প্রেম অসময়ে…
ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী।।
ঋজু, সৌম্য, অবনত মুখে তুমি বসেছিলে
আমার সামনে।
আমি নিশ্চিত জানতাম তুমি আমার জন্যে এসেছিলে
অথচ আমি ফিরেও চাইনি!
ভাবিনি কোনদিন মুখোমুখি টেবিলে
স্কাইস্ক্র্যাপার রেস্তোরাঁয় বৃষ্টিস্নাত শহর দেখতে দেখতে ক্যাপুচিনোয় চুমুক দিতে ইচ্ছে হতে পারে।
কারণ আমার তখন অন্য প্রেমিক ছিল।
কেবল মনে আছে এক জোড়া
ঈষৎ বাদামি চোখের গভীরতা
নেহাৎ কম ছিল না।
আমি জানতাম, তুমি চেয়েছিলে আমি
একটুখানি চোখ তুলে চাই,
পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল তোমার চোখে চোখ রাখার
তবু আমি অন্যদিকে চোখ ফেরাই।
কারণ আমার তখন অন্য কোনো প্রেমিক ছিল।
কেবল মনে পড়ছে, কোঁকড়ানো চুলগুলো তোমার
কপালে অদ্ভুত মায়ায় লেপ্টে ছিল।
উদাস জানালার মতো মেলে দিয়েছিলে
তোমার বাদামি দৃষ্টি।
আমি মন দিয়ে তাকাইনি সেদিকে পাছে
অজান্তে আঙুলগুলো তোমার কপালে
বিলি কাটতে চায়!
নতুন কোনো মায়ায় জড়াই!
তোমার বুকে কান পাতলে প্রশান্ত মহাসাগরের
ঢেউ গোনা যায় কিনা তখন ভেবে দেখিনি
একটিবারের জন্য।
ভাবিনি মন খারাপের দিনে দৃষ্টি সীমানায় তুমি
হতে পারো মেঘছোঁয়া পাহাড়চূড়া,
দূর্যোগের ঘনঘটায় নিকটতম আশ্রয়কেন্দ্র।
আমার তখন অন্য প্রেমিক ছিল।
সেদিনের সন্ধ্যার পর ভাবিনি আবার
কখনো দেখা হবে কিনা!
ভাবিনি সেই প্রথম বা সেই শেষ দেখা।
অন্য কোনো প্রেমিক ছিল তখন।
তোমার সামনে বসেও মনে হয়নি কোন একদিন
মাঝরাতে বুক হু হু করবে
গ্রীক পুরাণের সৌন্দর্য ভেবে,
ইচ্ছেরা জেগে উঠবে রেড ওয়াইনের উষ্ণতায়
প্যারিসীয় সন্ধ্যায়, অপাপবিদ্ধ ঠোঁটে
গভীর গাঢ় চুম্বনে ডুবে কেড়ে নিতে ইচ্ছে হবে
‘কিউপিড কিস’!
পৃথিবীর বিখ্যাত চিত্রশালায় অমরত্ব পাবে
আমাদের অবিনশ্বর যুগল মূহূর্ত!
তখন আমার অন্য প্রেমিক ছিল।
আমার গ্রীকপুরাণের দেবদূত, তোমাকে
প্রবল আলিঙ্গনে আবদ্ধ করতে যখন পুরোদমে
প্রস্তুত আমি ও আমার অমর্ত্য প্রেম,
তুমি তখন ভীষণ অভিমানী
এক গৃহত্যাগী জোছনা।
এখন তুমি ছাড়া আমার দ্বিতীয় কোনো প্রেমিক নেই