November 22, 2024
কলামফিচার ৩

কোনটি রক্ষা জরুরি- পেশার শপথ না দুর্বৃত্ত অন্নদাতার স্বার্থ?

শাহরিয়ার সামস সামি।। আজকের যুগের যেকোনো রাষ্ট্রব্যবস্থায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কালের খেয়ায় চলমান সভ্যতার ক্রমবিকাশ, বিবর্তন এবং প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন ও নির্ভরতার কল্যাণে আধুনিক মানবসমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার একটা বড় অংশ গড়ে উঠেছে গণমাধ্যমের উপর ভিত্তি করে। সমাজের গতিপথ নির্ণয়ে এর ভূমিকা এতই প্রবল যে আধুনিক নাগরিকতাবোধের মানসে গড়ে ওঠা এ সমাজে মানব মন, মনন ও মানস বিনির্মাণের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার বলা যায় একে। তাছাড়া, নাগরিকের বস্তনিষ্ঠ ও সঠিক তথ্য জানার অধিকার, ভিন্ন মত-পথ ও আচরণের বিবিধতা এবং বৈচিত্র্যের বস্তনিষ্ঠ প্রকাশ নিশ্চিত করার পবিত্র দায়িত্ব গণমাধ্যমের। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হল স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম। যাদের কাজ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে নিরপেক্ষ, অবাধ, সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা ও সমাজের অসংগতি, অনাচার-অন্যায় ও যেকোনো প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধাচরণ করে সমাজের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করা।

তবে গণমাধ্যমের ভূমিকা কিন্তু কোনোভাবেই প্রশ্নাতীত নয়, বরং বহুক্ষেত্রেই বিতর্কের অবকাশ তৈরি করে। গণমাধ্যম স্বাধীন না পরাধীন, বা নিরপেক্ষ আচরণ করে কি না- এ বিতর্ক বহুদিনের। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, এর সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বিতর্কের শুরু। বিশ্বের কোনো গণমাধ্যম এ বিতর্কের বাইরে নয়। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ বিতর্ক আরো সঙ্গিন।

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম বা মিডিয়ার বিরুদ্ধে পরাধীন আচরণ, বিশেষ বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব, তাবেদারি অথবা নতজানুতা নিয়ে যে অভিযোগ বার বার ওঠে তা মিথ্যা নয়। বরং স্বপ্রণোদিতভাবে তারা ক্ষমতা ও অর্থের কাছে নিজেদের রীতিমত বিক্রি করে বা করছে অথবা কর্পোরেট মিডিয়া হাউজের মালিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইচ্ছার কাছে সাংবাদিকতা পেশার পবিত্র মূল শপথকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। যেখানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সমাজের দর্পণ হবার কথা, সেখানে অধিকাংশ গণমাধ্যমের ভূমিকা বিতর্কিত, কম্প্রোমাইজড ও নতজানু নীতিতে পরিচালিত। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলো দেখিয়ে দিয়েছে তাদের আলো বিকিরণের ঠিক নিচেই অন্ধকারের ভয়াবহ কদর্যতা এতই প্রকট যে আলোর বিচ্ছুরণকে কয়েক হাজার আলোকবর্ষ দূরের বাসিন্দা মনে হয়।

গত ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভিরের প্ররোচনায় মুনিয়া নামের একজন মেয়ের আত্মহত্যার অভিযোগের মামলার ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে আগ্রাসী পুঁজিবাদী ক্ষমতা, অর্থ ও প্রভু-ভক্তির কাছে চতুর্থ স্তম্ভ কতটা নড়বড়ে। অভিযুক্ত আসামি আনভীর দোষী না নির্দোষ, অথবা এটা হত্যা না আত্মহত্যা- এগুলো নির্ণয়ের কিছু আইনি ধাপ আছে। মেডিক্যাল ফরেনসিক রিপোর্ট ও অন্যান্য আলামত একটা বড় ভূমিকা নেবে। আইন, আইনের গতিতে চলবে। কিন্তু আইনগত প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গণমাধ্যমের ভূমিকা। যাকে ভূমিকা না বলে ‘বিতর্কিত ও প্রভু-ভক্ত’ ভূমিকা বলা শ্রেয়।

এ ঘটনায়, নিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের পরিবর্তে গণমাধ্যম ইচ্ছাকৃত এক ধরণের ভয়াবহ সামাজিক ফ্যালাসি তৈরি করেছে বা করছে। ভিক্টিম ব্লেমিং এর মাধ্যমে আসামিকে বাঁচানোর জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সর্বোচ্চ নির্লজ্জতা ও পেশাদারিত্বে দীনতার পরিচয় দিয়ে এক ধরণের সামাজিক মনস্তত্ত্ব আরোপের চেষ্টা করছে তারা। যেকোন ভিকটিম ব্লেমিং এর প্রধান স্বরূপ হল ব্যক্তি চরিত্রে কালিমা লেপন এবং ভিক্টিমের যেকোন ব্যক্তিগত অসংগতি বা অসম্পূর্ণতা প্রকাশ। ভিকটিম ব্লেমিং এর ঘটনা মূলত ঘটে জেন্ডার-বায়াসড ভায়োলেন্স বা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ক্ষেত্রে। পুরুষ-শাসিত সমাজে এ সহিংসতাগুলোতে বেশিরভাগ সময়ে ভিক্টিম হয় নারী। আর ভিক্টিম হিসেবে ‘নারী’ এ সমাজে যে কতটা অসহায় ও নিরূপায় তা নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। নারী বিচার চাওয়ার আগেই মানসিকভাবে হেরে বসে থাকে। সে জানে তার সাথে সংঘটিত অপরাধের বিচার চাওয়া মানে চারিত্রিক, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে চরমভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়া। সে জানে, মূল অপরাধের চেয়ে তার জীবনাচার ও পরিবার হয়ে উঠবে ব্যবচ্ছেদ এর বিষয়। ফলে তার মানসিক ও নৈতিক শক্তি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে থাকে। সংঘটিত ফৌজদারি অপরাধের বিচারের চাইতে নৈতিকতার মানদণ্ড বা ‘চরিত্র’ বিচার প্রধান হয়ে উঠে। গণমাধ্যমে এমনভাবে রিপোর্ট করা হয় যেন মূল অপরাধের দায়ভার কিছুটা বা সম্পূর্ণ ভুক্তভোগীর উপর চাপিয়ে দেয়া যায়। মনে হয় যেন ভুক্তভোগীর জীবনাচার বা স্বভাব এ অপরাধের জন্য দায়ী এবং এ কারণে প্রলুব্ধ হয়ে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এতে অপরাধীর প্রতি একধরণের সামাজিক সহানুভূতির সৃষ্টি হয় ও অপরাধ লঘু হয়ে যায়। অর্থাৎ আদালতের বাইরে একধরণের ম্যানুপুল্যাটিভ আদালত তৈরি করে ভিকটিমকেই দোষী সাব্যস্ত করা ।

আমাদের আলোচ্য ঘটনায়, প্রবল পুরুষতান্ত্রিক ও মুনাফা-শোষক পুঁজিবাদী মানসে গড়ে ওঠা ক্ষমতা ও প্রভুভক্ত বেনিয়া গণমাধ্যমগুলো প্রথমদিন থেকেই এ কাজ করে আসছে। ভিকটিম ‘নারী’ হয়ে যেন শাপে বর হয়েছে তাদের। ইতিমধ্যেই তারা ভিকটিমের পরিচয়ে ‘রক্ষিতা’ ‘পোশাকের মত পুরুষ বদলানো নারী’, ‘উচ্চাভিলাষী’ ইত্যাদি আপত্তিকর শব্দের ব্যবহার ও মুখোরোচক কাহিনীর অবতারণা করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সোর্সবিহীন ও অননুমোদিত বিভিন্ন অডিও-ভিডিও ক্লিপের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে। এগুলোর মাধ্যমে তাবেদার গণমাধ্যম পাবলিক মাইন্ডসেট ম্যানুপুলেশনের চেষ্টা করছে যা আপত্তিকর, অনৈতিক ও বিবেকবর্জিত। আরো ভয়ংকর ব্যাপার হলো, এক অদৃশ্য সেন্সরশিপে মামলার অভিযুক্ত আসামি আনভিরের মতামত বা ছবি প্রকাশ তো দূরের কথা, নাম পর্যন্ত নেয়নি প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলো। এমনকি, অভিযুক্তের বা তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কোন বক্তব্যও নেয়ার চেষ্টা আমরা গণমাধ্যমে দেখি নাই। অভিযুক্ত কোথায় অবস্থান করছে, সে ব্যাপারেও তাদের জানার আগ্রহের ঘাটতি পরিলক্ষিত। অথচ, রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে দেদারসে ভিকটিমের ছবি, পরিচয় ও তাকে কেন্দ্র করে মুখরোচক কাহিনী ছাপছে যা দেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ (১,২) ধারা অনুযায়ী আইনত দণ্ডনীয়। এ ধারা অনুযায়ী, আইন লংঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বৎসর কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন। অর্থাৎ পেশার স্খলন তো বটেই, গণমাধ্যমগুলো ইতিমধ্যে রাষ্ট্রের আইনে অপরাধী। তাছাড়া, বিভিন্ন কারণে আইনের শাসন নিয়ে দ্বিধান্বিত বাংলাদেশের জনগণ গণমাধ্যমের এ আচরণে ইতিমধ্যে ধরে নিয়েছে এ মামলার বিচার আদৌ হবে না। যেখানে গণমাধ্যম এরূপ নতজানু হয় বা অপরাধের সহযোগী হয়ে উঠে, সেখানে বোঝা যায় অর্থের ক্ষমতায় বলবান মাফিয়াদের এ দেশে যেকোনো অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়া একটি সাধারণ ব্যাপার। জনগণের ভিতর গড়ে ওঠা এমন চিন্তা একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অশনি সংকেত! গণমাধ্যমের ভূমিকায় প্রতীয়মান, সাংবাদিকতার ঐতিহাসিক অনুসন্ধিৎসু ধারা ও পেশাদারিত্বের দায়বদ্ধতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অপরাধের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে মহান পেশাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দুর্বৃত্ততায়িত করা হল। সে সাথে, গণতান্ত্রিক দেশের একটি ইন্সটিটিউশন বা স্তম্ভ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হল।

এর মধ্যে আরো একটি ব্যাপার লক্ষণীয় যে- গণমাধ্যমের কর্মীরা, বিশেষ করে সম্পাদক বা সিনিয়র সাংবাদিক, যাদের সমাজের সুশীল শ্রেণির প্রতিনিধি বা সমাজের কণ্ঠ গণ্য করা হয়, তাদের অনুসন্ধিৎসু কলমের কালিও যেন থেমে গেছে। নারীর অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তোলা অধিকাংশ সাংবাদিকদের নীরবতা নতুন ভাবনার খোরাক হচ্ছে। এমনকি কৃত্য পেশার নেতারাও মুখে কুলুপ এঁটে বসেছেন। বেশিরভাগের মুখেই কোন রা নেই। প্রতিবাদ তো দূরের কথা ছোট করেও বলছেন না, অপরাধী যেই হোক বিচার হতেই হবে। বরং অনেকে আকারে ইঙ্গিতে বা প্রকাশ্যে স্বীয় প্রতিষ্ঠানের গুণগান গেয়ে ভয়াবহ এক অপরাধকে এক ধরণের বৈধতা দিচ্ছেন। সামাজিক, রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত যে মাধ্যমগুলোতে তারা সত্যবাদী যুধিষ্ঠিররূপে সমাজকে সবক দেন রাত-দিন, কেন যেন সে মাধ্যমগুলোতে অপরাধ ও অপরাধীর ব্যাপারে পিন-পতন নিরবতা বিরাজমান। যাহোক, মনে রাখতে হবে- সত্যবাদী যুধিষ্ঠিরদের এ নিরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা যুগে যুগে দ্রৌপদির বস্ত্রহরণের কারণ, ফলস্বরূপ কুরুক্ষেত্রের অবশ্যম্ভাবী যুদ্ধ। অর্থাৎ অপরাধের প্রতি নীরবতা অপরাধ ও অপরাধীকে উৎসাহিত করে, সমর্থন করে এবং সমাজে দুর্বৃত্ততায়ন কায়েম হয়। এর পরিণতি ভয়াবহ।

আজকের এ পরিস্থিতি প্রশ্নের বিপরীতে প্রশ্ন দাঁড় করাচ্ছে, চিন্তার বিপরীতে চিন্তা। গণমাধ্যম বা সাংবাদিকদের এ স্খলন ও দীন আচরণের কারণ কি? পেশার মূলমন্ত্র জলাঞ্জলি দিয়ে কেন তারা মুনাফা-শোষক বেনিয়া, মাফিয়া ও পুঁজিপতিদের তাবেদার হয়ে উঠলো? রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ কি তাহলে ধ্বংসের পথে?

অনুসন্ধানে বোঝা যায়, কারণগুলোর শিকড় রাষ্ট্র-চরিত্রের গভীরে প্রোথিত এবং জটিল। এর সাথে জড়িত রয়েছে রাষ্ট্র কাঠামো, আর্থিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক মনস্তত্ত্ব, রাজনীতি ও বিবিধ। প্রকৃতপক্ষে পুঁজিবাদী, দখলদারি মাফিয়াদের অর্থে গড়ে ওঠা গণমাধ্যমগুলোর আচরণ ও বিকাশ নির্ভর করে কর্তৃত্ববাদী ও মুনাফা-শোষক মালিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরেই। তারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ চায় না, ‘সেনসেশনাল সংবাদ’ চায়। আর সেনসেশনাল সংবাদ সবসময় পাওয়া যায় না, মাঝে মাঝে তৈরি করতে হয়। এ গণমাধ্যমগুলো তাদের ‘ইমেজ’ টুল ও অপরাধের রক্ষা-বর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জীবনধারণের বাস্তবতায় সংশ্লিষ্টদের এর বাইরে যাবার ক্ষমতা নেই। আর অপ্রিয় হলেও সত্য, মিউচুয়াল বেনিফিশিয়ারি হিসেবে মালিকদের সুদৃষ্টি ও ছিটানো অর্থে অনেকের রুজি-রুটি তো বটেই নিজের ও সন্তানদের রঙিন ভবিষ্যৎ নির্মাণ হয় বা হচ্ছে। শুধুমাত্র বেঁচে থাকার বাস্তবতায় নূন্যতম চাহিদা পূরণে অনেকেই এ সুদৃষ্টি কামনা করে বা করতে বাধ্য হয়। আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে এর বাইরে চিন্তা করার সাহসও অনেকে করে না, করবে না বা করার সুযোগ এ রাষ্ট্রে নেই। এহেন বাস্তবতা আমাদের এমন এক প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায় যার অন্বেষণ আপাতদৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও, আসলে বড় জটিল, আর সেটি হলো- কোনটি রক্ষা জরুরি- পেশার শপথ না দুর্বৃত্ত অন্নদাতার স্বার্থ?

 

[ফেমিনিস্ট ফ্যাক্টরে প্রকাশিত কলাম লেখকের নিজস্ব বক্তব্য]