এভাবে আর কতদিন?
বিকাশ ভৌমিক।। বিশ্বের কিছু দেশ ধর্মীয় পূন্যভূমি। যেমন,ইহুদিদের জন্য ইসরায়েল, হিন্দুদের ভারত, বৌদ্ধদের নেপাল এবং মুসলিমদের সৌদি আরব। বিশেষত মক্কা ও মদিনা ইসলামের দুইটি পবিত্রতম স্থান। দেশটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী এবং তেলের উপর ভাসমান একটি দেশ। এত ধনী দেশের জন্য নিশ্চয়ই অনেক চাকরবাকর দরকার। সেই চাকরবাকর তারা নিয়ে যায় বাংলাদেশের মত গরীব দেশের কাছ থেকে।
কিন্তু মজার ব্যপার হলো তাদের নারী গৃহকর্মীর উপর আগ্রহ বেশি। মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৬ লাখ নারী শ্রমিক আছে, তার অর্ধেকই সৌদি আরবে। সৌদি পুরুষরা এক কথায় সেক্স ম্যানিয়াক, মধ্যযুগীয় বর্বরতা তারা এখনো মনে প্রাণে ধারণ করে বিধায় গৃহকর্মী তাদের কাছে ক্রয় করা দাসী, আর দাসদাসীর সাথে যা খুশি করা যায় বলে তারা মনে করে। একই নারীর সাথে তিন পুরুষ অর্থাৎ বাবা ছেলে দাদা মিলে সঙ্গম করা যায়, তাদেরকে মারধর করে, পুড়িয়ে বিনোদন লাভ করা যায়। এসবই তাদের কাছে খুব সহজ স্বাভাবিক বিষয়। বিশ্বাস নাহলে ইউটিউব খুলে তাদের ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র দেখে নিতে পারেন। বলা হয়ে থাকে ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম, কিন্তু তাদের বেলায় ব্যপারটা বাতির নিচে অন্ধকারের মত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানা যায় গত বছর অব্দি ৫৩ জন নারী লাশ হয়ে ফিরেছে, যা খাতা কলমের হিসেবেই শুধু। আর এর বাইরে যে আরো কত লাশ ফেরত আসেনা তার হিসেব নেই। কেউ ফেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে কেউ মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ হয়ে। বাংলাদেশ সরকার এসব নিয়ে জনগনকে শুধু আশ্বস্তই করে আসছে, সচেতন হতে বলছে কিন্তু এর প্রতিবাদে টু শব্দটি করে না। করবেই বা কীভাবে, দেশের অর্থনীতির বিরাট অংশ এই বৈদেশিক রেমিটেন্স যার সিংহভাগই আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে।
এভাবে আর কতদিন? ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কিছু দেশ নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করেছে। এই নারীদের নির্যাতিত লাশের উপর দিয়ে বয়ে আনা টাকা দিয়ে ঠিকই আমরা রোহিঙ্গাদের খাইয়ে পরিয়ে আবার দ্বীপের মধ্যে রিসোর্ট বানিয়ে দিচ্ছি। এই টাকা দিয়েই পদ্মাসেতু করার বড়াই দেখাই, মন্ত্রী আমলাদের গাড়ির তেল জোটে, তাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে পারে। কিন্তু দুখি অসহায় নারীদের ভাগ্যের চাকা আর ঘোরেনা।
[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত মুক্তমত লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]