামিদেরকে লিবারেল ইউরোপেও সামাজিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হয়। মানসিক যন্ত্রণা ছাড়াও শারীরিকভাবেও তাদেরকে আক্রমণের শিকার হতে হয়। সমকামিতা নিয়ে লেখা রুপবান ম্যাগাজিনের সম্পাদক, বাংলাদেশের জুলহাস মান্নান ও তার সঙ্গী তন্ময়ের মতো ড্রইংরুমে জবাই হয়ে রক্তাক্ত পড়ে থাকতে হয়তো হয় না ওদের, কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে ঠিকই ওদেরকে হোমোফোবিকদের ঘুষি খেয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়তে দেখা যায়। তারউপর ব্ল্যাক সমকামি হলে তো কথাই নেই। ব্ল্যাক সমকামি হিসেবে সমাজে সার্ভাইব করতে হলে তাকে হোয়াইট সমকামির চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। সত্যিকথা বলতে কী, সমকামিদের অধিকারের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে প্যাশনেটলি কিস করছে – এটা আমার চোখ বেশিক্ষণ নিতে পারতো না। প্রতিষ্ঠিত প্রথাগত সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের সামাজিকীকরণের মাধ্যমে আমাদের মন ও মনন একটা অভ্যস্ত কাঠামোয় তৈরি হয়। সমকামিতা আমাদের সমাজে কেবল ট্যাবু নয়, ধর্মীয় ও আইনগতভাবে গর্হিত অপরাধ। পরবর্তিতে আধুনিক শিক্ষা ও মানবাধিকারের উচ্চ মূল্যবোধে নিজেদেরকে দীক্ষিত করার মাধ্যমে সমকামিতা ও সমকামিদের পক্ষে আমাদের অবস্থান তৈরি হলেও, চোখগুলো অভ্যস্ত না থাকায় চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা তাই অজান্তেই ঘটে যায়। এই সিরিজ দেখতে গিয়ে প্রথম দিকে এই সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু পরে আস্তে আস্তে সহজ হয়ে গেছে। তখন আর চোখ ফিরিয়ে নিতে হয়নি।

আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের কথা বলতে হয়। সে রিচ কিড। তার জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে কুক হওয়া। সহজ-সরল ও ভীরু প্রকৃতির এই মেয়েটি বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক বানায়। বান্ধবীর সাথে দেখা করার জন্য সে কেক নিয়ে পাবলিক বাসে ওঠে। বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পেছন থেকে এক অপরিচিত পুরুষ ওকে ব্যাড টাচ করে এবং ওর জিন্সের প্যান্টে লোকটি বীর্যপাত করে। মেয়েটি এতে সঙ্গত কারণেই ভীষণ শকড হয়। কিন্তু ও কিছুই বলতে পারে না। মন খারাপ করে চুপ করে বাস থেকে নেমে পড়ে। পরে বান্ধবীর কাছে ঘটনা খুলে বলে। বান্ধবী পুলিশে রিপোর্ট করার কথা বললে ও প্রথমে রাজী হয় না। ও বিষয়টাকে আর বাড়তে দিতে চায় না, বিশ্রী ঘটনাটি ও দ্রুত ভুলে যেতে চায়। কিন্তু ভুলতে চাইলেই কি জীবনের সব ঘটনা সহজে ভুলা যায়! অনেকভাবে বুঝিয়ে ওর বান্ধবী ওকে কনভিন্সড করতে সক্ষম হয় এবং ওরা গিয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্ট করে আসে। মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া মেয়েটি কিছুতেই ঘটনাটি ভুলতে পারে না। কাল্প্রিট লোকটির চেহারা বারবার ওর চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়। এরপর বাসে উঠতে গিয়েও উঠতে পারে না, ড্রাইভার ওকে ফেলেই বাস ছেড়ে দেয়, ওর মনে হয়- বাসের ভেতর যদি আবার ওই দুঃসহ স্মৃতি এসে হাজির হয়! এই ট্রমা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মেয়েটিকে সেক্স থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে দেখা যায়। সেক্স এডুকেশন সিরিজে অসাধারণ পারফর্ম করায় এই মেয়েটি তথা এই চরিত্রটি BAFTA TV Award জিতেছে। বাসের ভেতর মেয়েটির অভিজ্ঞতা আমাদেরকে আমাদের দেশের গণপরিবহনে মেয়েদের সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই প্রকৃতির যৌন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে প্রতিদিন কত নারীকে নীরবে অশ্রু গোপন করতে হয় আমাদের তা জানা নেই। তাদের মধ্যে ক’জনইবা পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে যায়, গেলেও কী তারা সবসময়য় মানবিক আচরণটুকু পায়? সেইসাথে সিরিজের মেয়েটির মত আমাদের দেশের নারীরা কী ট্রমাটাইজড হয় না, হলে পরে আমাদের ছাত্রীদের/নারীদের কি কারও কাছে গিয়ে এক্সপার্ট হেল্প নেওয়ার উপায় আছে কিংবা সেই সাধ্য সবার আছে?

এই টিভি সিরিজটিতে যৌনশিক্ষার বিষয়গুলোকে অত্যন্ত খোলামেলাভাবে দেখানো হয়েছে। এক্সপ্লিসিট যৌনদৃশ্য আছে। সিরিজের নাম সেক্স এডুকেশন এবং এর পারফর্মাররা প্রধানত হাইস্কুল পড়ুয়া টিনেজার হলেও একটা বিস্তৃত ক্যানভাসে বিষয়গুলোকে উত্থাপন করা হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীর সাথে সাথে সেক্সকে কেন্দ্র করে তাদের পিতা-মাতার সম্পর্কের টানাপোড়েন, ডিপ্রেশন এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায়ও উপস্থাপিত হতে দেখা যায়। ওই উপায়গুলো নিয়ে সমালোচনা থাকতে পারে। কারণ এটা পশ্চিমের অগ্রসর সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক পটভূমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সে কারণে এটা সামাজিকভাবে অনগ্রসর দেশের জন্য অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায় না। সেক্স এডুকেশন তাই কোনো নির্দিষ্ট রাষ্ট্রের সীমানার ভেতরে বন্দি নয়। মৌলিক মানবাধিকার যেমন সার্বজনীন, তেমননি মানুষের শরীর ও যৌনতার প্রশ্ন সার্বজনীন। ব্রিটিশ এই কমেডি-ড্রামা সিরিজটি নির্মাণ করেছেন Laurie Nunn। ২০১৯ থেকে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত এর তিনটি সিজন রিলিজ হয়েছে। প্রতিটি সিজনে এপিসোড আছে ৮ টি করে। প্রতিটির টাইম ফ্রেম ৫০+ মিনিট। এ বছরই ৪র্থ সিজন রিলিজ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটি দেখা যাবে নেটফ্লিক্সে। আইএমডিবি রেটিং: ৮.৩ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *