যৌনবিকার ও ক্ষমতার বিকার: চিহ্নিত করা জরুরি
কায়সুল খান।। নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ন ঘটে চলা একটি ঘটনা। পুঁজিতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় নারীকে যেভাবে দেখতে শেখানো হয় তা নারী নির্যাতন ও ধর্ষণে ইন্ধন যোগায়। বৈশ্বিক এই সমস্যাটি সারা পৃথিবীর তাবৎ সভ্য মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ। যদিও সারা বিশ্বেই ধর্ষণ ঘটে থাকে কিন্তু পুঁজিতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা ও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এটি সংঘটনের হার সবচেয়ে বেশি। বৈশ্বিক এই সমস্যাটির ব্যাপারে বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। এই দেশে প্রতিদিনই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
যৌন বিকার ধর্ষণের অন্যতম প্রধান কারণ। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে একটি ভোগ্যবস্তু হিসেবে দেখার যে চোখ পুরুষের মাঝে গড়ে ওঠে তা তাদেরকে ধর্ষণ করতে ইন্ধন যোগায়। পুরুষতান্ত্রিক ও পুঁজিবাদি সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষ নারীর চেয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় নারী সারা বিশ্বেই পুরুষ কর্তৃক নিগৃহীত ও ধর্ষিত হচ্ছে। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতাহীনতার কারণে ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়টি প্রায় সর্বজনস্বীকৃত। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আমরা একই চিত্র দেখতে পাচ্ছি। তবে অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশের পার্থক্য হল সে সব দেশে ধর্ষণের মত জঘণ্য অপরাধের বিচার হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বর্তমান থাকায় খুব সহজেই ধর্ষণ করে পার পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে নারীদের যে সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন তা রাষ্ট্র দিতে পারছে না। এমন কি নারীদের বাইরে কাজ করতে যাওয়া কিংবা একাকী ঘুরতে বের হওয়ার মত স্বাভাবিক কাজকেও আমাদের সমাজে ভালোভাবে দেখা হচ্ছে না। ফলে নারীরা সর্বত্র নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অন্যদিকে নারীর প্রতি অবমাননা, মলেস্টেশন, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধীরা আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে দেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ধর্ষণের হার অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় দেশব্যাপী হইচই শুরু হয়েছে। ৪ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ, ৭২ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণ, সিলেটের এমসি কলেছে গণধর্ষণ, মাদ্রাসায় শিশু ধর্ষণ কিংবা নোয়াখালিতে জনৈকা নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও ভিডিও ধারণের ঘটনা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে। দেশব্যাপী ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছে। কিন্তু নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের সকল ঘটনা যে এভাবে ভাইরাল হয় কিংবা আলোড়ন তোলে তা নয়। ফলে অসংখ্য ঘটনা লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে যায়। অপরাধী নিস্তার পেয়ে যায়। ভুক্তভোগী শারীরিক ও মানসিকভাবে যন্ত্রণা ভোগ করেন। আবার ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হলেও যে অপরাধী শাস্তি পায় তা কিন্তু নয়। আইনের ফাঁক-ফোঁকর গলে অধিকাংশ অপরাধী খালাস পেয়ে যায়।
পরিসংখ্যান মতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা রিপোর্ট হয় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে। তবে প্রতি লাখ মানুষের হিসেবে ধর্ষণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপরে বতসোয়ানা, লেসোথো, সোয়াজিল্যান্ড, বারমুডা ও সুইডেনের অবস্থান। সুইডেন এই তালিকায় স্থান পাওয়ার অন্যতম বড় কারণ এখানে বৈবাহিক ধর্ষণের প্রতি বারের ঘটনাকে আলাদা আলাদাভাবে গণনা করা হয়। ফলে কোন নারী বৈবাহিক জীবনে যতবার পার্টনারের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন তা একটি আইডেন্টিক্যাল কেইস হিসেবে গণ্য হয়। ফলে অপেক্ষাকৃত কম অপরাধপ্রবণ পশ্চিমা এই দেশটিও ধর্ষণের শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
ধর্ষণের পরিমাণের দিক থেকে এসব দেশের পাশাপাশি ভারত, বাংলাদেশের অবস্থানও যথেষ্ট আশংকা জাগানিয়া। তবে বাংলাদেশ, ভারতের মত দেশে ধর্ষণের ঘটনা রিপোর্ট হওয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম হওয়ার কারণ হল এখানে মানুষ সামাজিক অবস্থান, লোকলজ্জার ভয়, সংসার ভেঙে যাওয়া কিংবা ভবিষ্যতে বিবাহ না হওয়ার ভয় ইত্যাদি কারণে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে পুলিশের কাছে যেতে সংকোচ বোধ করে। পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে আমাদের আইন প্রয়োগকারি সংস্থাগুলো নিতান্ত বাধ্য না হলে নারী নির্যাতন কিংবা ধর্ষণের কেইস লিপিবদ্ধ করতে চায় না। তাদের এই ব্যাপারে যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। বাংলাদেশে মডেল থানা হিসেবে যে সব থানাকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে সেগুলোতে আইন প্রয়োগের হার অত্যন্ত কম। মূলত উক্ত থানাকে কম অপরাধ প্রবণ দেখাতেই পুলিশ নারী নির্যাতন, নারী-পুরুষ ও শিশুর প্রতি যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের কেইস লিপিবদ্ধ করা থেকে বিরত থাকে। পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশ প্রকৃত ধর্ষণ চেষ্টা ও ধর্ষণের মাত্র ৬ শতাংশ কেইস রিপোর্ট হয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ব্রাজিলের মত দেশগুলোর পুলিশ এ ক্ষেত্রে শতভাগ কেইস লিপিবদ্ধ করে থাকে। এসব দেশে ধর্ষণের কেইস নিয়ে পুলিশের গাফিলতির কোন সুযোগ নেই। নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞদের আশংকা বাংলাদেশে যদি সত্যিকার অর্থে ধর্ষণের প্রতিটা কেইস লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ধর্ষণের ঘটনায় শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় স্থান করে নেবে।
বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনার যে পরিসংখ্যান আমাদের হাতে রয়েছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। বাংলাদেশ পুলিশের দেওয়া পরিসংখ্যান মতে, ২০১৯ সালে দেশে ৫ হাজার ৪০০ নারী ও ৮১৫ টি শিশু ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। এর আগে ২০১৮ সালে নারী ধর্ষণের মামলা ছিল ৩ হাজার ৯০০ টি এবং শিশু ধর্ষণের মামলা ছিল ৭২৭ টি। অন্যদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য মতে ২০১৯ সালে সারা দেশে নারী ও শিশু গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৪১৩ টি। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২ টি। অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে বাংলাদেশে গণধর্ষণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আসকের তথ্য মতে ২০২০ সালের ০১ জানুয়ারি থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৪৮ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশে ধর্ষণ নিয়ে কাজ করেন এমন সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, দেশে ৩ থেকে ৪ শতাংশ ধর্ষণ কেইসের ক্ষেত্রে অপরাধীর শাস্তি হয়। যা সারা বিশ্বের বিচারে অত্যন্ত কম। বাংলাদেশে ধর্ষণের ক্ষেত্রে ভিক্টিমকে নিজেকে ধর্ষিতা প্রমাণ করতে হয় অথচ হওয়া উচিত অপরাধী যেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে। নারী অধিকারকর্মীরা বাংলাদেশে ধর্ষণের বিচারের ক্ষেত্রে ভিক্টিমের ভোগান্তি ও অপরাধীকে যথা সময়ে গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশের গাফিলতির বিষয়টি বারবার উল্লেখ করে থাকেন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের নাম উঠে এসেছে। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটাচ্ছে একশ্রেণির লোকজন। একই সাথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর থেকেও তারা নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গী লাভ করছে। ফলে বাংলাদেশে ধর্ষণের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে এই মানুষরূপী অমানুষগুলো। সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া সিলেটের এমসি কলেজের গণধর্ষণ কিংবা নোয়াখালির ধর্ষণ চেষ্টা, নারী নিগ্রহ ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় উঠে এসেছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নাম যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। কিন্তু বরাবরের মতই এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের দায় এড়ানোর চেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে যা সমগ্র সভ্য সমাজকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে।
ধর্ষণের ক্ষেত্রে যৌন বিকারের সাথে ক্ষমতার বিকারের একটি সম্পর্ক রয়েছে। অতীতে বাংলাদেশে ধর্ষণের ক্ষেত্রে মূলত যৌন বিকার কাজ করলেও বর্তমান সময়ে এর সাথে যুক্ত হয়েছে ক্ষমতার বিকার। বাংলাদেশের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার উৎস জনগণ না হয়ে গুন্ডা-পান্ডা শ্রেণির লোক হওয়ায় তারা চাইলেও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। ক্ষমতাসীদের ক্ষমতার আধার এই গুন্ডারা তাদের পেশিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধে লিপ্ত হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ আইনের রক্ষকের ভূমিকায় না থেকে ক্ষমতাসীন গুন্ডাদের রক্ষায় নিয়োজিত থাকছে। ফলে ধর্ষণের মত ঘটনায় অপরাধীরা শাস্তি পাওয়ার বদলে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনা ভিক্টিম ও তার পরিবার সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে চেপে যায়। ফলে প্রকৃত ধর্ষণের ঘটনা কখনোয় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয় না। যে সকল ঘটনা লিপিবদ্ধ হয় সেখানেও ভিক্টিমকে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অন্যদিকে অপরাধীরা পুলিশের গাফিলতির কারণে শাস্তির মুখোমুখি হওয়া থেকে বেঁচে যায়। একই সাথে ধর্ষণের ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মামলার দীর্ঘসূত্রিতা থাকায় ভিক্টিম মামলা চালানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং অপরাধী মুক্ত হয়ে যায়। ধর্ষণ রোধ করতে তাই মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনার ব্যাপারে মনযোগ দেওয়া জরুরি। এজন্য প্রয়োজন বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন। যেখানে দ্রুততম সময়ে প্রতিটি ধর্ষণের মামলার সুরাহা হবে।
ধর্ষণের শাস্তি নির্ধারণের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সচেতন হওয়ার বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যেহেতু ধর্ষণের ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ মামলায়ই ভিক্টিম মূল সাক্ষী হয়ে থাকেন তাই তার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি মাথায় রেখে ধর্ষণের শাস্তি নির্ধারণ উচিত। অপরাধী যেন কোনভাবেই ধর্ষণ আর খুনের শাস্তিকে একই বিবেচনা করে ভিক্টিমকে হত্যা করে না বসে তা নিশ্চিত করা জরুরি। কেননা সেক্ষেত্রে মামলার মূল সাক্ষী নিহত হলে ধর্ষণের মত অপরাধের তদন্ত করা আরও কঠিন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশু হত্যার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। সে জন্য আইন প্রণেতাদের আইন প্রণয়নের সময় অত্যন্ত সচেতনতা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া জরুরি। অন্যথায় ধর্ষণের মত জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অবিবেচনাপ্রসূত কোন সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে পারে।
বাংলাদেশে ধর্ষণ বন্ধ করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ধর্ষণের রাজনৈতিক দিক চিহ্নিতকরণ। অপরাধী যেন কোনভাবেই রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অপরাধ করার সুযোগ না পায় তা নিশ্চিত করা ভীষণ জরুরি। একই সাথে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীও যেন নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে নারী ও শিশু ধর্ষণের কেইস গ্রহণ ও তদন্ত করে তা নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোন নারী নিগ্রহ বা ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা এবং ভিক্টিমকে দ্রত শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সামাজিক, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন তার সম্মানহানী না হয় তা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্য করার ব্যবস্থা করা জরুরি। একইসাথে ভিক্টিমকে মানসিকভাবে পরিপূর্ণ সাপোর্ট প্রদান ও রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, পুরুষতান্ত্রিক মনোবৃত্তি পরিহার ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রয়াস একান্ত কাম্য।
[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত মুক্তমত লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]